দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিভিন্ন কারণগুলি আলোচনা কর

নবম শ্রেণীর ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় থেকে ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিভিন্ন কারণগুলি আলোচনা কর। নবম শ্রেণীর ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়টি হল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও তারপর।

নবম শ্রেণীর ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় হতে ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিভিন্ন কারণগুলি আলোচনা (দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও তারপর)

নবম শ্রেণী (ষষ্ঠ অধ্যায়) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও তারপর থেকে ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিভিন্ন কারণগুলি আলোচনা কর

শ্রেণী নবম
অধ্যায়ষষ্ঠ অধ্যায়
Question Typeব্যাখ্যামূলক উত্তর
Marks8

নবম শ্রেণীর ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় থেকে ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন

প্রশ্ন:- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিভিন্ন কারণগুলি আলোচনা করো।

উত্তর:- ভূমিকা :- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ (১৯৩৯-৪৫ খ্রি.) ছিল বিশ্ব ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ানক যুদ্ধ। এই যুদ্ধে একদিকে ছিল অক্ষশক্তিভুক্ত জার্মানি, ইতালি, জাপান প্রভৃতি রাষ্ট্র এবং অন্যদিকে ছিল ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, রাশিয়া, আমেরিকা প্রভৃতি রাষ্ট্র। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পশ্চাতে বিভিন্ন কারণ ছিল।

ত্রুটিপূর্ণ ভার্সাই সন্ধি

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর বিজয়ী মিত্রশক্তি পরাজিত জার্মানির ওপর তীব্র বৈষম্যমূলক ভার্সাই সন্ধি (১৯১৯ খ্রি.) চাপিয়ে দেয়। ঐতিহাসিক ই এইচ কার একে ‘জবরদস্তিমূলক চুক্তি’ বলে অভিহিত করেছেন। জার্মানি এই ‘একতরফা চুক্তি’ ভেঙে ফেলার সুযোগের অপেক্ষায় ছিল।

ঔপনিবেশিক লড়াই

বিংশ শতকের শুরুতে বিশ্বের অধিকাংশ উপনিবেশ ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, হল্যান্ড, আমেরিকা প্রভৃতি দেশের দখলে চলে যায়। পরবর্তীকালে ইতালি, জাপান প্রভৃতি দেশ খুব বেশি উপনিবেশ দখল করার সুযোগ না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়।

একনায়কতন্ত্রের উত্থান

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর একনায়কতান্ত্রিক ইতালির ফ্যাসিস্ট শাসক মুসোলিনি, জার্মানির নাৎসি শাসক হিটলার, জাপানের শাসক তোজো প্রমুখের উগ্র সাম্রাজ্যবাদ ও যুদ্ধবাদী নীতি বিশ্বে অশান্তি সৃষ্টি করে।

নিরস্ত্রীকরণ সম্মেলনের ব্যর্থতা

১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে জেনেভার নিরস্ত্রীকরণ সম্মেলনে বৃহৎ শক্তিগুলি জার্মানির অস্ত্রশক্তি হ্রাসে অত্যন্ত উদ্‌গ্রীব হলেও তারা নিজেদের অস্ত্রশক্তি হ্রাস করতে রাজি ছিল না। ফলে জার্মানি সম্মেলন ত্যাগ করে নিজের ইচ্ছামতো সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে থাকে।

জাতিসংঘের ব্যর্থতা

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠিত হলেও জাতিসংঘ তার লক্ষ্যপূরণে বারবার ব্যর্থ হয়। চরম পরিস্থিতিতেও জাতিসংঘ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে।

শক্তিজোট

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে বিশ্ব পরস্পর-বিরোধী দুটি সশস্ত্র শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়ে। একদিকে থাকে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, রাশিয়া, আমেরিকা প্রভৃতি দেশের ‘মিত্রশক্তি’ এবং অন্যদিকে থাকে জার্মানি, ইটালি, জাপান প্রভৃতি দেশের ‘অক্ষশক্তি’। উভয় শিবিরের মধ্যে সমরসজ্জার প্রতিযোগিতা শুরু হয়।

ইঙ্গ-ফরাসি তোষণ

জার্মানি, ইতালি, জাপান প্রভৃতি সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্র ক্রমাগত ভার্সাই সন্ধির বিভিন্ন ধারাগুলি লঙ্ঘন করে বিভিন্ন দেশে আগ্রাসন চালায়। এই আগ্রাসন প্রতিরোধের চেষ্টা না করে ইঙ্গ-ফরাসি শক্তি দীর্ঘদিন সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলিকে তোষণ করতে থাকে। এই তোষণনীতির ফলে সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলির আগ্রাসন আরও বেড়ে যায়।

প্রত্যক্ষ কারণ

জার্মানির শাসক হিটলার ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দের ১ সেপ্টেম্বর পোল্যান্ড আক্রমণ করলে ৩ সেপ্টেম্বর ইঙ্গ-ফরাসি শক্তি জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়।

উপসংহার :- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চূড়ান্ত যুদ্ধে মিত্রশক্তির কাছে জার্মান নেতৃত্বাধীন অক্ষশক্তি পরাজিত হয়। ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দের ৩ সেপ্টেম্বর ইতালি, ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের ৭ মে জার্মানি এবং ২ সেপ্টেম্বর জাপান আত্মসমর্পণ করে। ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান ঘটে।

2 thoughts on “দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিভিন্ন কারণগুলি আলোচনা কর”

Leave a Comment