দশম শ্রেণীর ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসের মধ্য দিয়ে কীভাবে জাতীয়তাবাদের রূপ প্রস্ফুটিত হয়েছে তা আলোচনা করা হল।
‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসের মধ্য দিয়ে কীভাবে জাতীয়তাবাদের রূপ প্রস্ফুটিত হয়েছে
প্রশ্ন:- ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসের মধ্য দিয়ে কীভাবে জাতীয়তাবাদের রূপ প্রস্ফুটিত হয়েছে?
ভূমিকা :- উনিশ শতকে ভারতীয় জাতীয়তাবোধের জাগরণে যেসব ব্যক্তি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। তিনি তাঁর ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাস রচনার মধ্য দিয়ে ভারতবাসীর মধ্যে জাতীয়তাবাদী চেতনা জাগিয়ে তোলেন। এই উপন্যাসটি ‘স্বদেশপ্রেমের গীতা’ নামে পরিচিত।
রচনাকাল
সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহ ও ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের পটভূমিতে ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসটি রচনা করেন।
ব্রিটিশ শাসনের বিরোধিতা
বঙ্কিমচন্দ্র তাঁর ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসে ভারতের ব্রিটিশ শাসনব্যবস্থার তীব্র বিরোধিতা করেন। তিনি এদেশে ব্রিটিশ শাসনের করুণ অবস্থা তাঁর রচনায় ফুটিয়ে তোলেন এবং ব্রিটিশদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে সকল ভারতীয়দের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
দেশকে মা বলে সম্বোধন
‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসে বঙ্কিমচন্দ্র স্বদেশভূমিকে ‘মা’ বলে অভিহিত করেছেন। ফলে উপন্যাসটি স্বদেশপ্রেমের একটি নিদর্শনে পরিণত হয়েছে।
নারীদের প্রতি সম্মান
এই উপন্যাসের মধ্যে দিয়ে বঙ্কিমচন্দ্র নারী জাতিকে সম্মান করেছেন। কল্যাণী, বীণা প্রভৃতি নারী চরিত্রের জীবনধারা ও সংগ্রামশীল মানসিকতার মধ্যে তিনি সমগ্র নারীজাতির অন্ধকারময় দিকটি তুলে ধরেছেন এবং ভারতের সমগ্র নারীজাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দিয়েছেন।
বন্দেমাতরম মন্ত্রের উদ্ভাবন
‘বন্দেমাতরম’ হল ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংগীত, যা পরবর্তীতে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ‘জাতীয় মন্ত্রে’ পরিণত হয়। বিপ্লবীরা এই মন্ত্র উচ্চারণ করে ফাঁসির দড়ি গলায় পরতে থাকে।
বন্দেমাতরম মন্ত্রের স্থান
‘বিপ্লববাদের জননী’ রূপে পরিচিত ভিকাজি রুস্তম কামা বা মাদাম কামা ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে পরাধীন ভারতে ‘জাতীয় পতাকা’ তৈরি করলে সেখানে ‘বন্দেমাতরম’ মন্ত্রটি স্থান পায়।
সন্তান দলের আদর্শ প্রচার
বঙ্কিমচন্দ্র তাঁর ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসে একটি সন্তান দলের কল্পনা করেছেন। এই দল ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে, মুখে বন্দেমাতরম মন্ত্র নিয়ে কামানের সামনে রুখে দাঁড়ায়। সন্তান দল কল্পনার মধ্য দিয়ে তিনি ভারতবাসীকে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের বার্তা দিয়েছেন।
পাশ্চাত্য শিক্ষার সমালোচনা
বঙ্কিমচন্দ্র এই উপন্যাসে পাশ্চাত্য শিক্ষার সমালোচনা করেছেন। তিনি মনে করেন পাশ্চাত্য শিক্ষা ভারতীয়দের ব্রিটিশ করণিক তৈরি করতে পারবে, কিন্তু এই শিক্ষায় শিক্ষিত কোনো মানুষই ব্রিটিশ বিরোধিতায় অংশ নেবে না।
দেশপ্রেমের প্রতিষ্ঠা
বঙ্কিমচন্দ্র সর্বদা দেশকে ঈশ্বর ও মা হিসেবে পুজো করেছেন। তিনি বলতেন, “Patriotism is Religion and Religion is Patriotism”, অর্থাৎ দেশপ্রেমই হল ধর্ম এবং ধর্মই হল দেশপ্রেম।
উপসংহার :- বঙ্কিমচন্দ্রের ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাস ব্রিটিশদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে ভারতীয়দের ঐক্যবদ্ধ হয়ে রুখে দাঁড়াতে শিখিয়েছিল। বঙ্কিমচন্দ্রের প্রশংসা করে বিপ্লবী অরবিন্দ ঘোষ তাঁকে ‘ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ঋষি’ বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন, তিনি শুধু সাহিত্য সৃষ্টি করেননি, তিনি একটি জাতির সৃষ্টি করেছেন।
দশম শ্রেণীর ইতিহাস (চতুর্থ অধ্যায়) সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে অন্যান্য সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর
দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস চতুর্থ অধ্যায়- সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে অন্যান্য সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তরগুলি দেওয়া হল।
দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস চতুর্থ অধ্যায়- সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ
৪.১. ১৮৫৭-র বিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি
- ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহকে সামন্ত শ্রেণির বিদ্রোহ বলার ক্ষেত্রে কী যুক্তি দেওয়া হয়?
- ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহকে ‘ভারতের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ’ বলা যায় কি? যুক্তি দাও।
- মহাবিদ্রোহের প্রকৃতি ও চরিত্র বিশ্লেষণ কর। অথবা,সংক্ষেপে মহাবিদ্রোহের চরিত্র বিশ্লেষণ কর।
- ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহকে জাতীয় বিদ্রোহ বলা যায় কী?
- ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের ব্যর্থতার কারণগুলি কী ছিল?
- ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের সূত্রপাত ও প্রসার সম্পর্কে আলোচনা করো।
- ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের সিপাহি বিদ্রোহের কারণগুলি কী ছিল?
- ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহে কোথায়, কারা নেতৃত্ব দেন?
- ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের সামাজিক কারণগুলি কী ছিল?
- মহাবিদ্রোহের প্রত্যক্ষ কারণ কী ছিল?
- ১৮৫৭-এর মহাবিদ্রোহের অর্থনৈতিক কারণগুলি কী ছিল?
- ১৮৫৭-এর মহাবিদ্রোহের রাজনৈতিক কারণগুলি কী ছিল?
(ওই বিদ্রোহের সঙ্গে জাতিয়তাবোধের সম্বন্ধ বিষয়ক বিতর্ক) – সংক্ষিপ্ত আলোচনা।
প্রসঙ্গক্রমে ১৮৫৭-র বিদ্রোহের প্রতি শিক্ষিত বাঙালি সমাজের মনোভাব, মহারানীর ঘোষণাপত্র (১৮৫৮) – এই বিষয় দুটিরও আলোচনা করতে হবে।
- টীকা লেখো: মহারানির ঘোষণাপত্র।
- মহারানীর ঘোষণাপত্রের ঐতিহাসিক তাৎপর্য।
- ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের প্রতি শিক্ষিত বাঙালি সমাজের কীরূপ মনোভাব ছিল? অথবা, শিক্ষিত বাঙালি সমাজ কেন ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহকে সমর্থন করেনি?
(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য বিদ্রোহগুলির সময়কাল উল্লেখসহ মানচিত্রে সেগুলির অঞ্চল চিহ্নিতকরণ, বিদ্রোহগুলির সময়সারণি)
৪.২. সভাসমিতির যুগ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ
- সভা সমিতির যুগের বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো।
- ‘সভাসমিতির যুগ’ বলতে কী বোঝ? অথবা, টীকা লেখো – সভাসমিতির যুগ।
(৪.২.ক.) বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা
- বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভার গঠন ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে আলোচনা কর।
- বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভাকে ভারতের প্রথম রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান বলার কারণ কী?
(৪.২.খ.) জমিদার সভা
(৪.২.গ.) ভারত সভা
- টীকা লেখো: ইলবার্ট বিল
- ভারতসভা বা ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান কার্যাবলী বা পদক্ষেপ গুলি উল্লেখ কর। অথবা, ভারতসভার প্রতিবাদ আন্দোলন গুলি উল্লেখ কর।
- ভারতসভার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধিতে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কী ভূমিকা ছিল? অথবা, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কার্যকলাপগুলি সম্পর্কে আলোচনা কর। অথবা, রাজনৈতিক সমিতি হিসেবে ভারতসভার গুরুত্ব লেখ।
(৪.২.ঘ.) হিন্দুমেলা
- হিন্দুমেলার সীমাবদ্ধতাগুলি কী ছিল? অথবা, “হিন্দুমেলা’ কেন জনপ্রিয়তা লাভ করতে পারেনি?
- হিন্দুমেলার উদ্দেশ্য কী ছিল?
- টীকা লেখো- হিন্দুমেলা।
উপরিউক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে এই চারটি উদ্যোগের আলোচনায় জোর দিতে হবে।
(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য সংগঠন ও অন্যান্য তুলনীয় সংগঠনগুলির উল্লেখ সহ সময়সারণী)
৪.৩. লেখায় ও রেখায় জাতীয়তাবোধের বিকাশ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ
(৪.৩.ক.) আনন্দমঠ
(৪.৩.খ.) বর্তমান ভারত
- জাতীয়তাবোধের বিকাশে বিবেকানন্দের অবদান আলোচনা কর। অথবা, স্বামী বিবেকানন্দ কীভাবে স্বদেশবাসীকে স্বদেশ মন্ত্রে দীক্ষিত করতে চেয়েছিলেন?
- ভারতীয় জাতীয়তাবোধের বিকাশে স্বামী বিবেকানন্দের ‘বর্তমান ভারত’ গ্রন্থটির কী ভূমিকা ছিল?
(৪.৩.গ.) গোরা
(৪.৩.ঘ.) ভারতমাতা (চিত্র)
এই তিনটি রচনার ও ছবিটির মধ্যে কিভাবে জাতিয়তাবোধ ফুটে উঠেছে কেবল সেই বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করতে হবে। প্রসঙ্গক্রমে গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যঙ্গচিত্রে ঔপনিবেশিক সমাজের সমালোচনা বিষয়টিও আলোচ্য
(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি)