নবম শ্রেণীর ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় হতে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর। নবম শ্রেণী (তৃতীয় অধ্যায়) ঊনবিংশ শতকের ইউরোপ- রাজতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী ভাবধারার সংঘাত থেকে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর। Class 9 History Chapter 3 Short question answer
নবম শ্রেণীর ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় হতে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর (ঊনবিংশ শতকের ইউরোপ)
নবম শ্রেণী (তৃতীয় অধ্যায়) ঊনবিংশ শতকের ইউরোপ: রাজতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী ভাবধারার সংঘাত থেকে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
শ্রেণী | নবম |
অধ্যায় | তৃতীয় অধ্যায় |
Question Type | সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর |
Marks | 2 |
নবম শ্রেণীর ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় থেকে অনধিক তিনটি বাক্যে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
১। মেটারনিখ কে ছিলেন ?
উত্তর:- অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী (১৮০৯-১৮৪৮ খ্রি.) মেটারনিখ ছিলেন ভিয়েনা সম্মেলনের (১৮১৫ খ্রি.) সভাপতি। তিনি ছিলেন রাজতন্ত্র, অভিজাততন্ত্র ও সামন্ততন্ত্রের গোড়া সমর্থক। তিনি ছিলেন ১৮১৫ -১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ইউরোপীয় রাজনীতির প্রধান নিয়ন্ত্রণ কর্তা।
২। মেটারনিখের যুগ বলতে কী বোঝ ?
উত্তর:- ১৮১৫ থেকে ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ইউরোপীয় রাজনীতির প্রধান নিয়ন্ত্রক ছিলেন অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী প্রিন্স মেটারনিখ। ইউরোপের অধিকাংশ শাসক মেটারনিখের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজ নিজ শাসনকার্য পরিচালনা করেন। তাই এই সময়কাল ‘মেটারনিখের যুগ’ নামে পরিচিত।
৩। ভিয়েনা সম্মেলনের প্রধান ব্যক্তিত্ব কারা ছিলেন?
উত্তর:- ভিয়েনা সম্মেলনের প্রধান ব্যক্তিত্ব ছিলেন অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী প্রিন্স মেটারনিখ (সভাপতি), রাশিয়ার জার প্রথম আলেকজান্ডার, ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাসালরি এবং ফ্রান্সের প্রতিনিধি তালিরঁ।
৪। ভিয়েনা সম্মেলনের উদ্দেশ্য কী ছিল?
উত্তর:- ভিয়েনা সম্মেলনের উদ্দেশ্য গুলি হল –
- (i) ইউরোপের রাজনৈতিক কাঠামোর পুনর্গঠন,
- (ii) নেপোলিয়ন কর্তৃক বিতাড়িত রাজবংশগুলির পুনঃপ্রতিষ্ঠা,
- (iii) ফ্রান্সের ভবিষ্যৎ শক্তিবৃদ্ধির সম্ভাবনা দূর করা,
- (iv) নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলির ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা প্রভৃতি
৫। ভিয়েনা সম্মেলনের প্রধান কটি নীতি ছিল ও কী কী ?
উত্তর:- ভিয়েনা সম্মেলনের প্রধান নীতি ছিল তিনটি – ন্যায্য অধিকার নীতি, ক্ষতিপূরণ নীতি এবং শক্তিসাম্য নীতি।
৬। মেটারনিখ ব্যবস্থা বলতে কী বোঝ?
উত্তর:- অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী মেটারনিখ ফরাসি বিপ্লব প্রসূত আধুনিক ভাবধারাগুলি ধ্বংস করে প্রাক্-বিপ্লবী যুগের রাজনৈতিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা এবং ইউরোপের রাজনীতিতে অস্ট্রিয়ার প্রাধান্য প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে তীব্র দমনমূলক নীতি গ্রহণ করেন, যা মেটারনিখ ব্যবস্থা বা মেটারনিখতন্ত্র নামে পরিচিত।
৭। ইউরোপীয় শক্তি-সমবায় কী?
উত্তর:- ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে ভিয়েনা সম্মেলনের পরবর্তীকালে ইউরোপে শান্তি বজায় রাখা, সম্মেলনের সিদ্ধান্তগুলিকে কার্যকরী করা এবং ফ্রান্সের শক্তিবৃদ্ধি রোধ করা উদ্দেশ্যে ইউরোপের বৃহৎ শক্তিগুলি একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। এটিই ইউরোপীয় শক্তি-সমবায় নামে পরিচিত।
৮। জুলাই অর্ডিন্যান্স কী?
উত্তর:- ফরাসি সম্রাট দশম চার্লস ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দের ২৫ জুলাই’অর্ডিন্যান্স অব সেন্ট ক্লড’ নামে এক অর্ডিন্যান্স জারি করেন, যা ‘জুলাই অর্ডিন্যান্স’ নামে পরিচিত। এই অর্ডিন্যান্স দ্বারা আইনসভা ভেঙে দেওয়া হয়। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়। বুর্জোয়া শ্রেণির ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয় এবং] ১৮১৪ খ্রিস্টাব্দের সনদ বাতিল করা হয়।
৯। জুলাই রাজতন্ত্র কাকে বলা হয় ?
উত্তর:- ফ্রান্সে ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে জুলাই বিপ্লবের ফলে বুরবোঁ বংশীয় দশম চার্লসের পতন ঘটে এবং অর্লিয় বংশীয় লুই ফিলিপ ফ্রান্সের সিংহাসন লাভ করেন। জুলাই বিপ্লবের দ্বারা লুই ফিলিপের রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় বলে ১৮৩০-১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তাঁর রাজত্বকাল জুলাই রাজতন্ত্র নামে পরিচিত।
১০। ফ্রান্সে কবে, কেন ‘জাতীয় কৰ্মশালা’ স্থাপিত হয় ?
উত্তর:- ফ্রান্সে ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের পর ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে ‘জাতীয় কর্মশালা’ স্থাপিত হয়। ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের পর ফ্রান্সের প্রজাতান্ত্রিক সরকার দেশের সকল বেকারদের কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে ‘জাতীয় কর্মশালা’ স্থাপন করে।
১১। ফ্রান্সে দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র’ কবে প্রতিষ্ঠিত হয়? এর প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি কে ছিলেন?
উত্তর:- ফ্রান্সে ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের পর দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।
ফ্রান্সে দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্রের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ছিলেন লা-মার্টিন।
১২। ফ্রান্সে কবে, কার নেতৃত্বে ‘দ্বিতীয় সাম্রাজ্য’ প্রতিষ্ঠিত হয়? কবে এর পতন ঘটে ?
উত্তর:- ফ্রান্সে লুই নেপোলিয়নের বা তৃতীয় নেপোলিয়নের নেতৃত্বে ১৮৫২ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে তৃতীয় নেপোলিয়নের পতনের ফলে দ্বিতীয় সাম্রাজ্যের পতন ঘটে এবং তৃতীয় প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৩। ‘রিসর্জিমেন্টো’ কী?
উত্তর:- ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পূর্বে ইতালিবাসীদের মনে জাতীয় চেতনার সঞ্চার ঘটে। তারা ইতালিতে প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলেন, যা ‘রিসার্জিমেন্টো’ বা পুনর্জাগরণ নামে পরিচিত।
১৪। কার্বোনারি আন্দোলন কী?
উত্তর:- ভিয়েনা বন্দোবস্তের দ্বারা ইতালিকে বিচ্ছিন্ন রাখার চেষ্টা করা হলে ইতালিতে বিভিন্ন গুপ্ত সমিতি গড়ে ওঠে। এর মধ্যে কার্বোনারি ছিল একটি উল্লেখযোগ্য গুপ্ত সমিতি। এই সমিতির পরিচালনায় ইতালির ঐক্যের দাবিতে যে আন্দোলন শুরু হয় তা কার্বোনারি আন্দোলন নামে পরিচিত।
১৫। ম্যাৎসিনি কে ছিলেন?
উত্তর:- ইতালির ঐক্য আন্দোলনের প্রাণপুরুষ ছিলেন ম্যাৎসিনি। ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দে তিনি ইয়ং ইতালি নামে একটি যুব সংগঠন তৈরি করে ইতালির ঐক্য আন্দোলনকে জোরদার করেন। বিদেশি শক্তির সাহায্য ছাড়া ইতালির যুবকদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে ইতালিকে ঐক্যবদ্ধ করাই ছিল তাঁর লক্ষ্য। অবশ্য এই কাজে তিনি ব্যর্থ হন।
১৬। কাউন্ট ক্যাভুর কে ছিলেন?
উত্তর:- কাউন্ট ক্যামিলো দ্য ক্যাভুর ছিলেন ইতালীয় রাজ্য পিডমন্ট-সার্ডিনিয়ার প্রধানমন্ত্রী এবং ইতালির ঐক্য আন্দোলনের অন্যতম নেতা। তাঁর বাস্তববাদী নীতির ফলে ইটালির ঐক্যের পথ সহজ হয়।
১৭। গ্যারিবল্ডি কে ছিলেন ?
উত্তর:- গ্যারিবল্ডি ছিলেন ইতালির ঐক্য আন্দোলনের একজন অন্যতম নেতা। তিনি তাঁর অনুগামী লালকোর্তা বাহিনীকে নিয়ে ইতালির নেপলস ও সিসিলিতে অভিযান চালিয়ে রাজ্য দুটি দখল করে পিডমন্টের রাজা ভিক্টর ইমান্যুয়েলের হাতে তুলে দেন।
১৮। ম্যাৎসিনি ও ক্যাভুরের মতাদর্শগত পার্থক্য উল্লেখ করো ৷
উত্তর:- ম্যাৎসিনি ও ক্যাভুরের মতাদর্শের প্রধান পার্থক্য গুলি হল –
- (ক) ম্যাৎসিনি ছিলেন আদর্শবাদী, কিন্তু ক্যাভুর ছিলেন বাস্তববাদী।
- (খ) ম্যাৎসিনি ইতালির ঐক্য আন্দোলনে বিদেশি সাহায্য গ্রহণের বিরোধী ছিলেন। কিন্তু ক্যাভুর বিষয়ে বিদেশি সাহায্য গ্রহণের পক্ষপাতী ছিলেন।
- (গ) ইতালিতে ম্যাৎসিনি প্রজাতন্ত্র, কিন্তু ক্যাভুর নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পক্ষপাতী ছিলেন।
১৯। প্লোমবিয়ের্সের চুক্তি কবে, কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় ?
উত্তর:- ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে ফরাসি প্রধানমন্ত্রী তৃতীয় নেপোলিয়ন এবং পিডমন্ট-সার্ডিনিয়ার প্রধানমন্ত্রী কাউন্ট ক্যাভুরের মধ্যে প্লোমবিয়ের্সের গোপন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
২০। ভিল্লাফ্রাঙ্কার সন্ধি সম্পর্কে কী জান ?
উত্তর:- ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্স ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে ভিল্লাফ্রাঙ্কার সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়। অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ শেষ হওয়ার অনেক আগেই ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়ন অস্ট্রিয়ার সঙ্গে গোপনে ভিল্লাফ্রাঙ্কার সন্ধি স্বাক্ষর করে যুদ্ধ থেকে সরে দাঁড়ান।
২১। রোম কীভাবে ইতালির অন্তর্ভুক্ত হয়?
উত্তর:- ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে ফ্রাঙ্কো-প্রাশিয়া যুদ্ধে ইতালি প্রাশিয়াকে সমর্থন করে। সেডানের যুদ্ধে ফ্রান্স পরাজিত হয়ে রোম থেকে সেনা প্রত্যাহারে বাধ্য হলে রোম ইতালির অন্তর্ভুক্ত হয়।
২২। কনফেডারেশন অব দ্য রাইন’ কী?
উত্তর:- ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন সমগ্র জার্মানি দখল করে জার্মানির ৩০০টি রাজ্য ভেঙে ৩৯টি রাজ্যে পরিণত করেন। এই রাজ্যগুলিকে নিয়ে তিনি একটি রাষ্ট্র-সমবায় গঠন করেন, যা ‘কনফেডারেশন অব দ্য রাইন’ নামে পরিচিত।
২৩। সর্ব-জার্মানবাদ কী?
উত্তর:- জার্মান অধ্যাপক, ছাত্র, কবি, সাহিত্যিক প্রমুখ অখণ্ড জার্মান জাতির শ্রেষ্ঠত্ব ও জার্মান জাতীয়তাবাদের আদর্শ প্রচার করে জার্মানিতে এক নবচেতনার সঞ্চার করেন। সেবাস্টিয়ান, হেগেল, বাক্, ফিখটে প্রমুখ সাহিত্যিকের প্রচারিত এই আদর্শ সর্ব-জার্মানবাদ বা প্যান-জার্মানিজম নামে পরিচিত।
২৪। জোলভেরাইন কী ?
উত্তর:- জার্মান রাজ্যগুলির অভ্যন্তরীণ শুল্ক-বৈষম্য ও বাণিজ্যের বাধাগুলি দূর করার উদ্দেশ্যে জার্মান অর্থনীতিবিদ ম্যাজেন-এর উদ্যোগে এবং প্রাশিয়ার নেতৃত্বে বিভিন্ন জার্মান রাজ্যকে নিয়ে ১৮১৯ খ্রিস্টাব্দে একটি শুল্কসংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়, যা ‘জোলভেরাইন’ নামে পরিচিত।
২৫। ফ্রাঙ্কফোর্ট পার্লামেন্ট কী?
উত্তর:- জার্মানির বিভিন্ন রাজ্য থেকে নির্বাচিত ৫৮৬ জন প্রতিনিধি নিয়ে সমগ্র জার্মানির জন্য একটি নতুন সভা গঠিত হয়। ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দের ১৮ মে ফ্রাঙ্কফোর্ট শহরে এই নতুন সভার অধিবেশন বসে। এটি ফ্রাঙ্কফোর্ট পার্লামেন্ট নামে পরিচিত। এই পার্লামেন্ট শেষপর্যন্ত ব্যর্থ হয়।
২৬। বিসমার্ক কে ছিলেন?
উত্তর:- বিসমার্ক ছিলেন প্রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী। তিনি ‘রক্ত ও লৌহ নীতি’ দ্বারা জার্মানির বিভিন্ন রাজ্যগুলিকে প্রাশিয়ার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ করেন। এই উদ্দেশ্যে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধে তিনি অংশগ্ৰহণ করেন – ডেনমার্কের বিরুদ্ধে যুদ্ধ(১৮৬৪ খ্রি.), অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে স্যাডোয়ার যুদ্ধ(১৮৬৬ খ্রি.) এবং ফ্রান্সের বিরুদ্ধে সেডানের যুদ্ধ (১৮৭০ খ্রি.)।
২৭। কূলটুর কাম্ফ’ কী?
উত্তর:- প্রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বিসমার্ক ক্যাথোলিক খ্রিস্টানদের জার্মান ঐক্যের বিরোধী বলে মনে করতেন। তাই ক্যাথোলিকদের দমন করার উদ্দেশ্যে তিনি বিভিন্ন আইন জারি করেন। ফলে জার্মান রাষ্ট্র ও চার্চের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এই দ্বন্দ্ব ‘কুলটুর কাম্ফ’ বা ‘সভ্যতার সংগ্রাম’ নামে পরিচিত।
২৮। ‘রক্ত ও লৌহ নীতি’ কী?
উত্তর:- প্রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বিসমার্ক প্রাশিয়ার নেতৃত্বে জার্মানির বিভিন্ন রাজ্যগুলিকে ঐক্যবদ্ধ করার ক্ষেত্রে যে কঠোর যুদ্ধ বা সামরিক অভিযানের নীতি গ্রহণ করেন তা রক্ত ও লৌহ নীতি’ নামে পরিচিত।
২৯। কবে, কাদের মধ্যে গ্যাস্টিনের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়? এই চুত্তির প্রধান শর্ত কী ছিল ?
উত্তর:- ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে প্রাশিয়া ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে গ্যাস্টিনের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
গ্যাস্টিনের চুক্তির দ্বারা প্রাশিয়া শ্লেসউইগ ও অস্ট্রিয়া হলস্টাইন লাভ করে।
৩০। প্রাগের সন্ধি কবে, কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়?
উত্তর:- স্যাডোয়ার যুদ্ধে প্রাশিয়ার কাছে অস্ট্রিয়ার পরাজয়ের পর ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে (২৩ আগস্ট) প্রাশিয়া ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে প্রাগের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়।
৩১। প্যারি কমিউন কী?
উত্তর:- ফ্রান্সের প্রজাতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের সমর্থক বহু মানুষের নেতৃত্বে প্যারিসের সর্বহারা মানুষের দল সংগঠন গড়ে তুলে ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দে বুরবোঁ রাজতন্ত্র ও যাজকতন্ত্রের বিরুদ্ধে তীব্র জঙ্গি বামপন্থী আন্দোলন গড়ে তোলে। এই সংগঠন ‘প্যারিস কমিউন’ নামে পরিচিত। বুরবোঁ বংশের পতনের পর প্যারিস কমিউন শিথিল হয়ে যায়।
৩২। এমস টেলিগ্রাম কী?
উত্তর:- স্পেনের সিংহাসনে ভবিষ্যতে যাতে প্রাশিয়ার রাজবংশের কেউ না বসে সে বিষয়ে প্রতিশ্রুতি আদায়ের উদ্দেশ্যে ফরাসি দূত কাউন্ট বেনেদেত্তি এমস নামক স্থানে প্রাশিয়ার রাজা প্রথম উইলিয়ামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রাশিয়ার রাজা প্রথম উইলিয়াম তাঁকে কোনো প্রতিশ্রুতি না দিয়ে সাক্ষাৎকারের বিষয়টি টেলিগ্রাম যোগে প্রশিয়ার প্রধানমন্ত্রী অটো ফন বিসমার্ককে জানান (১৩ জুলাই, ১৮৭০ খ্রি.)। বিসমার্ক টেলিগ্রামটির কিছু শব্দ সুকৌশলে বাদ দিয়ে তা এমনভাবে সংবাদপত্রে প্রকাশ করেন যে, এতে ফরাসিরা মনে করে যে, প্রাশীয়রাজ ফরাসি দূতকে অপমান করেছেন। এটি ‘এমস টেলিগ্রাম’ নামে পরিচিত।
৩৩। বলকান বা পূর্বাঞ্চল বা নিকট প্রাচ্য সমস্যা কী?
উত্তর:- অষ্টাদশ শতকে তুর্কি সাম্রাজ্য দ্রুত পতনের দিকে এগিয়ে গেলে বলকান অঞ্চলে রাজনৈতিক শূন্যতার সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায় বিভিন্ন বহিরাগত শক্তি বলকান অঞ্চলে আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে এলে এই অঞ্চলে অস্থিরতার সৃষ্টি হয় যা, বলকান সমস্যা নামে পরিচিত।
৩৪। উষ্ণজল নীতি’ কী?
উত্তর:- রাশিয়া বরফমুক্ত কৃষ্ণসাগর, দার্দনেলস প্রণালী অতিক্রম করে ভূমধ্যসাগরে পৌঁছানোর উদ্যোগ গ্ৰহণ করে। রাশিয়ার এই পরিকল্পনা ‘উষ্ণজল নীতি’ বা ‘বরফমুক্ত সমুদ্র উপকূল পর্যন্ত বিস্তার নীতি’ নামে পরিচিত।
৩৫। ‘হেটাইরিয়া ফিলিকে’ কী?
উত্তর:- গ্রিসের একটি গুপ্ত সমিতি ছিল ‘হেটাইরিয়া ফিলিকে’ বা ‘স্বাধীনতার অনুরাগী’। স্কুফাস নামে জনৈক গ্রিক বণিক ১৮১৪ খ্রিস্টাব্দে এটি প্রতিষ্ঠা করেন। ইউরোপ থেকে তুরস্ককে বিতাড়িত করে গ্রিসের স্বাধীনতা অর্জন এবং প্রাচীন বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করাই ছিল এই সমিতির উদ্দেশ্য।
৩৬। ভিয়েনা নোট’ কী?
উত্তর:- তুরস্কের মলডেভিয়া ও ওয়ালাকিয়া প্রদেশ রাশিয়া দখল করে নিলে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, অস্ট্রিয়া ও প্রাশিয়া ভিয়েনা শহরে মিলিত হয়ে তুরস্ক ও রাশিয়ার কাছে একটি প্রস্তাব পাঠায়। এই প্রস্তাব ‘ভিয়েনা নোট’ নামে পরিচিত।
৩৭। কাকে, কেন মুক্তিদাতা জার’ বলা হয়?
উত্তর:- রাশিয়ার জার দ্বিতীয় আলেকজান্ডার ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে এক আইনের মাধ্যমে রাশিয়ার ভূমিদাসদের মুক্তি ঘোষণা করেন। এজন্য তাঁকে ‘মুক্তিদাতা জার’ বলা হয়।
ঙ্গে মধ্য ইটালির রাজগুলি যুক্ত হয়।