২০২৫ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ইতিহাস বিষয়ে সম্পূর্ণ সিলেবাসের সাজেশন্ ভিত্তিক পিডিএফ নোটস্ নেওয়ার জন্য যোগাযোগ করুণ (দাম প্রতি ক্লাস ৯৯ টাকা)।

👉Chat on WhatsApp

প্রাচীন ভারতে নারী শিক্ষার বর্ণনা দাও

উচ্চ মাধ্যমিক একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় ‘সমাজের ঘটনা প্রবাহ’ থেকে প্রাচীন ভারতে নারী শিক্ষার বর্ণনা দাও।

প্রাচীন ভারতে নারী শিক্ষার বর্ণনা দাও

প্রশ্ন:- প্রাচীন ভারতে নারী শিক্ষার বর্ণনা দাও।

সূচনা :- প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতায় বিভিন্ন যুগের সমাজে নারীর মর্যাদার উন্নতি বা অবনতি যাই ঘটুক না কেন, প্রাচীন ভারতের বিভিন্ন যুগে ভারতীয় নারীর শিক্ষা গ্রহণের বিষয়টি মোটামুটিভাবে অব্যাহত ছিল। বৈদিক যুগ থেকে শুরু করে পরবর্তী দীর্ঘ সময়ের ভারতের নারী শিক্ষা সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়।

ঋগবৈদিক যুগ

ঋগবৈদিক যুগে নারী শিক্ষারও যথেষ্ট সুযোগ ছিল। ধর্মচর্চা, চরিত্রগঠন, ব্যক্তিত্বের বিকাশপ্রভৃতি ছিল এই যুগের শিক্ষার উদ্দেশ্য। এই যুগে মমতা, লোপামুদ্রা, বিশ্ববারা, বিশাখা প্রমুখ বিদুষী নারীর কথা জানা যায়। এই সময় নারীরা বেদের অনেক স্তোত্রও রচনা করেছিলেন।

পরবর্তী বৈদিক যুগে নারীশিক্ষা

পরবর্তী বৈদিক যুগে যদিও নারীদের সামাজিক মর্যাদা বহুলাংশে হ্রাসপেয়েছিল তা সত্ত্বেও এই সময়ে নারীরা উচ্চশিক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিল। এইযুগের নারীরা বিদ্যাচর্চায় আগ্রহী ছিল। যারা বিবাহের পূর্ব পর্যন্ত বিদ্যাচর্চা করত তারা সদ্যোদ্বাহা নামে পরিচিত ছিল এবং যেসকল নারী সারা জীবন বিদ্যাচর্চা করে ধর্মীয় শাস্ত্র পাঠ করে কাটিয়ে দিত তারা ব্রহ্মবাদিনী নামে পরিচিত ছিল। পরবর্তী বৈদিক যুগের সর্বাপেক্ষা বিখ্যাত নারী ছিলেন গার্গী ও মৈত্রেয়ী।

মৌর্যযুগ

খ্রিস্টপূর্ব ষোড়শ শতক ও তার পরবর্তী সময়ে নারীরা শিক্ষায় যথেষ্ট আগ্রহী ছিল। বিশেষ করে মৌর্যযুগের নারীরা শিক্ষার ক্ষেত্রে যথেষ্ট আগ্রহী ছিল। অর্থশাস্ত্রের মতে মৌর্য যুগে অভিজাত পরিবারের মহিলারা শিক্ষা গ্রহণ করলেও তাদের মধ্যে পর্দাপ্রথা ছিল। সমকালীন বিভিন্ন তথ্য থেকে জানা যায় এই সময়ের নারীরা সংগীত রচনার ক্ষেত্রেও পারদর্শী ছিল।

মৌর্য পরবর্তী যুগ

মৌর্য পরবর্তী প্রাচীন যুগের নারীরাও শিক্ষার যথেষ্ট আগ্রহী ছিল। জৈনশাস্ত্র থেকে জানা যায় যে, কৌশাম্বীর রাজকন্যা জয়ন্তী আজীবন অবিবাহিতা থেকে বিদ্যাচর্চা করেছিলেন। জনৈক মহিলা কবি চোল রাজাদের যুদ্ধ জয়কে কেন্দ্র করে উৎকৃষ্ট সাহিত্য রচনা করেছেন। এই সময়ে বহু নারী বৈদিক স্তোত্র, সংস্কৃত কাব্য ও নাটক রচনা করতেন।

গুপ্তযুগে নারীশিক্ষা

নারীশিক্ষার বিষয়টি গুপ্তযুগেও অব্যাহত ছিল। এই যুগের নারীদের সামাজিক মর্যাদা হ্রাস পেলেও তাদের শিক্ষা লাভের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। গুপ্তযুগের সাহিত্যে সমকালীন নারীদের ইতিহাস ও কাব্যচর্চার উল্লেখ আছে। বাৎস্যায়ন গুপ্তযুগের উচ্চ বংশের মহিলাদের শাস্ত্রচর্চা ও চৌষট্টি কলাবিদ্যার অনুশীলনের উল্লেখ করেছেন। গুপ্তযুগে সমাজের উচ্চস্তরের মহিলাদের মধ্যে শিক্ষা ব্যবস্থা সীমাবদ্ধ ছিল, সাধারণ দরিদ্র নারীদের শিক্ষার প্রতি যথেষ্ট সংকুচিতই ছিল।

হর্ষবর্ধনের যুগে নারীশিক্ষা

হর্ষবর্ধনের আমলে চিত্রকলা, নৃত্য, সংগীত প্রভৃতি শিক্ষার প্রচলন ছিল। হর্ষবর্ধনের ভগ্নি রাজশ্রী নিয়মিত সংগীত, নৃত্য ও অন্যান্য কলার চর্চা করতেন বলে বাণভট্ট উল্লেখ করেছেন।নারীরা সাধারণত পিতৃগৃহেই শিক্ষালাভ করত।

উপসংহার :- ঋকবৈদিক যুগ থেকে শুরু করে পুরো পুরো প্রাচীন যুগ ধরে নারী সম্প্রদায় শিক্ষার আগ্রহী ছিল। তবে শিক্ষার ক্ষেত্রে সমকালীন সমাজের উচ্চবিত্ত শ্রেণির নারীদের আগ্রহই ছিল অধিক।

Leave a Comment