ক্রিমিয়ার যুদ্ধের কারণ আলোচনা

নবম শ্রেণীর ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় থেকে ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন ক্রিমিয়ার যুদ্ধের কারণ আলোচনা করা হল। নবম শ্রেণীর ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়টি হল ঊনবিংশ শতকের ইউরোপ-রাজতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী ভাবধারার সংঘাত।

Class 9 History Chapter 3 Long Question Answer (MARKS-8) in Bengali.

ক্রিমিয়ার যুদ্ধের কারণ আলোচনা কর

ClassNine
Chapter3 (ঊনবিংশ শতকের ইউরোপ)
Question Typeব্যাখ্যামূলক
Marks8

প্রশ্ন:- ক্রিমিয়ার যুদ্ধের কারণ আলোচনা করো।

উত্তর:- ভূমিকা:- ১৮৫৪-১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত ক্রিমিয়ার যুদ্ধের নেপথ্যে দুটি বিপরীতমুখী স্বার্থ বিশেষভাবে কাজ করেছিল। একদিকে ছিল রাশিয়ার দ্বারা তুরস্ককে গ্রাস করার চেষ্টা, অন্যদিকে ছিল ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, অস্ট্রিয়া প্রভৃতি দেশ কর্তৃক তুরস্কের অখণ্ডতা রক্ষার চেষ্টা।

যুদ্ধের কারণ

ক্রিমিয়ার যুদ্ধের বিভিন্ন কারণ ছিল। যেমন –

(ক) লন্ডনের সন্ধি

রাশিয়ার শক্তিবৃদ্ধিতে আতঙ্কিত হয়ে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও অস্ট্রিয়া রাশিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করে। ১৮৪০ খ্রিস্টাব্দে লন্ডনের সন্ধি দ্বারা যুদ্ধের সময় বসফোরাস ও দার্পনেস প্রণালীতে সব দেশের যুদ্ধজাহাজ চলাচল নিষিদ্ধ হয়।

(খ) রুশ আগ্রাসন

কৃষ্ণসাগরীয় অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারের উদ্দেশ্যে রুশ জার প্রথম নিকোলাস ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের কাছে তুরস্ককে রাশিয়া ও ইংল্যান্ডের মধ্যে ব্যবচ্ছেদের প্রস্তাব দেন।

(গ) ইংল্যান্ডের ভূমিকা

রাশিয়ার প্রস্তাবের উত্তরে ইংল্যান্ড সুস্পষ্টভাবে তার ইচ্ছা না জানিয়ে নীরব থাকে। কিন্তু রাশিয়া যখন তুরস্কে আগ্রাসন চালায় তখন ইংল্যান্ড রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে মুখর হয়ে ওঠে।

(ঘ) ফ্রান্সের যুদ্ধাকাঙ্ক্ষা

ফ্রান্সের গৌরব বৃদ্ধি এবং  রাশিয়াকে পরাজিত করে ভিয়েনা সন্ধি ভাঙার উদ্দেশ্য ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়ন রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ বাধাতে চাইছিলেন।

(ঙ) অস্ট্রিয়ার উদ্দেশ্য

অস্ট্রিয়া মনে করত যে, বলকান অঞ্চলে রাশিয়ার আধিপত্য বাড়লে অস্ট্রিয়ার স্বার্থ ও নিরাপত্তা বিনষ্ট হবে। এজন্য অস্ট্রিয়া রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সকে সমর্থন করে।

(চ) গ্ৰিক চার্চের অভিভাবকত্ব

তুরস্কের অন্তর্গত জিশুখ্রিস্টের জন্মস্থান জেরুজালেমের গ্রোটোর গির্জা ও অন্যান্য কিছু পবিত্র স্থানের কর্তৃত্ব নিয়ে ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে তুরস্ক ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়।

(ছ) ভিয়েনা নোট

রাশিয়ার আগ্রাসনে আতঙ্কিত হয়ে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, অস্ট্রিয়া প্রভৃতি দেশ ভিয়েনা শহরে মিলিত হয়ে ভিয়েনা নোট বা ভিয়েনা প্রস্তাব গ্রহণ করে এবং তুরস্কের পক্ষে যোগ দেয়। ফলে ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে ক্রিমিয়ার যুদ্ধ শুরু হয়।

উপসংহার :- দু বছর যুদ্ধ চলার পর রাশিয়া ক্রিমিয়ার যুদ্ধে পরাজিত হয় এবং ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে প্যারিসের সন্ধির মাধ্যমে ক্রিমিয়ার যুদ্ধের অবসান ঘটে।

Leave a Comment