নবম শ্রেণীর ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় থেকে ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন ইংল্যান্ডে সর্বপ্রথম শিল্পবিপ্লব সংঘটিত হওয়ার কারণ আলোচনা করো। নবম শ্রেণীর ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায়টি হল শিল্পবিপ্লব, উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ।
Class 9 History Chapter 4 Long Question Answer (MARKS-8) in Bengali.
নবম শ্রেণীর ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় হতে ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন ইংল্যান্ডে সর্বপ্রথম শিল্পবিপ্লব সংঘটিত হওয়ার কারণ আলোচনা করো (শিল্পবিপ্লব, উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ)
নবম শ্রেণী (চতুর্থ অধ্যায়) শিল্পবিপ্লব, উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ থেকে ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন
শ্রেণী | নবম |
অধ্যায় | চতুর্থ অধ্যায় |
Question Type | ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন |
Marks | 8 |
নবম শ্রেণীর ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় থেকে ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন
প্রশ্ন:- ইংল্যান্ডে সর্বপ্রথম শিল্পবিপ্লব সংঘটিত হওয়ার কারণ কী?
অথবা, মহাদেশীয় ভূখণ্ডে শিল্পায়ন কেন দেরিতে ঘটেছিল?
উত্তর:- ভূমিকা :- ইউরোপের দেশগুলির মধ্যে সর্বপ্রথম ইংল্যান্ডে অষ্টাদশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে শিল্পবিপ্লব সংঘটিত হয়। মহাদেশীয় ভূখণ্ডে অবস্থিত ফ্রান্স, জার্মানি, বেলজিয়াম, হল্যান্ড, রাশিয়া প্রভৃতি শ শিল্পায়ন শুরু হয় আরও ৫০ থেকে ১০০ বছর পর। ইংল্যান্ডে সর্বপ্রথম শিল্পবিপ্লব সংঘটিত হওয়ার বিভিন্ন কারণ ছিল।
অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ
ইংল্যান্ডের স্যাঁৎসেঁতে আবহাওয়া, খরস্রোতা নদীতে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সুবিধা, বায়ুশক্তি ব্যবহারের সুযোগ, কয়লা-লোহা প্রভৃতি খনিজ সম্পদের প্রাচুর্য প্রভৃতি শিল্পায়নে সহায়তা করেছিল।
সুলভ শ্রমিক
ইংল্যান্ডের গ্রামাঞ্চল থেকে বহু বেকার মানুষ শহরে চলে এসে কলকারখানায় সুলভ শ্রমিক হিসেবে কাজে নিযুক্ত হলে শিল্পায়নের সুবিধা হয়।
কাঁচামালের সংগ্ৰহ
অষ্টাদশ শতকে ইংল্যান্ডে কৃষিবিপ্লবের ফলে শিল্পের প্রয়োজনীয় প্রচুর কাঁচামাল উৎপাদিত হতে থাকে। ইংল্যান্ড তার সুবিশাল ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্য থেকে সস্তায় শিল্পের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়।
মূলধনের জোগান
ইংল্যান্ডে ব্যাংক ব্যবস্থার প্রসার, ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রগুলি থেকে অর্থসম্পদ শোষণ প্রভৃতির ফলে ইংল্যান্ডের শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় মূলধনের কোনো অভাব হয়নি।
বাজার
ইংল্যান্ডের কৃষকদের আর্থিক স্বচ্ছলতা বৃদ্ধি পেলে তাদের শিল্পপণ্য কেনার ক্ষমতা বাড়ে। আবার ইংল্যান্ড তার ঔপনিবেশিক দেশগুলিতে পণ্য বিক্রির সুযোগ পায়। ফলে শিল্পসামগ্রী বিক্রির সুবিশাল বাজার গড়ে ওঠে।
রাজনৈতিক স্থিরতা
অষ্টাদশ শতকে ইংল্যান্ডের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক স্থিরতা আসে যা ইংল্যান্ডে শিল্প বিকাশে সহায়তা করে। কিন্তু ফ্রান্স সহ অন্যান্য দেশের অভ্যন্তরে দীর্ঘদিন ধরে বিপ্লব-জনিত অস্থিরতার ফলে শিল্পের বিকাশ ব্যাহত হয়।
সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা
দেশে শিল্পের প্রসারে ব্রিটিশ সরকার বণিক ও শিল্পপতিদের নানাভাবে সহায়তা করে। কিন্তু অন্যান্য দেশের বণিক ও শিল্পপতিদের সম্পূর্ণ নিজের উদ্যোগে শিল্পের প্রতিষ্ঠা করতে হয়।
যোগাযোগ ব্যবস্থা
ইংল্যান্ডের সুবিস্তৃত সমুদ্র উপকূল, উন্নত নৌশক্তি ও বন্দর প্রভৃতির ফলে দূরদূরান্তের সঙ্গে ইংল্যান্ডের যোগাযোগ গড়ে ওঠে। দেশের অভ্যন্তরেও যোগাযোগ ব্যবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়।
বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার
অষ্টাদশ শতকে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার, যেমন – ফ্লাইং শাটল, স্পিনিং জেনি, ওয়াটার ফ্রেম, মিউল প্রভৃতি ইংল্যান্ডের শিল্পায়নের অগ্রগতিতে খুবই সহায়তা করে।
উপসংহার :- ইংল্যান্ডে শিল্পায়নের সব উপাদানই ছিল বলে সেদেশে শিল্পায়নের বিকাশ সর্বপ্রথম শুরু হয়েছিল। অন্যান্য দেশে একটি উপাদানের অস্তিত্ব থাকলেও অন্য একটি উপাদানের অস্তিত্ব না থাকায় তারা ইংল্যান্ডের তুলনায় পিছিয়ে পড়েছিল।