২০২৫ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ইতিহাস বিষয়ে সম্পূর্ণ সিলেবাসের সাজেশন্ ভিত্তিক পিডিএফ নোটস্ নেওয়ার জন্য যোগাযোগ করুণ (দাম প্রতি ক্লাস ৯৯ টাকা)।

👉Chat on WhatsApp

ছাপাখানায় মুদ্রিত বইপত্রের মাধ্যমে বাংলায় কীভাবে শিক্ষার প্রসার ঘটেছিল

দশম শ্রেণীর ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায়- বিকল্প চিন্তা ও উদ্দোগ হতে ছাপাখানায় মুদ্রিত বইপত্রের মাধ্যমে বাংলায় কীভাবে শিক্ষার প্রসার ঘটেছিল তা আলোচনা করা হল।

Table of Contents

ছাপাখানায় মুদ্রিত বইপত্রের মাধ্যমে বাংলায় কীভাবে শিক্ষার প্রসার ঘটেছিল

প্রশ্ন:- ছাপাখানায় মুদ্রিত বইপত্রের মাধ্যমে বাংলায় কীভাবে শিক্ষার প্রসার ঘটেছিল?

ভূমিকা :- অষ্টাদশ শতকের শেষভাগে বাংলায় আধুনিক ছাপাখানার প্রতিষ্ঠা হয় এবং ঊনবিংশ শতকের প্রথমভাগে ছাপাখানার ব্যাপক প্রসার ঘটে। এইসব ছাপাখানায় শিক্ষার্থীদের উপযোগী বহু বইপত্র ছাপা হয়ে তাদের হাতে পৌঁছে যায়। ফলে বাংলায় শিক্ষার যথেষ্ট প্রসার ঘটতে শুরু করে।

প্রেক্ষাপট

বঙ্গদেশে আধুনিক ছাপাখানা প্রতিষ্ঠার আগে হাতে লেখা পুথিপত্রের সাহায্যে শিক্ষাগ্রহণের কাজ চলত। এই বইয়ের মূল্য খুব বেশি হত বলে নিম্নবিত্ত দরিদ্র সমাজে শিক্ষার প্রসারের বিশেষ সুযোগ ছিল না। তাই এই সময় বাংলার শিক্ষাদান মূলত সমাজের উচ্চবিত্তদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। তাছাড়া এই সময় শিক্ষা বলতে মূলত ছিল দীর্ঘ আরবি বা সংস্কৃত কবিতা বা শাস্ত্রের বক্তব্য মুখস্থ করা। এককথায়, ছাপা বইপত্র বাজারে আসার আগে বাংলায় শিক্ষার প্রসার ছিল খুবই সীমাবদ্ধ।

ছাপা বইয়ের সহজলভ্যতা

ঊনবিংশ শতকের শুরু থেকে ছাপাখানায় ছাপা প্রচুর সংখ্যক সুদৃশ্য বইপত্র বাজারে আসতে শুরু করে। একদিকে এইসব মুদ্রিত বইয়ের জোগান ছিল বিপুল, অন্যদিকে এগুলি দামেও ছিল সস্তা। ফলে দরিদ্র, সাধারণ শিক্ষার্থী ও পাঠকদের হাতে সহজেই ছাপা বইপত্র পৌঁছে যায়।

মাতৃভাষায় ছাপা বই

বাংলার ছাপাখানাগুলি থেকে মাতৃভাষা বাংলায় ছাপা প্রচুর বইপত্র বাজারে আসতে শুরু করলে শিক্ষার্থীরা নিজের মাতৃভাষা বাংলায় শিক্ষাগ্রহণের সুযোগ পায়। ফলে বাংলায় ব্যাপক শিক্ষাবিস্তার শুরু হয়।

শ্রীরামপুর ছাপাখানার অবদান

খ্রিস্টান মিশনারি উইলিয়াম কেরি ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে শ্রীরামপুরে আধুনিক ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করলে এদেশে শিক্ষার প্রসারে ভীষণ সুবিধা হয়। এশিয়ার তৎকালীন সর্ববৃহৎ এই ছাপাখানা থেকে বাংলাসহ বিভিন্ন ভারতীয় ভাষায় বাইবেল, রামায়ণ, মহাভারত, বিভিন্ন প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্য প্রভৃতির অনুবাদ, হিতোপদেশ, বিভিন্ন গবেষণামূলক প্রবন্ধ, রামরাম বসুর ‘প্রতাপাদিত্য চরিত্র’ প্রভৃতি প্রকাশিত হয়। ফোর্ট উইলিয়াম কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্য বিপুল সংখ্যক পাঠ্যপুস্তক এই ছাপাখানায় মুদ্রিত হয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে যায়।

পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ

ছাপাখানাগুলির মুদ্রিত বইপত্র বিনামূল্যেছাত্রছাত্রীদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে ক্যালকাটা স্কুল সোসাইটি স্থাপিত হলে তার অধীনে বেশ কয়েকটি স্কুল গড়ে ওঠে। এইসব প্রতিষ্ঠান শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যে পাঠ্যপুস্তকের হাজার হাজার কপি শ্রীরামপুরের ছাপাখানায় ছাপায়। ফলে শহর ও গ্রামের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের যেসব সাধারণ মানুষ বিদ্যাশিক্ষা থেকে বঞ্চিত ছিল তাদের হাতে ছাপাখানায় মুদ্রিত সুন্দর ঝকঝকে পাঠ্যবই পৌঁছে যায়।

শিশুশিক্ষার জন্য বই প্রকাশ

বাংলার শিশুদের মধ্যে শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যে ছাপাখানাগুলিতে প্রচুর সংখ্যক শিশুশিক্ষা বিষয়ক বইপত্র ছাপা হতে থাকে। এই সব মুদ্রিত বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল মদনমোহন তর্কালংকারের ‘শিশুশিক্ষা, বিদ্যাসাগরের ‘বর্ণপরিচয়’, রামসুন্দর বসাকের ‘বাল্যশিক্ষা’ প্রভৃতি। বিদ্যাসাগরের জীবদ্দশাতেই ‘বর্ণপরিচয়’-এর মোট ১৫২টি সংস্করণ প্রকাশিত হয় এবং বইটির ৩৫ লক্ষেরও বেশি কপি পাঠকদের কাছে পৌঁছে যায়।

অন্যান্য পাঠ্যবই প্রকাশ

বিদ্যালয় স্তরের বিভিন্ন বিষয়ের প্রচুরপাঠ্যবই ছাপাখানাগুলিতে মুদ্রিত হয়ে সস্তায় বাংলার সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের হাতে পৌঁছে যায়। এরূপ কিছু উল্লেখযোগ্য পাঠ্যবই ছিল গোবিন্দপ্রসাদ দাসের ‘ব্যাকরণ সার’, প্রাণলাল চক্রবর্তীর ‘অঙ্কবোধ’, কেদারেশ্বর চক্রবর্তীর ‘বাঙ্গালার ইতিহাস’, আনন্দকিশোর সেনের ‘অর্থের সার্থকতা’দীননাথ সেনের ‘বাংলাদেশ ও আসামের সংক্ষিপ্ত বিবরণ’ প্রভৃতি। এইসব বইপত্র বাংলার গ্রামগঞ্জে শিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সংবাদপত্রের ভূমিকা

ঊনবিংশ শতকে বাংলার ছাপাখানাগুলিথেকে বেশ কয়েকটি সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়ে বাংলায় গণশিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এইসব সংবাদপত্রের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল মার্শম্যানের দিগদর্শন পত্রিকা ও সমাচার দর্পণ পত্রিকা, গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্যের বেঙ্গল গেজেট, রামমোহন রায়ের সম্বাদ কৌমুদী পত্রিকা, ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের সম্বাদ প্রভাকর, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা প্রভৃতি।

উপসংহার :- শিক্ষার বিকাশ ও বিস্তারে ছাপাখানার ভূমিকা অনস্বীকার্য। ছাপাখানার অগ্রগতির সাথে সাথে শিক্ষার অগ্রগতি সমান্তরালভাবে কাজ করেছিল এবং বাণিজ্যেরও বিকাশ ঘটেছিল।

দশম শ্রেণীর ইতিহাস (পঞ্চম অধ্যায়) বিকল্প চিন্তা ও উদ্দোগ হতে অন্যান্য সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস পঞ্চম অধ্যায়- বিকল্প চিন্তা ও উদ্দোগ হতে অন্যান্য সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তরগুলি দেওয়া হল।

বিকল্প চিন্তা ও উদ্দোগ

(উনিশ শতকের মধ্যভাগ থেকে বিশ শতকের প্রথম ভাগ পর্যন্ত): বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা

৫.১. বাংলায় ছাপাখানার বিকাশ

(৫.১.ক.) ছাপা বইয়ের সঙ্গে শিক্ষাবিস্তারের সম্বন্ধ
(৫.১.খ.) ছাপাখানার ব্যাবসায়িক উদ্যোগ
(৫.১.গ.) উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ও ইউ. এন. রায় অ্যান্ড সন্স

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য ঘটনাবলির সময়কাল উল্লেখ-সহ সারণি)

৫.২. বাংলায় বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার বিকাশ

(৫.২.ক.) ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অফ সায়েন্স
(৫.২.খ.) কলকাতা বিজ্ঞান কলেজ
(৫.২.গ.) বসুবিজ্ঞান মন্দির
(৫.২.ঘ.) জাতীয় শিক্ষা পরিষদ
(৫.২.ঙ.) বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য ঘটনাবলির সময়কাল উল্লেখ-সহ সারণি)

৫.৩. ঔপনিবেশিক শিক্ষার ধারণার সমালোচনা

(৫.৩.ক.) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও শান্তিনিকেতন ভাবনা
(৫.৩.খ.) বিশ্বভারতীর উদ্যোগ
(৫.৩.গ.) প্রকৃতি, মানুষ ও শিক্ষার সমন্বয় বিষয়ে রবীন্দ্রনাথের চিন্তা

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য ঘটনাবলির সময়কাল উল্লেখসহ সারণি)

Leave a Comment