নবম শ্রেণীর ইতিহাস সপ্তম অধ্যায় থেকে ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের গঠনতন্ত্র বা সংগঠন সম্পর্কে আলোচনা। নবম শ্রেণীর ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়টি হল জাতিসংঘ এবং সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ।
Class 9 History Chapter 7 Long Question Answer (MARKS-8) in Bengali.
নবম শ্রেণীর ইতিহাস সপ্তম অধ্যায় হতে ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন (জাতিসংঘ এবং সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ)
নবম শ্রেণী (সপ্তম অধ্যায়) জাতিসংঘ এবং সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ থেকে ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন
শ্রেণী | নবম |
অধ্যায় | সপ্তম অধ্যায় |
Question Type | ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন |
Marks | 8 |
নবম শ্রেণীর ইতিহাস সপ্তম অধ্যায় থেকে ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন
প্রশ্ন:- সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের গঠনতন্ত্র বা সংগঠন সম্পর্কে আলোচনা করো।
উত্তর:- ভূমিকা :- আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ বা ইউনাইটেড নেশন্স অর্গানাইজেশন-এর প্রতিষ্ঠা হয়। কার্যাবলি পরিচালনার জন্য সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের প্রধান ৬টি শাখা সংগঠন রয়েছে।
সাধারণ সভা
সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সকল সদস্য- রাষ্ট্রকে নিয়ে ‘সাধারণ সভা’ গঠিত। ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে ৫১টি সদস্য-রাষ্ট্র নিয়ে এই সভার পথচলা শুরু হয়। ২০১৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এর সদস্যসংখ্যা ছিল ১৯৩। সাধারণত প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসে সাধারণ সভার অধিবেশন বসে। ‘সাধারণ’ বিষয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের ভোটে এবং ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বিষয়ে ২/৩ অংশ সদস্যদের ভোটে সাধারণ সভার কোনো সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
নিরাপত্তা পরিষদ
জাতিপুঞ্জের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা হল নিরাপত্তা পরিষদ। বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা করাই এই পরিষদের প্রধান কাজ। এই পরিষদে প্রথমে পাঁচটি স্থায়ী ও ছয়টি অস্থায়ী সদস্য নিয়ে মোট এগারোটি সদস্য ছিল। পরে অস্থায়ী সদস্যসংখ্যা ১০ করা হলে মোট সদস্যসংখ্যা হয় ১৫। স্থায়ী সদস্য-রাষ্ট্রগুলি হল আমেরিকা, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, রাশিয়া ও চিন।
অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ
জাতিপুঞ্জের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের প্রধান কাজ হল বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য প্রভৃতি বিষয়ের অগ্রগতি ঘটানো। এই পরিষদের বর্তমান সদস্যসংখ্যা হল ৫৪।
অছি পরিষদ
নিরাপত্তা পরিষদের সকল স্থায়ী সদস্য ও সাধারণ সভার দ্বারা নির্বাচিত কয়েকটি সদস্যকে নিয়ে অছি পরিষদ গঠিত হয়। অনুন্নত দেশগুলিক কয়েকটি বৃহৎ রাষ্ট্রের অধীনে রেখে তাদের আর্থসামাজিক ও অন্যান্য বিষয়ে উন্নতি ঘটিয়ে স্বাধীনতা লাভের উপযুক্ত করাই ছিল অছি পরিষদের লক্ষ্য। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, অছি পরিষদ বর্তমানে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় রয়েছে।
আন্তর্জাতিক বিচারালয়
আন্তর্জাতিক আইনের ব্যাখ্যাদান, আন্তর্জাতিক বিবাদের মীমাংসা প্রভৃতি উদ্দেশ্যে নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে জাতিপুঞ্জের আন্তর্জাতিক বিচারালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। এই বিচারালয়ের রায় মান্য করা সদস্যগুলির পক্ষে বাধ্যতামূলক।
সচিবালয়
জাতিপুঞ্জের অন্যান্য শাখা-সংগঠনের নির্ধারিত কাজগুলি সচিবালয় কর্তৃক সম্পন্ন হয়। একজন মহাসচিব ও আটজন সহকারী মহাসচিব নিয়ে জাতিপুঞ্জের সচিবালয়টি গঠিত। এর সদর দপ্তর নিউ ইয়র্কে অবস্থিত। এর প্রথম মহাসচিব ছিলেন ট্রিগভি লি।
উপসংহার :- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাতিসংঘের অস্তিত্ব লুপ্ত হলে যুদ্ধের পর বিশ্বের রাষ্ট্রনেতারা সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের গঠনতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অধিক যত্নবান হয়েছিলেন। হয়তো সেই কারণেই জাতিপুঞ্জ বহু ক্ষেত্রে সফলভাবে কাজ করতে পারছে। ফলস্বরূপ আজও পর্যন্ত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয় নি।