গ্রীক ট্রাজেডির বৈশিষ্ট্য আলোচনা

খ্রিস্টপূর্ব যুগে গ্রীক ট্রাজেডির বৈশিষ্ট্য আলোচনা প্রসঙ্গে জীবনের পুনরাগম্ভীর বেদনার কথা ট্রাজেডি, গ্রীক ট্রাজেডি পুরাণ নির্ভর, গ্রীক ট্রাজেডির ভাষা ও কাহিনি সরল, গ্রীক ট্রাজেডির চরিত্র সম্পর্কে জানব।

প্রাচীন গ্রীক ট্রাজেডির বৈশিষ্ট্য আলোচনা

বিষয় ইতিহাস
বিশ্ববিদ্যালয় বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়
আর্টস বি.এ. জেনারেল
সেমিস্টার দ্বিতীয়
প্রশ্ন গ্রীক ট্রাজেডির বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর।
প্রশ্নমান
গ্রীক ট্রাজেডির বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর।

ট্রাজেডি হল জীবনের পুনরাগম্ভীর বেদনার কথা। স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে সেগুলির উপস্থাপনা প্রয়োজন যার ভাষা হবে ছন্দোবদ্ধ। উপস্থাপনায় সরাসরি উক্তি ও প্রত্যুক্তি দিয়ে সাজানো হবে। এমনভাবে ঘটনা ও পরিস্থিতির পরিকল্পনার আশ্রয়ে রূপ দিতে হবে যা ভয় ও করণার উদ্রেক করতে সমর্থ হয়। এরিস্টটল তাঁর ‘পোয়েটিক্স’ গ্রন্থে ট্রাজেডির স্বরূপ বর্ণনা করতে গিয়ে উল্লেখ করেন যে একটি গম্ভীর সম্পূর্ণ ও বিশেষ আয়তন বিশিষ্ট ক্রিয়ার অনুকরণ হল ট্রাজেডি। এর বৈশিষ্ট্য গুলি হল নিম্নরূপ। –

(ক) গ্রীক ট্রাজেডি পুরাণ নির্ভর, তাই ধর্মীয় ভাবনা এখানে পরিষ্কার। নাট্যকাররা নিজের মতের প্রেক্ষিতে মূল কাঠামো বজায় রেখে পুরাণ কাহিনীকে সাজান।

(খ) গ্রীক ট্রাজেডির ভাষা ও কাহিনি সরল। সাধারণত ধর্ম, রাষ্ট্র ও পরিবারশ্রয়ী কাহিনী নিয়ে গ্রীক ট্রাজেডি তৈরী হত। ট্রাজেজিতে তিনটি ঐক্য বিধি যথা স্থান, কাল ও নায়কের কর্মগত দিকটি মেনে চলা হত। গ্রীক মঞ্চে যবনিকার রীতি না থাকায় একই মঞ্চে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত একই পটভূমিকায় অভিনয় সম্পন্ন হত।

(গ) ট্রাজেডির সংলাপ ছিল পদ্যবদ্ধ এবং জীবনমুখী। কোরাসের ভূমিকা ছিল নাটকের বিষয়গত দিক। ট্রাজেডির বিবর্তনের ক্ষেত্রে কোরাসের পরিবর্তনও সুপষ্ট। ভূমিকায় পরিবর্তন করা সম্ভব হয়েছে কিন্তু কোরাস বর্জন কখনো সম্ভব হয়নি। 

(ঘ) গ্রীক ট্রাজেডিতে একটি নটের রীতি ছিল। দ্বিতীয় নট সৃষ্টির উদ্দেশ্য ছিল নাটকে রসের ভিত্তিতে অতিব্যক্তি আনা। তৃতীয় নটের পরিকল্পনা হয়েছিল নাট্যক্রিয়া পাত্র-পাত্রীদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন, দৃশ্যান্তরের বিরতি কোরাস নিয়ন্ত্রণ করত।

(ঙ) গ্রীক ট্রাজেডিতে চরিত্রগুলি রাজা বা রানী, বীর যোদ্ধা ও উচ্চবংশস্থ ব্যক্তিদের প্রধান ভূমিকায় অবতীর্ণ করা হত। মোটকথা প্রধান চরিত্রের মৃত্যুতে দর্শকদের চক্ষু অশ্রুসিক্ত হত।

পিটার লেভি ট্রাজেডি সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেছেন যে, গ্রীক ট্রাজেডির গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল যে, এটি হোমারের বিকল্প। ট্রাজেডির অনেক কাহিনী হোমার থেকে সংগৃহীত। শ্লেষ, বিদ্রুপ, ন্যায় বিচারের প্রতি দুর্বলতা, অন্তর্নিহিত কাঠামো সব কিছুই হোমারের কাছ থেকে নেওয়া। ইস্কাইলাস বলেছিলেন, ‘We are eating crumbs from the great table of Homer.”

(FAQ) গ্রীক ট্রাজেডির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. কে, কোন গ্রন্থে ট্রাজেডির স্বরূপ বর্ণনা করেছেন?

এরিস্টটল তাঁর ‘পোয়েটিক্স’ গ্রন্থে।

২. ট্রাজেডির সংলাপ কেমন ছিল?

পদ্যবদ্ধ এবং জীবনমুখী।

৩. গ্রীক ট্রাজেডিতে প্রধান চরিত্র কারা ছিল?

রাজা বা রানী, বীর যোদ্ধা ও উচ্চবংশস্থ ব্যক্তি।

Leave a Comment