গ্রিসের নগররাষ্ট্র এথেন্সের সমাজব্যবস্থার পরিচয় বা কাঠামো বর্ণনা প্রসঙ্গে এথেন্সে শ্রেণীবিভক্ত সমাজ, এথেন্সের সমাজব্যবস্থায় নাগরিক, এথেন্সের সমাজব্যবস্থায় মেটিক বা বিদেশী ও এথেন্সের সমাজব্যবস্থায় দাসদের সম্পর্কে জানব।
প্রাচীন গ্রিসের নগররাষ্ট্র এথেন্সের সমাজব্যবস্থার পরিচয় বা কাঠামো বর্ণনা
বিষয় | ইতিহাস |
বিশ্ববিদ্যালয় | বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয় |
আর্টস | বি.এ. জেনারেল |
সেমিস্টার | দ্বিতীয় |
প্রশ্ন | এথেন্সের সমাজব্যবস্থার পরিচয় বা কাঠামো বর্ণনা কর। |
প্রশ্নমান | ৫ |
আধুনিক রাষ্ট্রদর্শনের ইতিহাসে প্রাচীন গ্রীসের সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থা সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান সমাজ ও সভ্যতার উৎপত্তি, ভিত্তি ও বিকাশ জানতে হলে প্রাচীন গ্রীসের রাজনৈতিক ও সামাজিক ঐতিহ্য সম্পর্কে সঠিকভাবে জানা প্রয়োজন। গ্রীক নগর রাষ্ট্রগুলির রাজনৈতিক ব্যবস্থা ভিন্ন ভিন্ন হলেও তাদের সামাজিক স্তর বিন্যাস বা বিভাজন ছিল প্রায় অভিন্ন। সামাজিক শ্রেণী গুলির নামকরণের ক্ষেত্রে ভিন্নতা থাকলেও প্রকৃতিগত পার্থক্য তেমন ছিল না।
এথেন্সের সমাজব্যবস্থা তিনটি শ্রেণীতে বিভক্ত ছিল। এই তিনটি শ্রেণী রাজনৈতিক ও আইনগতভাবে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ছিল। এই শ্রেণি গুলি হল নিম্নরূপ। –
(ক) নাগরিক :- এথেন্সের জনসমাজের সর্বোচ্চ স্তরে ছিল নাগরিকরা অর্থাৎ যারা নগরের সদস্য হওয়ার অধিকারী এবং নগরের রাজনীতিতে যারা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে পারত। তারা জন্মসূত্রেই নাগরিক হওয়ার সুযোগ লাভ করত। কারণ তাদের পিতামাতা যে নগরের নাগরিক সন্তানরাও সেই নগরের নাগরিক বলে গণ্য হত। নাগরিকতার অর্থই হল নগরের সদস্যপদ লাভ। নগরের সদস্যপদ লাভের ন্যূনতম কাজ স্কুল শহরের সভায় উপস্থিত থাকা। এই নাগরিকরা আবার দুটি শ্রেণীতে বিভক্ত ছিল – নোবলস এবং কমন্স। নোবলসরা নিজেদের উচ্চ বংশীয় বলে মনে করত এবং রাষ্ট্র শাসনের ভার তাদের উপরই ছিল। এরা সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার ভোগ করতো।
(খ) মেটিক বা বিদেশি :- প্রাচীন গ্রীসের সমাজব্যবস্থায় দ্বিতীয় স্তরে ছিল মেটিক বা বিদেশিরা। এরা দাসদের উপরের স্তরের। এথেন্সের মতো বাণিজ্য প্রধান নগরে তাদের সংখ্যা ছিল অত্যন্ত বেশি। দাসদের মতো বিদেশিদেরও নগরের রাজনৈতিক কাজে অংশগ্রহণের কোনো সুযোগ ছিল না। তবে তারা অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকার ভোগ করত।
(গ) দাস :- সমাজের সর্বনিম্নস্তরে ছিল দাসরা। এই দাসদের সংখ্যা ছিল প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। দাস প্রথা প্রাচীন গ্রিসে সর্বজনীন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছিল। দাসরা সমাজের কোনো প্রকার সামাজিক বা রাজনৈতিক অধিকার ভোগ করতে পারত না। সামাজিক ও রাজনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণার্থে এথেন্সের জনগণ কোনো প্রকার প্রচেষ্টা চালায় নি, বরং সামাজিক ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য তারা দাসপ্রথাকে অপরিহার্য মনে করত।
পরিশেষে বলা যায় যে, প্রাচীন গ্রীসের দুটি নগররাষ্ট্রের মধ্যে এথেন্সের সমাজব্যবস্থা ছিল মূলত দাস নির্ভর। অভিজাত শ্রেণীর লোকেরা তাদের দৈনন্দিন জীবনে অতিমাত্রায় দাস নির্ভর ছিল। তাদের প্রয়োজনীয় সকল কাজ দাসদের মাধ্যমেই সম্পাদিত হত। মূলত দাস ব্যবস্থা ছিল সর্বজনীন ও সমাজ ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ। যার বেশি সংখ্যক দাস ছিল সেই সমাজে বেশি সম্মানিত বলে বিবেচিত হত।
(FAQ) এথেন্সের সমাজব্যবস্থার পরিচয় বা কাঠামো বর্ণনা সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
১. এথেন্সের সমাজ কয়টি শ্রেণীতে বিভক্ত ছিল?
তিনটি শ্রেণীতে।
২. এথেন্সের সমাজে বিদেশীরা কী নামে পরিচিত ছিল?
মেটিক।
৩. এথেন্সের সমাজে সর্বনিম্ন স্তরে করা ছিল?
দাসরা।