দশম শ্রেণী (দ্বিতীয় অধ্যায়): সংস্কার বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
মাধ্যমিক দশম শ্রেণী (দ্বিতীয় অধ্যায়): সংস্কার বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
১. বেঙ্গল গেজেট কে কবে প্রকাশ করেন?
উত্তর:- জেমস অগাস্টাস হিকি ১৭৮০ সালের ২৯ জানুয়ারি ‘বেঙ্গল গেজেট’ পত্রিকাটি প্রকাশ করেন।
২. উনিশ শতকের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বাংলা সাময়িকপত্রের নাম লেখো।
উত্তর:- উনিশ শতকের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বাংলা সাময়িকপত্র ছিল ‘বামাবোধিনী’, ‘সোমপ্রকাশ’, ‘তত্ত্ববোধিনী’, ‘ভারতী’ ও ‘প্রবাসী’।
৩. উনিশ শতকের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বাংলা সংবাদপত্রের নাম লেখো।
উত্তর:- উনিশ শতকের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বাংলা সংবাদপত্র ছিল ‘সমাচার দর্পণ’, ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’, ‘সন্ধ্যা’, ‘বেঙ্গলী’ প্রভৃতি।
৪. উনিশ শতকের বাংলার আর্থসামাজিক চিত্র ফুটে উঠেছে এমন কয়েকটি বাংলা সাহিত্যগ্রন্থের নাম লেখো।
উত্তর:- উনিশ শতকের বাংলার আর্থসামাজিক চিত্র ফুটে উঠেছে এমন কয়েকটি বাংলা সাহিত্যগ্রন্থ হল কালীপ্রসন্ন সিংহ-র ‘হুতোমপ্যাঁচার নক্সা’, দীনবন্ধু মিত্রের ‘নীলদর্পণ’, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘আনন্দমঠ’, ‘দেবী চৌধুরানী’, ‘কমলাকান্তের দপ্তর’, ‘কৃষ্ণচরিত’, শিবনাথ শাস্ত্রীর ‘রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ’, প্যারীচাঁদ মিত্রর ‘আলালের ঘরের দুলাল’, নবীনচন্দ্র সেনের কাব্যগ্রন্থ ‘পলাশীর যুদ্ধ’ প্রভৃতি।
৫. গ্রামীণ সাংবাদিকতার জনক হিসেবে হরিনাথ মজুমদার কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
উত্তর:- সাংবাদিক হরিনাথ মজুমদার গ্রামীণ মানুষ, বিশেষত কৃষকদের ওপর শোষণ ও অত্যাচারের প্রতিকারের উদ্দেশ্যে ‘গ্রামবার্তাপ্রকাশিকা’ পত্রিকাটি প্রকাশ করেন। সাধারণ মানুষের ওপর জমিদার, মহাজন, নীলকরদের শোষণ-অত্যাচারের করুণ চিত্র তিনি পত্রিকার মাধ্যমে জনসমক্ষে তুলে ধরতেন।
৬. বামাবোধিনী সভা-র উদ্দেশ্য কী ছিল?
উত্তর:- বামাবোধিনী সভার উদ্দেশ্য ছিল সামাজিক কুসংস্কারের বিরোধিতা করা, নারীশিক্ষার প্রসার ঘটানো, নারীদের অধিকার ও মর্যাদা বৃদ্ধি করা, নারীজাতির স্বার্থে বিভিন্ন বইপত্র ও পত্রিকা প্রকাশ করা প্রভৃতি।
৭. ‘বামাবোধিনী’ পত্রিকা থেকে উনিশ শতকের কীরূপ সামাজিক তথ্য জানা যায়?
উত্তর:- ‘বামাবোধিনী’ পত্রিকা থেকে উনিশ শতকের বাংলার নারীদের অবস্থা, গৃহচিকিৎসা, শিশুপালন, গৃহকার্য, শিল্পকর্ম, পরিবার ও সমাজের যোগসূত্র হিসেবে নারীর ভূমিকা প্রভৃতি সম্পর্কে নানা তথ্য জানা যায়।
৮. ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’ পত্রিকায় সমকালীন বাংলার কীরূপ সামাজিক চিত্র পাওয়া যায়?
উত্তর:- হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকায় সমকালীন বাংলার সামাজিক শোষণ, সাধারণ মানুষের ওপর সরকার ও পুলিশের অত্যাচার, নীলচাষিদের ওপর শোষণ ও অত্যাচার, দরিদ্রশ্রেণির ওপর অত্যাচার, দরিদ্রদের দুরবস্থা প্রভৃতির চিত্র পাওয়া যায়।
৯. ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’ পত্রিকার কয়েকটি সামাজিক উদ্যোগ উল্লেখ করো।
উত্তর:- হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকা বিভিন্ন সামাজিক উদ্যোগ নেয়। যেমন – এই পত্রিকা বাংলার নীলচাষিদের ওপর নীলকরদের শোষণের খবর ছাপিয়ে এই বিষয়ে মানুষকে সচেতন করে। বাংলার চাল ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য রফতানির বিরোধিতা করে। বাংলায় বিদেশি মদ আমদানির বিরোধিতা করে। বহুবিবাহের বিরোধিতা করে এবং বিধবাবিবাহকে সমর্থন করে। নারীশিক্ষার সমর্থনে প্রচার চালায়। ডালহৌসির সাম্রাজ্যবাদী নীতির বিরোধিতা করে প্রভৃতি।
১০. ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’ পত্রিকার বৈশিষ্ট্য কী ছিল?
উত্তর:- ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’ পত্রিকার প্রধান কয়েকটি বৈশিষ্ট্য ছিল বাংলায় ব্রিটিশ নীলকরদের অত্যাচারের বিরোধিতা, মদ আমদানির বিরোধিতা, বহুবিবাহের বিরোধিতা, অত্যাচারিত নীলচাষিদের সমর্থন ও পাশে দাঁড়ানো, ব্রিটিশবিরোধী কৃষকদের আন্দোলনগুলিকে সমর্থন করা, নারীশিক্ষা প্রভৃতির সপক্ষে জনমত তৈরি করা, সম্পাদক হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের ওপর পত্রিকাটির সর্বাধিক নির্ভরশীলতা প্রভৃতি।
১১. সাঁওতাল বিদ্রোহের প্রতি ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’ পত্রিকার কী মনোভাব ছিল?
উত্তর:- ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে সাঁওতাল বিদ্রোহ শুরু হলে হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকা এই বিদ্রোহকে সমর্থন করে এবং সাঁওতাল এলাকায় সামরিক শাসন জারির তীব্র বিরোধিতা করে। পত্রিকায় সাঁওতালদের ওপর সীমাহীন শোষণের চিত্র নিয়মিত তুলে ধরা হয়।
১২. নারীসমাজের উন্নতির বিষয়ে ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’ পত্রিকা কীরূপ উদ্যোগ নেয়?
উত্তর:- ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’ পত্রিকা নারীসমাজের উন্নতিতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়। যেমন – এই পত্রিকা বিধবাবিবাহকে সমর্থন করে। নারীশিক্ষার সমর্থনে ব্যাপক প্রচার চালায়। পতিতা সমস্যা নিয়ে নানা প্রবন্ধ প্রকাশ করে।
১৩. হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় অত্যাচারী নীলচাষিদের জন্য কীরূপ সহযোগিতা করেন?
উত্তর:- হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় বাংলার দুর্দশাগ্রস্ত নীলচাষিদের নানাভাবে সহায়তা করেন। যেমন – নীলচাষিদের ওপর অত্যাচারের বিবরণ নিয়মিত হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকায় প্রকাশিত হতে থাকে। অত্যাচারিত নীলচাষিরা হরিশচন্দ্রের ভবানীপুরের বাড়িতে হাজির হয়ে অর্থিক সহায়তা লাভ করতেন। তিনি চাষিদের সমস্যার বিবরণ শুনে তা থেকে মুক্তির উপায় খুঁজে দেওয়া, দরখাস্ত লিখে দেওয়া, প্রয়োজনে আদালতের দ্বারস্থ হতে পরামর্শ দেওয়া প্রভৃতি কাজ করে দিতেন।
১৪. ‘গ্রামবার্তাপ্রকাশিকা’ কবে প্রথম প্রকাশিত হয়? এই পত্রিকার প্রথম সম্পাদক কে ছিলেন?
উত্তর:- ১৮৬৩ সালের এপ্রিল মাসে ‘গ্রামবার্তাপ্রকাশিকা’ পত্রিকা প্রথম প্রকাশিত হয়।
গ্রামবার্তাপ্রকাশিকা পত্রিকার প্রথম সম্পাদক ছিলেন হরিনাথ মজুমদার যিনি ‘কাঙাল হরিনাথ’ নামে পরিচিত ছিলেন।
১৫. ‘গ্রামবার্তাপ্রকাশিকা’ পত্রিকায় কী কী আলোচনা প্রকাশিত হত?
উত্তর:- ‘গ্রামবার্তাপ্রকাশিকা’ পত্রিকায় নীলকর, জমিদার ও মহাজনদের অত্যাচারের বিবরণ, সাহিত্য, দর্শন, বিজ্ঞান, বিপ্লবীদের শপথ ও বীরত্বগাথা প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয়ের আলোচনা প্রকাশিত হত।
১৬. ‘গ্রামবার্তাপ্রকাশিকা’ পত্রিকায় সমকালীন বাংলার কীরূপ সমাজচিত্র পাওয়া যায়?
উত্তর:- ‘গ্রামবার্তাপ্রকাশিকা’ পত্রিকায় সমকালীন বাংলার বিভিন্ন সামাজিক তথ্য পাওয়া যায়। যেমন – নীলকরদের সীমাহীন অত্যাচারে দরিদ্র নীলচাষিদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল। জমিদার, জোতদার, মহাজন প্রমুখের শোষণ ও অত্যাচার সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছিল। পুলিশের কাছে বিচার চেয়েও এর কোনো প্রতিকার মিলত না। বরং অভিযোগকারীই পুলিশের নির্যাতনের শিকার হত।
১৭. ‘গ্রামবার্তাপ্রকাশিকা’ পত্রিকার উদ্দেশ্য কি ছিল?
উত্তর:- ‘গ্রামবার্তাপ্রকাশিকা’ পত্রিকার উদ্দেশ্য ছিল সমকালীন সময়ে গ্রামের আর্থ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরা, কৃষকদের ওপর জমিদার, মহাজন, নীলকরদের শোষণ-অত্যাচারের কাহিনী জনসমক্ষে তুলে ধরা, গ্রামীণ মানুষদের ওপর পুলিশি নির্যাতনের সমালোচনা করা, প্রভুর শোষণ-অত্যাচারের বিরুদ্ধে বাংলার সাধারণ মানুষকে সচেতন করা প্রভৃতি।
১৮. ‘হুতোমপ্যাঁচার নক্সা’ উপন্যাসের ভাষা কীরূপ?
উত্তর:- ‘হুতোমপ্যাঁচার নক্সা’ উপন্যাসটি কলকাতার কথ্য ভাষায় হাস্যরসাত্মক ভঙ্গিতে রচিত হয়েছে। ইতিপূর্বে বাংলা গদ্যে নিরঙ্কুশ কথ্যভাষার ব্যবহার দেখা যায় না।
১৯. ‘হুতোম প্যাঁচার নক্সা’ গ্রন্থের কোন ভাগে কীসের আলোচনা রয়েছে?
উত্তর:- ‘হুতোম প্যাঁচার নক্সা’ গ্রন্থের প্রথম ভাগে কলকাতায় চড়ক পার্বণ, কলকাতার বারোয়ারি পূজা, হুজুক, ছেলেধরা, প্রতাপচাঁদ, মহাপুরুষ, লাল রাজাদের বাড়ী, দাঙ্গা, খ্রিস্টানি হুজুক, সাতপেয়ে গরু, দরিয়াই ঘোড়া, লক্ষ্ণৌয়ের বাসা এবং দ্বিতীয় ভাগে রথ, দুর্গোৎসব, রামলীলা, রেলওয়ে প্রভৃতির আলোচনা রয়েছে।
২০. ‘হুতোম প্যাঁচার নক্সা’ গ্রন্থে কলকাতার বাবু সম্প্রদায়কে কীভাবে তুলে ধরা হয়েছে?
উত্তর:- ‘হুতোমপ্যাঁচার নক্সা’ উপন্যাসে কলকাতার বাবু সম্প্রদায়ের অন্যায়, অবক্ষয় ও কুরুচিকর দিকগুলি তুলে ধরা হয়েছে। এই গ্রন্থে দেখানো হয়েছে বাবু সম্প্রদায়ের মধ্যে সামাজিক অবক্ষয় তীব্র আকার ধারণ করেছে। এই বাবু সম্প্রদায় হঠাৎ ফুলেফেঁপে ধনী হয়ে উঠেছে। এরা সবাই কমবেশি জাল-জুয়াচুরি বা ফন্দি-ফিকির করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করে। বাবুরা বাঙালিয়ানা ভুলে পাশ্চাত্য সভ্যতার অন্ধ অনুকরণে ব্যস্ত।
২১. ‘হুতোমপ্যাঁচার নক্সা’য় তৎকালীন সমাজের মানুষকে কয় ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে ও কী কী?
উত্তর:- ‘হুতোম প্যাঁচার নক্সা’য় তৎকালীন সমাজের মানুষকে তিন ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। ইংরেজি-শিক্ষিত সাহেবি চালচলনের অন্ধ অনুকরণকারী, ইংরেজি শিক্ষিত নব্যপন্থী যারা সাহেবি চালচলনের অনুকরণকারী নয় এবং ইংরেজি না-জানা গোঁড়া হিন্দুসমাজ।
২২. হুতোমপ্যাঁচার নক্সা’ গ্রন্থটির গুরুত্ব কোথায়?
উত্তর:- ‘হুতোমপ্যাঁচার নক্সা’ গ্রন্থটির গুরুত্ব হল এই গ্রন্থ থেকে তৎকালীন কলকাতা ও তার প্রতিবেশী অঞ্চলের কথ্যভাষার ধরন সম্পর্কে জানা যায়। হঠাৎ ফুলেফেঁপে ধনী হয়ে ওঠা তৎকালীন বাঙালি সম্প্রদায়ের চরিত্র সম্পর্কে এই গ্রন্থ থেকে ধারণা পাওয়া যায়। এই গ্রন্থে সমাজের বিভিন্ন ত্রুটিগুলি উল্লেখ করে তা সংশোধনের প্রয়াস চালানো হয়েছে।
২৩. দীনবন্ধু মিত্রের লেখা উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গ্রন্থের নাম লেখো।
উত্তর:- দীনবন্ধু মিত্রের লেখা উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গ্রন্থ হল ‘নীলদর্পণ’, ‘নবীন তপস্বিনী’, ‘সধবার একাদশী’, ‘বিয়ে পাগলা বুড়ো’ প্রভৃতি। ‘নীলদর্পণ’ নাটকটি দীনবন্ধু মিত্রের শ্রেষ্ঠ সাহিত্যকীর্তি।
২৪. ‘নীলদর্পণ’ নাটকের প্রধান আলোচ্য বিষয় কী? অথবা, ‘নীলদর্পণ’ নাটকে তৎকালীন বঙ্গসমাজের কীরূপ চিত্র ফুটে উঠেছে?
উত্তর:- ‘নীলদর্পণ’ নাটকে তৎকালীন বঙ্গসমাজে নীলচাষিদের অবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে যে নীলকর সাহেবরা বাংলার দরিদ্র চাষিদের নীলচাষে বাধ্য করে। নীলচাষ করে চাষিদের ঘরে খাদ্যাভাব দেখা দেয়। নীলচাষ না করলে নীলকর সাহেবরা চাষিদের ওপর সীমাহীন অত্যাচার চালায়।
২৫. সমাজসংস্কারে নব্যবঙ্গদের ভূমিকা কী ছিল?
উত্তর:- ডিরোজিও-র অনুগামীরা নব্যবঙ্গ নামে পরিচিত। এরা হিন্দু সমাজের পৌত্তলিকতা, জাতিভেদ প্রথা, বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, সতীদাহ প্রথা প্রভৃতির বিরুদ্ধে এবং নারীশিক্ষা, নারীস্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা প্রভৃতির সপক্ষে আন্দোলন চালায়। এরা সমাজে যুক্তিবাদেরও প্রসার ঘটায়।
২৬. কে ‘নীলদর্পণ’ নাটকের ইংরেজি অনুবাদ করেন এবং কার নামে এটি প্রকাশিত হয়?
উত্তর:- মাইকেল মধুসূদন দত্ত ‘নীলদর্পণ’ নাটকের ইংরেজি অনুবাদ করেন বলে গবেষকগণ মনে করেন। ব্রিটিশ সরকারের শাস্তি এড়াতে ‘নীলদর্পণ’ নাটকের ইংরেজি অনুবাদ খ্রিস্টান পাদরি রেভারেন্ড জেমস লং-এর নামে প্রকাশিত হয়।
২৭. জেমস লং-এর নামে ‘নীলদর্পণ’ নাটকের ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশিত হলে এর কী প্রতিক্রিয়া হয়?
উত্তর:- জেমস লং-এর নামে ‘নীলদর্পণ’ নাটকের ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশিত হলে ইংরেজ সরকার লং সাহেবকে অভিযুক্ত করে। বিচারে তাঁর এক মাসের কারাদণ্ড এবং ১ হাজার টাকা জরিমানা হয়।
২৮. ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রথমদিকে কেন ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে উদ্যোগ নেয়নি?
উত্তর:- ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রথমদিকে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে উদ্যোগ নেয়নি। কারণ, কোম্পানি মনে করত যে ভারতীয়দের শিক্ষার জন্য ব্রিটিশদের অর্থসম্পদ ব্যয়ের কোনো প্রয়োজন নেই। ভারতীয়দের ধর্মভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করলে ভারতীয়রা ব্রিটিশদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠবে। ভারতীয়রা পাশ্চাত্য শিক্ষা পেলে তাদের মধ্যে স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা জেগে উঠবে।
২৯. প্রাচ্য-পাশ্চাত্য শিক্ষা-বিষয়ক দ্বন্দ্ব কীভাবে শুরু হয়? অথবা, ভারতে জনশিক্ষার নীতি নির্ধারণে পরস্পর- বিরোধী গোষ্ঠীর পরিচয় দাও।
উত্তর:- ভারতে প্রাচ্য না পাশ্চাত্য পদ্ধতিতে শিক্ষাদান করা উচিত এই প্রশ্নকে কেন্দ্র করে জনশিক্ষা কমিটির (১৮২৩ খ্রি.) সদস্যরা দুটি দলে বিভক্ত হয়ে পড়ে। প্রাচ্যবাদের সমর্থক এইচ টি প্রিন্সেপ, কোলব্রুক, উইলসন প্রমুখ এদেশে প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্য ও দর্শন বিষয়ে শিক্ষাদানের পক্ষপাতী ছিলেন। এঁরা প্রাচ্যবাদী বা ওরিয়েন্টালিস্ট নামে পরিচিত। অন্যদিকে পাশ্চাত্যবাদের সমর্থক মেকলে, আলেকজান্ডার ডাফ, সন্ডার্স, কলভিন প্রমুখ এদেশে আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তনের দাবি জানান। এঁরা পাশ্চাত্যবাদী বা অ্যাংলিসিস্ট নামে পরিচিত।
৩০. প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্যবাদী দ্বন্দ্ব কী? অথবা, প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্যবাদী শিক্ষা বিতর্ক বলতে কী বোঝ?
উত্তর:- ভারতে প্রাচ্য না পাশ্চাত্য পদ্ধতিতে শিক্ষাদান করা উচিত এই প্রশ্নকে কেন্দ্র করে লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের শাসনকালে (১৮২৮-৩৫ খ্রি.) জনশিক্ষা কমিটির সদস্যরা দুটি পৃথক দলে বিভক্ত হয়ে যায়। একদল প্রাচ্য পদ্ধতিতে এবং অপর দল পাশ্চাত্য পদ্ধতিতে শিক্ষাদানের পক্ষে মত দেন। দুটি দলের এই দ্বন্দ্ব প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্যবাদী দ্বন্দ্ব নামে পরিচিত।
৩১. প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যবাদী কাদের বলা হয়?
উত্তর:- ভারতে প্রাচ্য না পাশ্চাত্য পদ্ধতিতে শিক্ষাদান করা উচিত এই প্রশ্নকে কেন্দ্র করে লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের শাসনকালে (১৮২৮-৩৫ খ্রি.) জনশিক্ষা কমিটির সদস্যরা দুটি পৃথক দলে বিভক্ত হয়ে যায়। এইচ টি প্রিন্সেপ, কোলব্রুক, উইলসন প্রমুখ প্রাচ্য পদ্ধতিতে শিক্ষাদানের সমর্থক হওয়ায় তাঁরা প্রাচ্যবাদী এবং মেকলে, আলেকজান্ডার ডাফ, সন্ডার্স, কোলভিল প্রমুখ পাশ্চাত্য পদ্ধতিতে শিক্ষাদানের সমর্থক হওয়ায় তাঁরা পাশ্চাত্যবাদী নামে পরিচিত হন।
৩২. প্রাচ্যচর্চার উদ্দেশ্যে ব্রিটিশদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত কয়েকটি কেন্দ্রের নাম লেখো।
উত্তর:- প্রাচ্যচর্চার উদ্দেশ্যে ব্রিটিশদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কেন্দ্র হল কলকাতা মাদ্রাসা (১৭৮১ খ্রি.), এশিয়াটিক সোসাইটি (১৭৮৪ খ্রি.), বারাণসী সংস্কৃত কলেজ (১৭৯২ খ্রি.), ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ (১৮০০ খ্রি.) প্রভৃতি।
৩৩. কে, কেন এশিয়াটিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর:- ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে উইলিয়াম জোন্স কলকাতায় ‘এশিয়াটিক সোসাইটি’ প্রতিষ্ঠা করেন।
ভারতে প্রাচ্যবিদ্যা চর্চার উদ্দেশ্যে জোন্স এটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
৩৪. কে, কী উদ্দেশ্যে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন? অথবা, ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ কে, কবে, কেন প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর:- লর্ড ওয়েলেসলি ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।
ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল ভারতে ব্রিটিশ প্রশাসনে কর্মরত যুবকদের ভারতীয় ভাষা, আইন, সংস্কৃতি ও রীতিনীতি সম্পর্কে অবহিত করা।
৩৫. ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের চার্টার অ্যাক্ট বা সনদ আইনের শিক্ষাবিষয়ক একটি উল্লেখযোগ্য ধারা উল্লেখ করো।
উত্তর:- ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের চার্টার অ্যাক্ট বা সনদ আইনে বলা হয় যে, কোম্পানি প্রতি বছর ১ লক্ষ টাকা ভারতীয় জনশিক্ষার জন্য ব্যয় করবে।
৩৬. কবে, কী উদ্দেশ্যে ‘জনশিক্ষা কমিটি’ বা ‘কমিটি অব পাবলিক ইন্সট্রাকশন’ গঠিত হয়?
উত্তর:- ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে জনশিক্ষা কমিটি বা কমিটি অব পাবলিক ইন্সট্রাকশন গঠিত হয়। জনশিক্ষা কমিটি বা কমিটি অব পাবলিক ইন্সট্রাকশন গঠনের উদ্দেশ্য ছিল ভারতে জনশিক্ষার নীতি নির্ধারণ করা।
৩৭. শিক্ষাক্ষেত্রে ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদের গুরুত্ব কী ছিল?
উত্তর:- শিক্ষাক্ষেত্রে ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদের গুরুত্ব ছিল যে, এর দ্বারা কোম্পানি প্রতি বছর ১ লক্ষ টাকা ভারতীয় জনশিক্ষার জন্য ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নেয়। ভারতে জনশিক্ষার নীতি নির্ধারণের উদ্দেশ্যে ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে ‘জনশিক্ষা কমিটি’ বা ‘কমিটি অব পাবলিক ইন্সট্রাকশন’ গঠিত হয়।
৩৮. কবে, কী উদ্দেশ্যে ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তর:- ইংরেজি ভাষায় পাঠ্যপুস্তক রচনার উদ্দেশ্যে ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
৩৯. কবে, কী উদ্দেশ্যে ক্যালকাটা স্কুল সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তর:-বিভিন্ন স্থানে ইংরেজি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে ক্যালকাটা স্কুল সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
৪০. পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের আগে বাংলার সমাজ কীরূপ ছিল?
উত্তর:- পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের আগে বাংলার সমাজ ছিল খুবই পশ্চাদপদ। নানান কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাস, গোঁড়ামি, সতীদাহ প্রথা, বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, জাতিভেদ প্রথা, অস্পৃশ্যতা, গঙ্গাজলে সন্তান বিসর্জন প্রভৃতি সামাজিক কুপ্রথা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল।
৪১. ভারতে শিক্ষাদানের বিষয়ে টমাস মেকলের বক্তব্য কী ছিল? অথবা, ‘মেকলে মিনিট’ কী?
উত্তর:- জনশিক্ষা কমিটির সভাপতি টমাস ব্যাবিংটন মেকলে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তনের দাবি জানিয়ে ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে (২ ফেব্রুয়ারি) বড়োলাট লর্ড বেন্টিঙ্কের কাছে একটি প্রস্তাব দেন যা, ‘মেকলে মিনিট’ নামে পরিচিত। এই প্রস্তাবে মেকলে বলেন যে, প্রাচ্যের শিক্ষাব্যবস্থা খুবই পশ্চাদপদ। এজন্য এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তিত হওয়া উচিত।
৪২. ‘মেকলে মিনিট’-এ কী বলা হয়?
উত্তর:- ‘মেকলে মিনিট’-এ বলা হয় যে প্রাচ্যের শিক্ষা পাশ্চাত্যের তুলনায় নিকৃষ্ট। প্রাচ্যের সভ্যতা ‘দুর্নীতিগ্রস্ত ও অপবিত্র’। তাই এদেশে পাশ্চাত্যের শিক্ষা প্রবর্তিত হওয়া উচিত। এদেশের উচ্চ ও মধ্যবিত্তদের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষার প্রসার ঘটলে ক্রমনিম্ন পরিস্রুত নীতি বা চুঁইয়ে পড়া নীতি অনুসারে তা ক্রমশ সাধারণ দেশবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে।
৪৩. ‘ক্রমনিম্ন পরিস্রুত নীতি’ বা ‘চুঁইয়ে পড়া নীতি’ কী?
উত্তর:- জনশিক্ষা কমিটির সভাপতি লর্ড মেকলে তাঁর এক প্রস্তাবে লর্ড বেন্টিঙ্ককে বলেন যে, জল যেভাবে ওপর থেকে নীচের দিকে ছড়িয়ে পড়ে, ভারতে উচ্চ ও মধ্যবিত্তদের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষার প্রসার ঘটলে তা ক্রমশ সাধারণ দেশবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে। মেকলের এই নীতি ক্রমনিম্ন পরিস্রুত নীতি বা চুঁইয়ে পড়া নীতি নামে পরিচিত।
৪৪. কোন পরিস্থিতিতে ভারতে ইংরেজি শিক্ষার প্রসার ঘটে?
উত্তর:- অষ্টাদশ শতকের শুরুতে ভারতে ব্রিটিশ বাণিজ্য, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত প্রভৃতির যথেষ্ট প্রসার ঘটলে এইসব প্রতিষ্ঠানে ইংরেজি ভাষা জানা কর্মচারীর প্রয়োজন দেখা দেয়। এদিকে মধ্যবিত্ত বাঙালি সম্প্রদায় চাকরি লাভের আশায় ইংরেজি শেখার প্রতি আগ্রহ দেখায়। এই পরিস্থিতিতে ভারতে ইংরেজি শিক্ষার প্রসার ঘটে।
৪৫. ব্যক্তিগত উদ্যোগে এদেশে ইংরেজি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন এমন কয়েকজন বিদেশির নাম লেখো।
উত্তর:- ব্যক্তিগত উদ্যোগে এদেশে ইংরেজি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন এমন কয়েকজন বিদেশি হলেন শোরবোর্ন, মার্টিন, বাউল, আরটুন পিট্রাস, ডেভিড ড্রামন্ড, ডেভিড হেয়ার প্রমুখ।
৪৬. ভারতে ইংরেজি শিক্ষার প্রসারে উদ্যোগী হয় এমন কয়েকটি মিশনারি গোষ্ঠীর নাম লেখো।
উত্তর:- ভারতে ইংরেজি শিক্ষার প্রসারে উদ্যোগী হয় এমন কয়েকটি মিশনারি গোষ্ঠী হল লন্ডন মিশনারি সোসাইটি (১৭৯৫ খ্রি.), চার্চ মিশনারি সোসাইটি (১৭৯৯ খ্রি.) ও শ্রীরামপুরের ব্যাপটিস্ট মিশন (১৮০০ খ্রি.) প্রভৃতি।
৪৭. জেসুইট মিশনারিদের উদ্যোগে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম লেখো।
উত্তর:- জেসুইট মিশনারিদের উদ্যোগে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হল সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ (১৮৩৫ খ্রি.) ও লরেটো হাউস স্কুল (১৮৪২ খ্রি.)।
৪৮. উডের ডেসপ্যাচ কী? অথবা, চার্লস উডের নির্দেশনামায় উল্লিখিত সুপারিশগুলি আলোচনা করো।
উত্তর:- বোর্ড অব কন্ট্রোলের সভাপতি স্যার চার্লস উড ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে শিক্ষাবিষয়ক একটি নির্দেশনামা প্রকাশ করেন যা উডের ডেসপ্যাচ বা উডের নির্দেশনামা নামে পরিচিত। উডের ডেসপ্যাচ-এ যেসব সুপারিশ করা হয় সেগুলি হল একটি পৃথক শিক্ষাদপ্তর গঠন, কলকাতা, বোম্বাই ও মাদ্রাজে একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, শিক্ষক-শিক্ষণব্যবস্থা প্রচলন, উচ্চশিক্ষায় ইংরেজি ভাষার গুরুত্ব বৃদ্ধি, স্ত্রীশিক্ষার প্রসার প্রভৃতি।
৪৯. উডের ডেসপ্যাচ-কে (১৮৫৪ খ্রি.) মহাসনদ (ম্যাগনা কার্টা) বলা হয় কেন?
উত্তর:- উডের ডেসপ্যাচ (১৮৫৪ খ্রি.)-এর ওপর ভিত্তি করে ভারতে পাশ্চাত্য ধাঁচের শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে ওঠে। এজন্য একে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের ম্যাগনা কার্টা বা মহাসনদ বলা হয়।
৫০. উডের ডেসপ্যাচের সুপারিশ অনুসারে কবে, কোথায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তর:- উডের ডেসপ্যাচের সুপারিশ অনুসারে ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা, বোম্বাই ও মাদ্রাজে একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।
৫১. পাশ্চাত্য শিক্ষার দাবিতে রামমোহন রায়ের পত্র (১৮২৩ খ্রি.) সম্পর্কে কী জান?
উত্তর:- ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইনের দ্বারা ভারতীয় জনশিক্ষার জন্য বার্ষিক এক লক্ষ টাকা ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নেয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে ‘জনশিক্ষা কমিটি’ ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় একটি সংস্কৃত কলেজ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়। এই সময়ে রামমোহন ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে লর্ড আমহার্স্টকে এক পত্র লিখে এই অর্থ ইংরেজি ও আধুনিক বিজ্ঞান শিক্ষার জন্য ব্যয় করার দাবি জানান।
৫২. কোন্ কোন্ বাঙালি মনীষী এদেশে ইংরেজি শিক্ষার প্রসারে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন?
উত্তর:- রামমোহন রায়, রাধাকান্ত দেব, দ্বারকানাথ ঠাকুর, তেজচন্দ্র রায়, জয়নারায়ণ ঘোষাল প্রমুখ বাঙালি মনীষী এদেশে ইংরেজি শিক্ষার প্রসারে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন।
৫৩. বেন্টিঙ্ক ভারতে ইংরেজি শিক্ষার প্রসারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর গড়ে-ওঠা কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম করো।
উত্তর:- বেন্টিঙ্ক ভারতে ইংরেজি শিক্ষার প্রসারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল কলকাতা মেডিকেল কলেজ (১৮৩৫ খ্রি), রুরকিতে থমাসোন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (১৮৪৭ খ্রি.), বোম্বাই-এ এলফিনস্টোন ইন্সটিটিউশন (১৮৫৬ খ্রি.) প্রভৃতি।
৫৪. কবে, কাদের উদ্যোগে হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়? হিন্দু কলেজ পরবর্তীকালে কী নাম গ্রহণ করে?
উত্তর:- ডেভিড হেয়ার, রাধাকান্ত দেব, বৈদ্যনাথ মুখোপাধ্যায়, এডওয়ার্ড হাইড ইস্ট প্রমুখের উদ্যোগে ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়।
৫৫.
উত্তর:- হিন্দু কলেজ ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে প্রেসিডেন্সি কলেজ নামে পরিচিত হয়। ২০১০ খ্রিস্টাব্দে এটি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় নাম গ্রহণ করে।
৫৬. উনিশ শতকে বাংলায় নারীশিক্ষার প্রসারে প্রধান বাধাগুলি কী ছিল?
উত্তর:- উনিশ শতকে বাংলায় নারীশিক্ষার প্রসারে প্রধান বাধাগুলি ছিল রক্ষণশীল হিন্দুসমাজ মেয়েদের লেখাপড়া শেখাকে সমর্থন না করা। বাল্যবিবাহ, পর্দাপ্রথা, সামাজিক ও ধর্মীয় বিধিনিষেধ প্রভৃতি প্রতিবন্ধকতা।
৫৭. ফিমেল জুভেনাইল সোসাইটি কী?
উত্তর:- ফিমেল জুভেনাইল সোসাইটি হল শ্রীরামপুরের খ্রিস্টান মিশনারিদের উদ্যোগে ১৮১৯ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত একটি সংগঠন যেটি বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগ নিত।
৫৮. স্ত্রীশিক্ষা বিস্তারে বিদেশিরা কী ভূমিকা নিয়েছিল?
উত্তর:- ভারতে স্ত্রীশিক্ষা বিস্তারে বিদেশিরা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেন। এ বিষয়ে সর্বপ্রথম উদ্যোগ নেয় খ্রিস্টান মিশনারিরা। ১৮১১ খ্রিস্টাব্দে উইলিয়াম কেরি ও মার্শম্যানের উদ্যোগে শ্রীরামপুরে একটি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়। এ ছাড়া লন্ডন মিশনারি সোসাইটির রবার্ট মে ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে মিস কুক প্রতিষ্ঠা করেন ‘ক্যালকাটা ফিমেল স্কুল’। মিস কুক, মেরি উইলসন, মেরি কার্পেন্টার প্রমুখ বিদেশিনী বাংলায় নারীশিক্ষার বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন।
৫৯. কয়েকজন বিদেশিনির নাম লেখো যাঁরা বাংলায় নারীশিক্ষার প্রসারে কাজ করেছেন।
উত্তর:- বাংলায় নারীশিক্ষার প্রসারে কাজ করেছেন এমন কয়েকজন বিদেশিনি হলেন মিস কুক, মেরি উইলসন, মেরি কার্পেন্টার, অ্যানেট অ্যাক্রয়েড প্রমুখ।
৬০. বাংলায় নারীশিক্ষার প্রসারে উদ্যোগ নিয়েছিল এমন কয়েকটি সংগঠনের নাম লেখো।
উত্তর:- বাংলায় নারীশিক্ষার প্রসারে উদ্যোগ নিয়েছিল এমন কয়েকটি সংগঠন হল ফিমেল জুভেনাইল সোসাইটি (১৮১৯ খ্রি.), কলকাতা স্কুল সোসাইটি (১৮১৭ খ্রি.), লেডিজ সোসাইটি ফর নেটিভ ফিমেল এডুকেশন (১৮২৪ খ্রি.)।
৬১. কবে, কাদের উদ্যোগে হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়? এর বর্তমান নাম কী?
উত্তর:- ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও ড্রিংকওয়াটার বিটন (বেথুন)-এর উদ্যোগে কলকাতায় হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।
এর বর্তমান নাম হল বেথুন স্কুল।
৬২. কে, কী উদ্দেশ্যে স্ত্রীশিক্ষা বিধায়িনী সম্মিলনী প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর:- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর স্ত্রীশিক্ষা বিধায়িনী সম্মিলনী প্রতিষ্ঠা করেন। স্ত্রীশিক্ষা বিধায়িনী সম্মিলনী প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল নারীশিক্ষার প্রসার ঘটানো।
৬৩. ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত কয়েকটি বালিকা বিদ্যালয়ের উল্লেখ করো।
উত্তর:- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর নারীশিক্ষার প্রসারে বেশ কয়েকটি বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে ড্রিংকওয়াটার বিটনের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত হিন্দু বালিকা বিদ্যালয়, নদিয়া, বর্ধমান, হুগলি ও মেদিনীপুর জেলায় প্রতিষ্ঠিত ৩৫টি বালিকা বিদ্যালয়।
৬৪. কে, কোথায় ভগবতী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর:- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর তাঁর মা ভগবতী দেবীর স্মৃতিতে ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে নিজ গ্রাম বীরসিংহে ভগবতী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।
৬৫. বাংলায় নারীশিক্ষার প্রসারের কয়েকটি প্রভাব উল্লেখ করো।
উত্তর:- বাংলায় নারীশিক্ষার প্রসারের ফলে সমাজে বাল্যবিবাহ, সতীদাহ প্রথা, পুরুষের বহুবিবাহ প্রভৃতির বিরুদ্ধে নারী সচেতনতা তৈরি হয়। উনিশ শতকে রাসসুন্দরী দেবী, কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়, চন্দ্রমুখী বসু প্রমুখ কৃতী নারীর আত্মপ্রকাশ ঘটে।
৬৬. বাংলা ভাষায় প্রথম আত্মজীবনী কোনটি? এটি কে রচনা করেন?
উত্তর:- বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম আত্মজীবনী গ্রন্থ হল ‘আমার জীবন’।
‘আমার জীবন’-এর রচয়িতা হলেন রাসসুন্দরী দেবী।
৬৭. পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে রামমোহন রায়ের কয়েকটি উদ্যোগ উল্লেখ করো।
উত্তর:- পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে রামমোহন রায়ের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ হল তিনি ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় অ্যাংলো-হিন্দু স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। হিন্দু কলেজ (১৮১৭ খ্রি.) প্রতিষ্ঠায় তাঁর উদ্যোগ ছিল বলে কেউ কেউ উল্লেখ করেন। রামমোহন লর্ড আমহার্স্টকে একটি পত্র (১৮২৩ খ্রি.) লিখে সরকারি অর্থ আধুনিক বিজ্ঞান ও ইংরেজি শিক্ষার প্রসারের জন্য ব্যয়ের দাবি জানান। কুসংস্কার ও মূর্তিপূজা দূর করার উদ্দেশ্যে তিনি বেদান্ত কলেজ (১৮২৬ খ্রি.) প্রতিষ্ঠা করেন।
৬৮. রাজা রামমোহন রায় কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠানের নাম লেখো।
উত্তর:- রাজা রামমোহন রায় কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান ছিল আত্মীয় সভা (১৮১৫ খ্রি.), বেদান্ত কলেজ (১৮২৬ খ্রি.), ব্রাহ্মসভা (১৮২৮ খ্রি.) প্রভৃতি।
৬৯. কে, কবে বেদান্ত কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন? এই কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী ছিল?
উত্তর:- রাজা রামমোহন রায় ১৮২৬ খ্রিস্টাব্দে বেদান্ত কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।
বেদান্ত কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীদের মন থেকে কুসংস্কার ও মূর্তিপূজা দূর করা।
৭০. হিন্দু কলেজ (১৮১৭ খ্রি.) প্রতিষ্ঠায় কাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল?
উত্তর:- হিন্দু কলেজ (১৮১৭ খ্রি.) প্রতিষ্ঠায় রাধাকান্ত দেব, ডেভিড হেয়ার, বৈদ্যনাথ মুখোপাধ্যায়, স্যার হাইড ইস্ট প্রমুখের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
৭১. ডেভিড হেয়ার কে ছিলেন?
উত্তর:- ডেভিড হেয়ার ছিলেন স্কটল্যান্ডের একজন ঘড়ি প্রস্তুতকারক। তিনি তাঁর উপার্জিত অর্থ ভারতে এসে পাশ্চাত্য শিক্ষার জন্য ব্যয় করেন। স্কুল বুক সোসাইটি (১৮১৭ খ্রি.) ও পটলডাঙ্গা অ্যাকাডেমি (১৮১৮ খ্রি.) প্রতিষ্ঠা তাঁর উল্লেখযোগ্য কীর্তি। হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠায়ও তাঁর ভূমিকা ছিল।
৭২. বাংলায় পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে ডেভিড হেয়ারের ভূমিকা কী ছিল?
উত্তর:- বাংলায় পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে ডেভিড হেয়ারের ভূমিকা ছিল তিনি হিন্দু কলেজ (১৮১৭ খ্রি.) প্রতিষ্ঠায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেন। বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় পাঠ্যপুস্তক রচনার উদ্দেশ্যে তিনি স্কুল বুক সোসাইটি (১৮১৭ খ্রি.) প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় পটলডাঙ্গা অ্যাকাডেমি (বর্তমান হেয়ার স্কুল) প্রতিষ্ঠা করেন। নারীশিক্ষার প্রসারেও তিনি বিভিন্ন উদ্যোগ নেন।
৭৩. ড্রিংকওয়াটার বিটন (বেথুন) কে ছিলেন?
উত্তর:- ব্রিটিশ কর্মচারী ড্রিংকওয়াটার বিটন (বেথুন) ছিলেন একজন শিক্ষানুরাগী। তিনি বাংলায় নারীদের মধ্যে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় (বর্তমান বেথুন স্কুল) প্রতিষ্ঠা তাঁর শ্রেষ্ঠ কীর্তি।
৭৪. বাংলায় পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে ড্রিংকওয়াটার বিটনের কী ভূমিকা ছিল?
উত্তর:- বাংলায় পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে ড্রিংকওয়াটার বিটনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। তিনি প্রথমে বাংলা মাধ্যমে এবং পরে ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষার প্রসারে গুরুত্ব দেন। নারীদের মধ্যে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যে ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে (৭ মে) হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় (বর্তমান বেথুন স্কুল) প্রতিষ্ঠা করেন।
৭৫. ড্রিংকওয়াটার বিটন সাহেব কেন স্মরণীয়?
উত্তর:- ব্রিটিশ কর্মচারী ড্রিংকওয়াটার বিটন সাহেব বিশেষ ভাবে স্মরণীয়। কারণ, তিনি বাংলার মেয়েদের মধ্যে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যে রামগোপাল ঘোষ, দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায় প্রমুখের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে (৭মে) হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ভারতের প্রথম এই বালিকা বিদ্যালয়টি বর্তমানে বেথুন স্কুল এবং কলেজটি বেথুন কলেজ নামে পরিচিত।
৭৬. কলকাতা মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী ছিল?
উত্তর:- কলকাতা মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয় শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ভাষায় ইউরোপীয় চিকিৎসাশাস্ত্র বিষয়ে শিক্ষাদান, জাতি-বর্ণ নির্বিশেষে ভারতীয় যুবকদের আধুনিক পাশ্চাত্য চিকিৎসাবিদ্যায় দক্ষ করে তোলা এবং দেশের বিভিন্ন চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়মিত দক্ষ ডাক্তার, নার্স জোগান দেওয়া প্রভৃতি।
৭৭. কলকাতা মেডিকেল কলেজের অবদান কী?
উত্তর:- ভারতে আধুনিক পাশ্চাত্য চিকিৎসাবিদ্যার প্রসারে কলকাতা মেডিকেল কলেজের অবদান ছিল অসামান্য। পন্ডিচেরীর পর কলকাতা মেডিকেল কলেজ হল এশিয়া মহাদেশের দ্বিতীয় কলেজ যেখানে ইউরোপীয় চিকিৎসাবিদ্যা শেখানো হত। এই কলেজ থেকে চিকিৎসাবিদ্যা শিখে বহু ডাক্তার ও নার্স ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে চিকিৎসার কাজে নিযুক্ত হয়। এই কলেজেই প্রথম শব ব্যবচ্ছেদ করেন মধুসূদন গুপ্ত।
৭৮. মধুসূদন গুপ্ত কে ছিলেন?
উত্তর:- মধুসূদন গুপ্ত (১৮০০-১৮৫৬ খ্রি.) ছিলেন কলকাতা মেডিকেল কলেজের একজন ছাত্র। এদেশে তিনিই প্রথম শব বা মৃতদেহ ব্যবচ্ছেদ করে এক যুগান্তকারী ঘটনা ঘটান। তিনি ১৮৪০ খ্রিস্টাব্দে ডাক্তারি পাস করেন এবং পরে মেডিকেল কলেজের চাকরিতে যোগ দেন।
৭৯. কে প্রথম শব ব্যবচ্ছেদ করেন? একাজে কারা তাঁকে সহায়তা করেন?
উত্তর:- কলকাতা মেডিকেল কলেজের ছাত্র মধুসূদন গুপ্ত ১৮৪০ খ্রিস্টাব্দে শব ব্যবচ্ছেদ করেন।
শব ব্যবচ্ছেদের কাজে মধুসূদন গুপ্ত-কে সহায়তা করেন মেডিকেল কলেজের ছাত্র রাজকৃষ্ণ দে, উমাচরণ শেঠ, দ্বারকানাথ গুপ্ত, নবীনচন্দ্র মিত্র প্রমুখ।
৮০. মধুসূদন গুপ্ত-র কয়েকটি অনুবাদ গ্রন্থের নাম লেখো।
উত্তর:- মধুসূদন গুপ্তর কয়েকটি অনুবাদ গ্রন্থ হল বাংলায় ‘London Pharmacopoeia’ এবং সংস্কৃত ভাষায় হুপারের ‘Anatomist’s Vade Mecum’
৮১. বিভিন্ন সময়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে বিপুল অর্থ দান করেছেন এমন কয়েকজনের নাম লেখো।
উত্তর:- বিভিন্ন সময়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে বিপুল অর্থ দান করেছেন এমন কয়েকজন ব্যক্তি হলেন তারকনাথ পালিত, রাসবিহারী ঘোষ, প্রসন্নকুমার ঠাকুর, প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ, ড. নীলরতন সরকার প্রভৃতি।
৮২. আধুনিক শিক্ষার প্রসারে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা কী?
উত্তর:- বাংলা তথা ভারতে আধুনিক শিক্ষার প্রসারে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ই প্রথম উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষাদান শুরু করে। ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে এই বিশ্ববিদ্যালয় একদা উচ্চশিক্ষার প্রসার নিয়ন্ত্রণ করত। ভারতীয় শিক্ষা, বিজ্ঞান, রাষ্ট্রনীতি প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয়ে এখানে উন্নত শিক্ষাদান করা হত।
৮৩. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন উল্লেখযোগ্য কৃতী ছাত্রের নাম লেখো।
উত্তর:- কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন উল্লেখযোগ্য কৃতী ছাত্র ছিলেন জগদীশচন্দ্র বসু, প্রফুল্লচন্দ্র রায়, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, মেঘনাদ সাহা, চন্দ্রশেখর ভেঙ্কটরমন, সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণান, রমেশচন্দ্র মজুমদার, সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়, নীহাররঞ্জন রায়, স্বামী বিবেকানন্দ, সুভাষচন্দ্র বসু প্রমুখ।
৮৪. ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠার পূর্বে ভারতের শিক্ষাব্যবস্থা কীরূপ ছিল?
উত্তর:- ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠার পূর্বে ভারতের শিক্ষাব্যবস্থা ছিল খুবই পশ্চাদপদ। শিক্ষাদানের প্রধান কেন্দ্র বলতে ছিল হিন্দুদের টোল ও পাঠশালা এবং মুসলিমদের মক্তব ও মাদ্রাসা। এগুলিতে কিছু ধর্মীয় কাহিনি, আরবি, ফারসি, সংস্কৃত প্রভৃতি বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া হত। এসব প্রতিষ্ঠানে আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষাদানের কোনো ব্যবস্থা ছিল না।
৮৫. কে, কী উদ্দেশ্যে তত্ত্ববোধিনী সভা প্রতিষ্ঠা করেন? এই সভার কয়েকজন উল্লেখযোগ্য সদস্যের নাম লেখো।
উত্তর:- মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর সংস্কারমুক্ত ধর্ম আলোচনার উদ্দেশ্যে ১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দে তত্ত্ববোধিনী সভা প্রতিষ্ঠা করেন।
৮৬. তত্ত্ববোধিনী সভার কয়েকজন উল্লেখযোগ্য সদস্য ছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রামতনু লাহিড়ী, অক্ষয়কুমার দত্ত, রাজনারায়ণ বসু প্রমুখ।
৮৭. সতীদাহপ্রথা কী?
উত্তর:- উনিশ শতকের গোড়াতেও ভারতীয় হিন্দুসমাজে প্রচলিত এক প্রথা অনুসারে স্বামীর মৃত্যুর পর জ্বলন্ত চিতায় তাঁর বিধবা স্ত্রীকে জীবন্ত অবস্থায় পুড়িয়ে মারা হত। এই মধ্যযুগীয় নিষ্ঠুর বর্বর প্রথা সতীদাহ প্রথা বা সহমরণ নামে পরিচিত।
৮৮. রামমোহন কী উপায়ে সতীদাহ প্রথার অবসান ঘটাতে চেয়েছিলেন?
উত্তর:- রামমোহন রায় লোকশিক্ষার মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করে তুলে সতীদাহ প্রথার অবসান ঘটাতে চেয়েছিলেন। এই উদ্দেশ্যে তিনি ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে একটি বাংলা পুস্তিকা প্রকাশ করেন।
৮৯. রামমোহন রায় সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে কীরূপ প্রচার চালান?
উত্তর:- রামমোহন রায় সতীদাহপ্রথার বিরুদ্ধে বিভিন্ন উপায়ে প্রচার চালান। যেমন – তিনি ‘মনুসংহিতা’-সহ বিভিন্ন হিন্দুশাস্ত্র ও ধর্মগ্রন্থ থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করেন যে, সতীদাহ প্রথা হিন্দুধর্ম ও শাস্ত্রবিরোধী। তিনি সতীদাহপ্রথার বিরুদ্ধে ‘সম্বাদ কৌমুদী’ পত্রিকায় নিয়মিত প্রবন্ধ প্রকাশ করেন। তিনি লর্ড বেন্টিঙ্কের কাছে বাংলার বিভিন্ন বিশিষ্ট নাগরিকদের স্বাক্ষর-সম্বলিত একটি আবেদনপত্র জমা দিয়ে সতীদাহ প্রথা বন্ধের অনুরোধ করেন।
৯০. কে, কবে সতীদাহপ্রথা নিষিদ্ধ করেন?
উত্তর:- ভারতের বড়োলাট লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক রামমোহন রায়ের সহায়তায় ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে (৪ ডিসেম্বর) ১৭নং রেগুলেশন আইন পাস করেন। এই আইনের দ্বারা সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধ হয়।
৯১. বিধবাবিবাহের সপক্ষে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কয়েকটি উদ্যোগ উল্লেখ করো।
উত্তর:- বিধবাবিবাহের সপক্ষে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কয়েকটি পুস্তিকা প্রকাশ করেন। এ সম্পর্কে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা-সহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তিনি প্রবন্ধ প্রকাশ করেন। বিধবাবিবাহকে আইনসম্মত করার উদ্দেশ্যে তিনি গণস্বাক্ষর সংবলিত একটি আবেদনপত্র সরকারের কাছে জমা দেন।
৯২. কে, কবে বিধবাবিবাহ আইন পাস করেন?
উত্তর:- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সক্রিয় সহযোগিতায় ভারতের বড়োলাট লর্ড ক্যানিং ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে (১৬ জুলাই) ‘বিধবাবিবাহ আইন’ পাস করে বিধবাবিবাহকে আইনি স্বীকৃতি দেন।
৯৩. কবে, কার উদ্যোগে প্রথম বিধবাবিবাহ সম্পন্ন হয়?
উত্তর:- ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দের ৭ ডিসেম্বর বিদ্যাসাগরের উদ্যোগে শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন বর্ধমানের কালীমতী নামে জনৈক বিধবাকে বিবাহ করলে কলকাতায় প্রথম বিধবাবিবাহ সম্পন্ন হয়।
৯৪. হাজি মহম্মদ মহসীন বিখ্যাত কেন?
উত্তর:- হাজি মহম্মদ মহসীন (১৭৩২-১৮১২ খ্রি.) ছিলেন একজন শিক্ষাব্রতী, সমাজসেবক ও দানবীর। উনিশ শতকে বাংলার মুসলিম সমাজে শিক্ষার প্রসার, জনকল্যাণ প্রভৃতি ক্ষেত্রে তাঁর অসামান্য অবদানের কারণে তিনি বিখ্যাত হয়ে আছেন।
৯৫. হাজি মহম্মদ মহসীনের দানের অর্থে কী কী কাজ হয়?
উত্তর:- হাজি মহম্মদ মহসীনের দানের অর্থে মাদ্রাসা-সহ নানান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালানো, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের সহায়তা দান, চিকিৎসার উন্নতি ঘটানো, রাস্তাঘাট তৈরি, পুকুর খনন প্রভৃতি কাজ হয়।
৯৬. হুগলি মহসীন কলেজ কোথায় অবস্থিত? এটি কবে কার উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তর:- হুগলি মহসীন কলেজ হুগলি জেলার চুঁচুড়ায় অবস্থিত।
হাজি মহম্মদ মহসীনের দান করা অর্থে এবং শিক্ষানুরাগী মেটকাফের উদ্যোগে ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দে হুগলি মহসীন কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়।
৯৭. হাজি মহম্মদ মহসীনের দানের অর্থে প্রতিষ্ঠিত কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নাম লেখো।
উত্তর:- হাজি মহম্মদ মহসীনের দানের অর্থে হুগলি মহসীন কলেজ (১৮৩৬ খ্রি.). ইমামবাড়া হাসপাতাল (১৮৩৬ খ্রি.), হুগলির ইমামবাড়া (১৮৪১ খ্রি.), হুগলি কলেজিয়েট স্কুল, হুগলি ব্রাঞ্চ স্কুল, হুগলি মাদ্রাসা-সহ বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়।
৯৮. কবে, কার উদ্যোগে মহসীন শিক্ষা তহবিল গড়ে ওঠে?
উত্তর:- ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ গভর্নর চার্লস মেটকাফের উদ্যোগে মহসীনের দান করা অর্থে মহসীন শিক্ষা তহবিল নামক একটি ফান্ড তৈরি হয়। এই ফান্ডের অর্থ দিয়ে বিভিন্ন সামাজিক কাজের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
৯৯. রাজা রামমোহন রায় কেন আত্মীয় সভা স্থাপন করেন?
উত্তর:- রামমোহন রায় নিজের ধর্মভাবনা সম্পর্কে আলোচনার উদ্দেশ্যে তাঁর অনুগামীদের নিয়ে কলকাতায় ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে ‘আত্মীয় সভা’ প্রতিষ্ঠা করেন। নানা ধর্মীয় ও সামাজিক সমস্যা নিয়ে এই সভায় আলোচনা হত।
১০০. ব্রাহ্মসমাজের প্রধান কয়েকজন নেতার নাম লেখো।
উত্তর:- ব্রাহ্মসমাজের প্রধান কয়েকজন নেতা ছিলেন রামমোহন রায়, দ্বারকানাথ ঠাকুর, রামচন্দ্র বিদ্যাবাগীশ, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, কেশবচন্দ্র সেন, শিবনাথ শাস্ত্রী, বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী, আনন্দমোহন বসু প্রমুখ।
১০১. ব্রাহ্মসমাজের যে-কোনো দুটি সমাজ সংস্কারমূলক কাজের উল্লেখ করো।
উত্তর:- ব্রাহ্মসমাজের উল্লেখযোগ্য দুটি সমাজ সংস্কারমূলক কাজ হল বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহ নিষিদ্ধ করার জন্য ‘তিন আইন’ প্রণয়নে সরকারকে বাধ্য করা, শিক্ষার প্রসার, নারী স্বাধীনতা প্রভৃতির পক্ষে জনমত গড়ে তোলা।
১০২ কে, কবে ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর:- রাজা রামমোহন রায় ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে ব্রাহ্মসভা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে ব্রাহ্মসভার নাম হয় ‘ব্রাহ্মসমাজ’।
১০৩. রাজা রামমোহন রায়ের নেতৃত্বে ব্রাহ্মসমাজ কোন্ কোন্ বিষয়ে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলে?
উত্তর:- রাজা রামমোহন রায়ের নেতৃত্বে ব্রাহ্মসমাজ একেশ্বরবাদ প্রতিষ্ঠা, পৌত্তলিকতার অবসান, সর্বধর্মসমন্বয়সাধন, মানবতাবাদ প্রতিষ্ঠা প্রভৃতি বিষয়ে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলে।
১০৪. দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের নেতৃত্বে ব্রাহ্মসমাজ কীরূপ আন্দোলন গড়ে তোলে?
উত্তর:- দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের নেতৃত্বে ব্রাহ্মসমাজ বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, জাতিভেদ প্রথা প্রভৃতির বিরুদ্ধে এবং অসবর্ণ বিবাহ, বিধবাবিবাহ, নারীশিক্ষা, নারীস্বাধীনতা, শ্রমিক কল্যাণ প্রভৃতির সপক্ষে আন্দোলন গড়ে তোলে। একেশ্বরবাদের প্রচার ও পৌত্তলিকতার বিরোধিতা ব্রাহ্মদের মূল আদর্শ বলে ঘোষিত হয়।
১০৫. কুসংস্কারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে ব্রাহ্মসমাজ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত কয়েকটি সংগঠনের নাম লেখো।
উত্তর:- কুসংস্কারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে ব্রাহ্মসমাজ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত কয়েকটি সংগঠন হল সমাজোন্নয়ন বিধায়নী সুহৃদ সমিতি (১৮৫৪ খ্রি.), ব্রাহ্মবন্ধুসভা (১৮৬০ খ্রি.), সঙ্গতসভা (১৮৬০ খ্রি.), ক্যালকাটা কলেজ (১৮৬২ খ্রি.) প্রভৃতি।
১০৬. কেশবচন্দ্র সেন কে ছিলেন? অথবা, ব্রাহ্ম আন্দোলনে কেশবচন্দ্র সেনের অবদান আলোচনা করো।
উত্তর:- কেশবচন্দ্র সেন ছিলেন ব্রাহ্ম আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা। দেবেন্দ্রনাথ তাঁকে ব্রহ্মানন্দ উপাধি দেন (১৮৬২ খ্রি.) এবং ব্রাহ্মসমাজের আচার্য পদে নিয়োগ করেন। পরবর্তীকালে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে মতবিরোধের ফলে তাঁর নেতৃত্বে তাঁর অনুগামীরা ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ (১৮৬৬ খ্রি.) প্রতিষ্ঠা করেন।
১০৭. কেশবচন্দ্র সেনের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নাম লেখো।
উত্তর:- কেশবচন্দ্র সেনের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ছিল ব্রাহ্মবন্ধুসভা (১৮৬০ খ্রি.), সঙ্গতসভা (১৮৬০ খ্রি.), ক্যালকাটা কলেজ (১৮৬২ খ্রি.) প্রভৃতি।
১০৮. কেশবচন্দ্র সেনের নেতৃত্বে ব্রাহ্মসমাজের কয়েকটি আন্দোলন উল্লেখ করো।
উত্তর:- কেশবচন্দ্র সেনের নেতৃত্বে সামাজিক অস্পৃশ্যতা, জাতিভেদ প্রথা, পর্দাপ্রথা, মদ্যপান প্রভৃতির বিরুদ্ধে এবং বিধবাবিবাহ, অসবর্ণ বিবাহ, স্ত্রীশিক্ষা প্রভৃতির সপক্ষে ব্যাপক প্রচার চালানো হয়।
১০৯. তিন আইন কী?
উত্তর:- কেশবচন্দ্রের নেতৃত্বে ব্রাহ্ম আন্দোলনের প্রভাবে সরকার ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে একটি আইন পাস করে বাল্য ও বহুবিবাহকে নিষিদ্ধ করে এবং অসবর্ণ বিবাহ সিদ্ধ করে। এটি তিন আইন নামে পরিচিত।
১১০. ব্রাহ্মসমাজের বিভাজন সম্পর্কে কী জান?
উত্তর:- ব্রাহ্মসমাজ ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে বিভাজিত হয়ে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের নেতৃত্বে আদি ব্রাহ্মসমাজ ও কেশবচন্দ্র সেনের নেতৃত্বে ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ গঠিত হয়। পরে ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ ভেঙে ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ গঠিত হয় এবং ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে কেশবচন্দ্র সেনের নেতৃত্বে নববিধান ব্রাহ্মসমাজ গঠিত হয়।
১১১. সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ কবে প্রতিষ্ঠিত হয়? এতে কারা নেতৃত্ব দেন?
উত্তর:- ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ ভেঙে ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়। সাধারণ ব্রাহ্মসমাজে নেতৃত্ব দেন শিবনাথ শাস্ত্রী, বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী, আনন্দমোহন বসু প্রমুখ।
১১২. সমাজসংস্কারের ক্ষেত্রে ব্রাহ্মসমাজের কয়েকটি সীমাবদ্ধতা উল্লেখ করো।
উত্তর:- সমাজসংস্কারের ক্ষেত্রে ব্রাহ্মসমাজের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সীমাবদ্ধতা ছিল। যেমন – এই আন্দোলন সমাজের সর্বস্তরের সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রসারিত হয়নি। শহরাঞ্চলের বা শিক্ষিত সমাজের বাইরে ব্রাহ্ম আন্দোলনকে শক্তিশালী করার বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয় নি। ব্রাহ্মসমাজের বিভিন্ন শাখার মধ্যে মতভেদ ব্রাহ্মসমাজ আন্দোলনের গতিকে দুর্বল করে দেয়।
১১৩. বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী কে ছিলেন? অথবা, বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী বিখ্যাত কেন?
উত্তর:- বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী ছিলেন উনিশ শতকের বাংলার একজন ধর্মীয় সাধক। তিনি ব্রাহ্মসমাজে যোগ দিয়ে কিছুদিন কেশবচন্দ্রের অনুগামী হিসেবে কাজ করেন। পরে কেশবচন্দ্রের সঙ্গে বিরোধের ফলে সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ (১৮৭৮ খ্রি.) নামে পৃথক একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেন। পরবর্তীকালে তিনি ব্রাহ্মসমাজ ছেড়ে বৈষ্ণবধর্মে ফিরে আসেন এবং নব্যবৈষ্ণব আন্দোলনের সূচনা করেন।
১১৪. বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী কেন ব্রাহ্মসমাজের আচার্য পদ থেকে বিতাড়িত হন?
উত্তর:- ব্রাহ্মনেতা বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী গয়ায় বৈষ্ণব সাধুদের সঙ্গে কিছুদিন বসবাস করে বৈষ্ণবধর্মের বৈরাগ্য ভাবের প্রতি আকৃষ্ট হন। ফলে সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের সঙ্গে তাঁর মতভেদ দেখা দেয় এবং তিনি ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে ব্রাহ্মসমাজের আচার্য পদ থেকে বিতাড়িত হন।
১১৫. ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ বিভক্ত হল কেন?
উত্তর:- ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজের প্রধান নেতা কেশবচন্দ্র সেনের ইংরেজ প্রীতি, অবতারবাদে বিশ্বাস, নারী-স্বাধীনতার প্রশ্নে দ্বিধা, ভারতীয় ব্রাহ্মসমাজের নিয়ম ভেঙে নিজের ১৪ বছরের নাবালিকা কন্যাকে কোচবিহারের মহারাজের সঙ্গে বিবাহদান প্রভৃতি ঘটনায় অসন্তুষ্ট হয়ে শিবনাথ শাস্ত্রী, বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী, আনন্দমোহন বসু, দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়, দুর্গামোহন দাস প্রমুখ তরুণ কেশবচন্দ্রকে ত্যাগ করেন এবং ‘সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ’ (১৮৭৮ খ্রি.) প্রতিষ্ঠা করেন। কেশবচন্দ্রের নেতৃত্বাধীন সংগঠনটি ‘নববিধান ব্রাহ্মসমাজ’ নামে পরিচিত হয়।
১১৬. বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামীর নব্যবৈষ্ণব আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত উল্লেখযোগ্য কয়েকজন ব্যক্তির নাম লেখো।
উত্তর:- বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামীর নব্যবৈষ্ণব আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত উল্লেখযোগ্য কয়েকজন ব্যক্তি ছিলেন অশ্বিনীকুমার দত্ত, বিপিনচন্দ্র পাল, মনোরঞ্জন গুহঠাকুরতা, সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় প্রমুখ।
১১৭. বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামীর কয়েকটি ধর্মীয় ও সামাজিক উদ্যোগ উল্লেখ করো।
উত্তর:- বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামীর কয়েকটি ধর্মীয় ও সামাজিক উদ্যোগ হল প্রথম জীবনে ব্রাহ্মধর্মের প্রচার করা; পরবর্তীকালে ব্রাহ্মসমাজ ত্যাগ করে বাংলায় নব্যবৈষ্ণব আন্দোলনের সূচনা করা; স্ত্রীশিক্ষা ও নারীজাতির উন্নতির জন্য চেষ্টা চালানো; সর্বধর্মসমন্বয়ের আদর্শে অনুপ্রাণিত হওয়া।
১১৮. শ্রীরামকৃষ্ণের সর্বধর্মসমন্বয়ের মূল কথা কী?
উত্তর:- শ্রীরামকৃষ্ণের সর্বধর্মসমন্বয়ের মূল কথা ছিল সকল ধর্মই সত্য। ‘যত মত, তত পথ’-এর আদর্শ প্রচার করে তিনি বলেন যে, সাধনার সব পথই সত্য ও সঠিক। বৈষ্ণব, শাক্ত, হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান প্রভৃতি সব ধর্মের সাধনার মাধ্যমেই ঈশ্বরকে লাভ করা সম্ভব।
১১৯. নব্য বেদান্তবাদ কী? অথবা, নব্য বেদান্ত কী?
উত্তর:- স্বামী বিবেকানন্দ প্রাচীন অদ্বৈত বেদান্ত দর্শনের নিজস্ব ব্যাখ্যা দেন যা নব্য বেদান্তবাদ বা নব্য বেদান্ত নামে পরিচিত। এই ব্যাখ্যায় তিনি বলেন যে, সর্বত্রই ব্রহ্মের উপস্থিতি রয়েছে। আপামর মানুষের সেবা করাই হল ব্রহ্মের সেবা করা।
১২০. কে, কবে রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন? এর উদ্দেশ্য কী ছিল?
উত্তর:- স্বামী বিবেকানন্দ ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন।
রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল সারা বিশ্বে মানবকল্যাণের আদর্শ ছড়িয়ে দেওয়া।
১২১. উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরণের অন্যতম অবদানগুলি কী ছিল?
উত্তর:- উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরণের অন্যতম অবদানগুলি হল সতীদাহ প্রথার অবসান, বিধবাবিবাহের প্রচলন, ধর্মীয় উদারতা, পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তার, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অগ্রগতি, বিভিন্ন সভাসমিতি প্রতিষ্ঠা, সংবাদপত্র প্রকাশ প্রভৃতি।
১২২. লালন ফকির কে ছিলেন?
উত্তর:- লালন ফকির ছিলেন উনিশ শতকের বাংলার একজন আধ্যাত্মিক বাউলসাধক। তিনি নিজ সাধনবলে হিন্দু ও মুসলিম ধর্মশাস্ত্র সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করেন। লালন মানবজীবনের আধ্যাত্মিক রহস্য নিয়ে প্রায় ২ হাজার বাউলগান রচনা করেছিলেন। তিনি ধর্মসমন্বয়ের অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন।
১২৩. লালন ফকির কবে, কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর:- কেউ কেউ মনে করেন, লালন ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দে যশোহর জেলার ঝিনাইদহ মহকুমার হরিশপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। আবার, কারও মতে, তিনি কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালি থানার ভাড়ারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
১২৪. ‘নব্যবঙ্গ গোষ্ঠী’ কাদের বলা হত? অথবা, নব্যবঙ্গ আন্দোলন বলতে কী বোঝ?
উত্তর:- উনিশ শতকের প্রথমার্ধে হিন্দু কলেজের অধ্যাপক হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও-র (১৮০৯-৩১ খ্রি.) নেতৃত্বে তাঁর অনুগামী একদল যুবক বাংলায় সমাজসংস্কারের উদ্দেশ্যে এক চরমপন্থী আন্দোলনের সূচনা করেন। ডিরোজিও ও তাঁর অনুগামী ছাত্রমণ্ডলী ‘নব্যবঙ্গ গোষ্ঠী’ নামে এবং তাঁদের উদ্যোগে পরিচালিত আন্দোলন ‘নব্যবঙ্গ আন্দোলন’ নামে পরিচিত হয়।
১২৫. ডিরোজিও তাঁর ছাত্রদের কীভাবে যুক্তিবাদী করে তোলেন?
উত্তর:- ডিরোজিও তাঁর ছাত্রদের বিনা বিচারে কিছু মেনে না নেওয়ার পরামর্শ দেন। তাঁর প্রভাবে তাঁর ছাত্ররা লক, হিউম, টম পেইন, রুশো, ভলতেয়ার প্রমুখ দার্শনিকের মতবাদ ও ফরাসি বিপ্লবের চিন্তাধারার সঙ্গে পরিচিত হয়। ছাত্রদের মধ্যে স্বাধীন চিন্তা ও যুক্তিবাদের বিকাশ ঘটানোর উদ্দেশ্যে তিনি অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন (১৮২৭ খ্রি.) প্রতিষ্ঠা করেন।
১২৬. ডিরোজিও-র নেতৃত্বে নব্যবঙ্গদের উগ্র কার্যকলাপের কী প্রতিক্রিয়া হয়?
উত্তর:- ডিরোজিও-র নেতৃত্বে নব্যবঙ্গদের উগ্র কার্যকলাপের ফলে হিন্দুসমাজে প্রবল আলোড়ন সৃষ্টি হয়। অভিভাবকরা তাঁদের সন্তানদের হিন্দু কলেজ থেকে ছাড়িয়ে অন্যত্র নিয়ে যেতে থাকেন। ফলে হিন্দু কলেজের কর্তৃপক্ষ ডিরোজিওকে কলেজ থেকে বিতাড়িত করে।
১২৭. কে, কবে, কেন ‘অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন’ প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর:- হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও ১৮২৭ খ্রিস্টাব্দে অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠা করেন। হিন্দুধর্মের অস্পৃশ্যতা, জাতিভেদ প্রথা সতীদাহ প্রথা, মূর্তিপূজা প্রভৃতি কুসংস্কারের বিরুদ্ধে নিজেদের মতামত ব্যক্ত করার উদ্দেশ্যে ডিরোজিও অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠা করেন।
১২৮. ‘নব্যবঙ্গ গোষ্ঠী’ কীসের দাবিতে আন্দোলন চালায়?
উত্তর:- ‘নব্যবঙ্গ গোষ্ঠী’ হিন্দুসমাজের পৌত্তলিকতা, জাতিভেদ প্রথা, বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, সতীদাহ প্রথা প্রভৃতির বিরুদ্ধে এবং নারীশিক্ষা, নারীস্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা প্রভৃতির সপক্ষে আন্দোলন চালায়।
১২৯. ডিরোজিও-র অনুগামী ছাত্র অর্থাৎ ‘নব্যবঙ্গ গোষ্ঠী’র কয়েকজন সদস্যের নাম লেখো।
উত্তর:- ডিরোজিও-র অনুগামী ছাত্র অর্থাৎ ‘নব্যবঙ্গ গোষ্ঠী’র উল্লেখযোগ্য কয়েকজন সদস্য ছিলেন রামগোপাল ঘোষ, রামতনু লাহিড়ী, কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়, রসিককৃষ্ণ মল্লিক, প্যারীচাঁদ মিত্র, দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায় প্রমুখ।
১৩০. সমাজসংস্কারে নব্যবঙ্গদের ভূমিকা কী ছিল?
উত্তর:- ডিরোজিও-র অনুগামীরা নব্যবঙ্গ নামে পরিচিত। এরা হিন্দু সমাজের পৌত্তলিকতা, জাতিভেদ প্রথা, বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, সতীদাহ প্রথা প্রভৃতির বিরুদ্ধে এবং নারীশিক্ষা, নারীস্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা প্রভৃতির সপক্ষে আন্দোলন চালায়। এরা সমাজে যুক্তিবাদেরও প্রসার ঘটায়।
১৩১. ডিরোজিও-র মৃত্যুর পর তাঁর অনুগামী নব্যবঙ্গ গোষ্ঠীর সদস্যদের কয়েকটি উদ্যোগ উল্লেখ করো।
উত্তর:- ডিরোজিও-র মৃত্যুর পরও তাঁর অনুগামী ছাত্রমণ্ডলী বিভিন্ন সংস্কারকার্য চালিয়ে যান। যেমন – তাঁদের উদ্যোগে ‘জ্ঞানান্বেষণ’, ‘এনকোয়ারার’, ‘বেঙ্গল স্পেকটেটর’, ‘হিন্দু পাইওনিয়ার’ প্রভৃতি পত্রিকা প্রকাশিত হয়। তাঁরা সাধারণ জ্ঞানোপার্জিকা সভা, বেঙ্গল ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি (১৮৪৩ খ্রি.) প্রভৃতি প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁরা নারীনির্যাতন, নারী-পুরুষের অসাম্য, দাসপ্রথা, সংবাদপত্রের ওপর বিধিনিষেধ প্রভৃতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হন।
১৩২. পঞ্চদশ শতকে ইউরোপের সঙ্গে উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরণের দুটি পার্থক্য উল্লেখ করো।
উত্তর:- উনিশ শতকে বাংলার নবজাগরণের প্রধান ধারাগুলি ছিল প্রাচ্য-পুনরুজ্জীবনবাদী ধারা, পাশ্চাত্য যুক্তিবাদী ধারা, সমন্বয় ধারা।
১৩৩. উনিশ শতকে বাংলার ‘নবজাগরণ’ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর:- উনিশ শতকের প্রথমদিকে বাংলা দেশে আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসার ঘটলে বাংলার সমাজ, সংস্কৃতি, ধর্ম প্রভৃতি সর্বক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়ে। এর প্রভাবে বাঙালির ভাবজগতে এক ব্যাপক অগ্রগতি ঘটে বা বৌদ্ধিক আন্দোলন শুরু হয়। এই অগ্রগতি উনিশ শতকে বাংলার ‘নবজাগরণ’ নামে পরিচিত।
আরোও পড়ুন
- দশম শ্রেণী (প্রথম অধ্যায়): ইতিহাসের ধারণা হতে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
- দশম শ্রেণী (তৃতীয় অধ্যায়): প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ-বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
- দশম শ্রেণী (চতুর্থ অধ্যায়): সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা-বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
- দশম শ্রেণী (পঞ্চম অধ্যায়): বিকল্প চিন্তা ও উদ্দোগ হতে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
- দশম শ্রেণী (ষষ্ঠ অধ্যায়): কৃষক, শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন-বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা হতে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
- দশম শ্রেণী (সপ্তম অধ্যায়): নারী, ছাত্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আন্দোলন হতে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
- দশম শ্রেণী (অষ্টম অধ্যায়): উত্তর-ঔপনিবেশিক ভারত হতে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর