ক্রীড়াচর্চা বা খেলাধূলার অঙ্গনে এথেন্স প্রসঙ্গে খেলাধূলার অঙ্গনে এথেন্সের স্থান, খেলাধূলার অঙ্গনে এথেন্স, বিভিন্ন ধরনের ক্রীড়ানুষ্ঠান, এথেন্সে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন প্রকার ধর্মীয় অনুষ্ঠানে শারীর শিক্ষার বিস্তার সম্পর্কে জানব।
গ্রিসে খেলাধূলার অঙ্গনে এথেন্স সম্পর্কে আলোচনা
বিষয় | ইতিহাস |
বিশ্ববিদ্যালয় | বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয় |
আর্টস | বি.এ. জেনারেল |
সেমিস্টার | দ্বিতীয় |
প্রশ্ন | খেলাধূলার অঙ্গনে এথেন্স – আলোচনা করো। |
প্রশ্নমান | ১০ |
“এ্যাথলিট” শব্দটি একটি গ্রীক শব্দ এবং এর অর্থ হল প্রতিযোগিতা। গ্ৰীকবাসীর জীবনে সর্বত্রই ছিল প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগীরা জয়ের ইচ্ছাকে মাথায় রেখে প্রতিযোগিতায় অংশ নিত। তারা মনে করত প্রতিযোগিতায় জয়লাভ কোনো যুদ্ধ জয় অপেক্ষা কোনো অংশে কম নয়। আনন্দলাভ ও সুন্দর শরীর গঠন ছিল গ্রীকদের খেলাধূলার অন্যতম উদ্দেশ্য। ক্রীড়াঙ্গণকে গ্রীকরা শিক্ষাকেন্দ্র, শরীরচর্চা ও মানোবিকাশের এক পবিত্র অঞ্চল বলে বিবেচনা করত। ক্রীড়াঙ্গনে নিয়ম মানা ছিল অবশ্য পালনীয় কর্তব্য। মূলত পেশী ও মননের উৎকর্ষ সাধনই ছিল গ্রীক শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য। হোমারের সময় জিমনাস্টিক ও এ্যাথলেটিক্স খুব গুরুত্ব পেয়েছিল। ধর্মের উৎসব-এ এবং শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে জিমনাস্টিকের ব্যবস্থা হত। এই এ্যাথলেটিকের চর্চা কেবল রাজপরিবার ও অভিজাতদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। সাধারণ মানুষ ছিল দর্শক মাত্র।
যে কোনো প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন ধরনের ক্রীড়ানুষ্ঠান থাকত। এগুলির মধ্যে রথচালনা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। রথের মালিক দুটি ঘোড়া চালিত রথের সারথি হতেন। দ্বিতীয় প্রতিযোগিতা ছিল মুষ্টিযুদ্ধ। এই প্রতিযোগিতায় প্রতিযোগীরা কখনো বর্মাবৃত হতেন, আবার কখনো বর্ম ছাড়াই মুষ্টিযুদ্ধ করতে হত। তৃতীয় প্রতিযোগিতা ছিল দাঁড়িয়ে থেকে কুস্তি। এছাড়াও থাকত দৌড় প্রতিযোগিতা। সারিবদ্ধভাবে প্রতিযোগীরা দাঁড়িয়ে সংকেত পাবার সঙ্গে সঙ্গে দৌড় শুরু করে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাত। আর শেষ প্রতিযোগিতা ছিল বর্শা নিক্ষেপ।
প্যালেস্ট্রা ও ডিকাসকেলিয়াস এই দুটি স্থান ছিল এথেন্সের প্রধান দুটি শিক্ষা কেন্দ্র। শরীর শিক্ষার অন্যতম কেন্দ্র ছিল প্যালেস্ট্রাতে এবং সঙ্গীত, সাহিত্য ও গণিত চর্চা হত ডিকাসকেলিয়াসে। কোনো প্যালেস্ট্রার চারিদিকে থাকত কতকগুলি ঘর। মাঝখানের ফাঁকা জায়গায় কুস্তি, মুষ্টিযুদ্ধ ও নানা ধরনের জিমনাস্টিক হত। ছাত্ররা ঘরগুলিতে পোষাক পাল্টানো, তেল মাখা ও স্নানের সুযোগ পেত। এছাড়া খেলাধূলার সরঞ্জাম ঐ ঘরগুলিতে থাকত। প্যালেস্ট্রায় থাকত একজন প্রশিক্ষক। প্যালেস্ট্রাতে বার্ষিক প্রতিযোগিতায় প্রশিক্ষকরা রেফারির কাজ করতেন। বিজয়ীদের পুরস্কার দিয়ে উৎসাহ দেওয়া হত। প্যালেস্ট্রাতে লাফ, বর্শানিক্ষেপ, ডিসকাস নিক্ষেপ শিক্ষার ব্যবস্থা ছিল। প্যালেস্ট্রাতে সাঁতার শেখার জন্য পুকুর থাকত।
তখনকার জিমনাসিয়ামগুলিতে বড় মাঠ স্নানাগার, মাঝারি ঘর ও একটি হল ঘর থাকত। জিমনাসিয়ামগুলি ছিল এথেলাটিয়গণদের চর্চা কেন্দ্র। একাডেমি, লাইসিয়াম ও সাইনোসারগার হল এথেন্সের তিনটি বড় জিমনাসিয়াম। দর্শনশাস্ত্র, গণিত ইত্যাদি চর্চাও শারীর শিক্ষার সাথে চলত। এথেন্সের অধিবাসীরা লাট্টু খেলা, ঘড়ি ওড়ানো, দোলনায় দোলখেলা, রনপায়ে হাঁটা ইত্যাদি ৫০টিরও বেশি খেলায় অংশ নিত। এথেন্সের মেয়েরা খেলাধূলা থেকে ছিল বঞ্চিত। কিন্তু ৭ বছর বয়সে শিশুদের প্যালেস্ট্রাতে পাঠানো হত, সেখানে শরীর শিক্ষার সবরকম অনুশীলন করা হত।
এথেন্সে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন প্রকার ধর্মীয় অনুষ্ঠানে শারীর শিক্ষার বিস্তার ঘটে। এসব অনুষ্ঠানগুলিতে এথেলেটিক্স সঙ্গীত, নাটক, গল্প, কাব্যচর্চা ইত্যাদির প্রতিযোগিতা হত। এর মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্ব ছিল এথেলেটিক্সের। প্রতিযোগী হিসাবে এথেন্সের সুনাম না থাকলেও, আয়োজক দেশ হিসাবে এথেন্সের নাম ছিল সবার উপরে।
(FAQ) খেলাধূলার অঙ্গনে এথেন্স সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
১. এ্যাথলিট শব্দের অর্থ কী?
প্রতিযোগিতা।
২. এথেন্সের প্রধান দুটি শিক্ষা কেন্দ্রের নাম লেখ।
প্যালেস্ট্রা ও ডিকাসকেলিয়াস।
৩. এথেন্সের গুরুত্বপূর্ণ ক্রীড়ানুষ্ঠান কী ছিল?
রথচালনা।