এথেনীয় গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য আলোচনা

গ্রিসের নগররাষ্ট্র এথেন্স, এথেনীয় গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য আলোচনা, এথেনীয় গণতন্ত্রের মহান যুগ, এথেনীয় গণতন্ত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র, এথেনীয় গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য লটারীর মাধ্যমে নির্বাচন, এথেনীয় গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য স্বাধীনতা, এথেনীয় গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য জনগণের শাসন সম্পর্কে জানব।

প্রাচীন গ্রিসের এথেনীয় গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য আলোচনা

বিষয় ইতিহাস
বিশ্ববিদ্যালয় বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়
আর্টস বি.এ. জেনারেল
সেমিস্টারদ্বিতীয়
প্রশ্ন এথেনীয় গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর।
প্রশ্নমান
এথেনীয় গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর।

অধ্যাপক Hill Claster তাঁর ‘Athenian Democracy’ গ্রন্থে মন্তব্য করেছেন যে, গ্রীসের বিভিন্ন স্থানে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলির উপস্থিতি দেখা গেলেও প্রথম পরিণত গণতন্ত্র গড়ে তোলার একক কৃতিত্ব এথেন্সের। এদিক থেকে দেখলে এথেন্স শুধু গ্রীসের বিদ্যালয় নয় আধুনিক ইউরোপেরও বিদ্যালয়। স্বাস্তবিকভাবে খ্রিস্ট পূর্ব পঞ্চম শতক ছিল এথেনীয় গণতন্ত্রের মহান যুগ। আধুনিক গণতন্ত্রের সংজ্ঞার আলোকে বিচার করলে এথেনীয় গণতন্ত্রকে পূর্ণ গণতন্ত্র বলা যায় না। এথেনীয় গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য গুলি হল নিম্নরূপ। –

প্রথমত, এথেনীয় গণতন্ত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র। এই গণতন্ত্রে নাগরিকরা সরাসরি রাষ্ট্র পরিচালনায় সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশ নিতে পারত।

দ্বিতীয়ত, লটারীর মাধ্যমে নির্বাচন ছিল এথেনীয় গণতন্ত্রের আর একটি বৈশিষ্ট্য। শাসন কর্তারা নির্বাচিত হতেন না। একটা নির্দিষ্ট সময়ে লটারির মাধ্যমে তাঁদের বাছাই করে নেওয়া হত। তাই রাষ্ট্র পরিচালনায় কোন না কোন সময় সবাই অংশগ্রহণ করতে পারত।

তৃতীয়ত, দরিদ্র জনগণ যাতে রাষ্ট্র পরিচালনায় অংশ নিতে পারে সেজন্য তাদের ভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তাঁরা দৈনিক মজুরিতে কাজ করত। এই ভাতা প্রদানের মাধ্যমে তাদের মজুরিতে ক্ষতিপূরণ করা হত।

চতুর্থত, স্বাধীনতা ছিল এথেনীয় গণতন্ত্রের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য। নাগরিক, বিদেশী, ক্রীতদাস, নারী, এমন কি জীবজন্তুরাও বাক স্বাধীনতা পেয়েছিল। হয়তো পূর্ণ স্বাধীনতা ছিল না। রাজনৈতিক জীবনের মত দৈনন্দিন জীবনেও আমরা স্বাধীন ও মুক্ত।

পঞ্চমত, রাষ্ট্রীয় নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে গণবিতর্ক ছিল এথেনীয় গণতন্ত্রের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য। একসেলিয়ার অধিবেশনে কোন প্রস্তাবের পক্ষে-বিপক্ষে বিতর্ক হত। পরে উপস্থিত নাগরিকদের সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে ঐ প্রস্তাব গৃহীত হত।

ষষ্ঠত, এথেনীয় গণতন্ত্র হল ডেমোক্রেসি অর্থাৎ জনগণের শাসন। গ্রীক শব্দ ‘ডেমক্র’ ও ক্রাটোস থেকে ইংরেজী ‘ডেমোক্রেসি’ শব্দটি এসেছে। ‘ডেমক্র’ বলতে বোঝায় কোনো পলিসের সমগ্র নাগরিক বা জনতা বিশেষ করে নিচুতলার মানুষ। আর ‘ক্রাটোস’ বলতে বোঝাত শাসন। এথেনীয় গণতন্ত্র বলতে বোঝাত জনগণের শাসন। এথেনীয় গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল Law of Ostrcism বা নির্বাসন প্রথা। এথেনীয় গণতন্ত্রের নিরাপত্তার জন্য ক্লেইস্থিনিস এই প্রথা প্রবর্তন প্রথা।

মুষ্টিমেয়তন্ত্রের সমর্থক যেমন সক্রেটিস, প্লেটো, এরিস্টটল, জেনোফোন প্রমুখ এথেনীয় গণতন্ত্রকে নিন্দা করেছেন। তবে একথা ঠিক যে সেই সময় মানুষের রাজনীতির জ্ঞান স্পষ্ট ছিল না। এথেনীয় গণতন্ত্রে ত্রুটি বিচ্যুতি অনেক তবুও স্বীকার করতে হয় যে, এথেন্স যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল রাষ্টতত্ত্বের ইতিহাসে তার অবদান অপরিসীম।

(FAQ) এথেনীয় গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য আলোচনা সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. এথেনীয় গণতন্ত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য কী?

প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র।

২. এথেনীয় গণতন্ত্রে নির্বাচন কিভাবে হয়?

লটারির মাধ্যমে।

৩. এথেনীয় গণতন্ত্রের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য কী ছিল?

স্বাধীনতা।

Leave a Comment