গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের আঁকা বিভিন্ন ব্যঙ্গচিত্রে কীভাবে ঔপনিবেশিক সমাজের সমালোচনা

দশম শ্রেণীর ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের আঁকা বিভিন্ন ব্যঙ্গচিত্রে কীভাবে ঔপনিবেশিক সমাজের সমালোচনা ফুটে উঠেছে ও অথবা, গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর ব্যঙ্গচিত্রকে কীভাবে তুলে ধরেছিলেন তা আলোচনা করা হল।

Table of Contents

গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের আঁকা বিভিন্ন ব্যঙ্গচিত্রে কীভাবে ঔপনিবেশিক সমাজের সমালোচনা

প্রশ্ন:- গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের আঁকা বিভিন্ন ব্যঙ্গচিত্রে কীভাবে ঔপনিবেশিক সমাজের সমালোচনা ফুটে উঠেছে?

অথবা, গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর ব্যঙ্গচিত্রকে কীভাবে তুলে ধরেছিলেন?

ভূমিকা :- ভারতবাসীর স্বদেশচিন্তা কেবলমাত্র কাব্য, নাটক, উপন্যাস আর প্রবন্ধের রেখায় প্রকাশিত হয়নি। ভারতীয় চিত্রকলাতেও স্বাদেশিকতার ছোঁয়া লাগে। শিল্পী গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যঙ্গচিত্রে ঔপনিবেশিক শােষণ ও অনাচারের বাস্তবরূপটি যথার্থই ফুটে উঠেছে।

বিভিন্ন ব্যঙ্গচিত্র

গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের আঁকা ব্যঙ্গচিত্র সংকলনগুলির মধ্যে তিন খণ্ডে প্রকাশিত ‘অদ্ভুত লোক’ (১৯১৫ খ্রি.), ‘বিরূপ বজ্র’ (১৯১৭ খ্রি.) এবং ‘নয়া হুল্লোড়’ (১৯২১ খ্রি.) ছিল বিশেষ উল্লেখযোগ্য। তাঁর আঁকা উল্লেখযোগ্য ব্যঙ্গচিত্র হল জাতাসুর, পরভূতের কাকলি, বিদ্যার কারখানা, বাকযন্ত্র প্রভৃতি।

উচ্চবিত্তদের সমালোচনা

গগনেন্দ্রনাথের বিভিন্ন ব্যঙ্গচিত্রে সমাজের ধনী ও অভিজাত শ্রেণির ক্রিয়াকলাপের সমালোচনা করা হয়েছে। তাদের অহংকার, সামাজিক চালচলন, রীতিনীতি, মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের সঙ্গে তাদের দূরত্ব প্রভৃতি নানা বিষয় ব্যঙ্গচিত্রগুলিতে নিন্দার দৃষ্টিভঙ্গিতে তুলে ধরা হয়েছে।

‘বাবু’ সংস্কৃতির সমালোচনা

ব্রিটিশ শাসনকালে ‘বাবু’ নামে পরিচিত শিক্ষিত ও পাশ্চাত্যের অনুরাগী একশ্রেণির বাঙালির সমালোচনা ফুটে উঠেছে গগনেন্দ্রনাথের চিত্রে। একটি কার্টুনে দেখা যায় যে, এক বাঙালি বাবু ‘সাহেব’ হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে চাইলেও সমাজে তিনি ‘বাবু’ বলেই পরিচিত হন। বিবাহ সম্পর্কে বাঙালিদের দৃষ্টিভঙ্গিও তাঁর ব্যঙ্গচিত্রে উঠে এসেছে।

পাশ্চাত্যানুরাগের সমালোচনা

পাশ্চাত্য সভ্যতা ও সংস্কৃতির অন্ধ ভক্ত একশ্রেণির বাঙালির সমালোচনা ফুটে উঠেছে গগনেন্দ্রনাথের বিভিন্ন চিত্রে। একটি চিত্রে দেখা যায়, একজন বাঙালি নারী বাংলার শাড়ি এবং ইউরোপের জুতো পরে ইউরোপীয় পুরুষের সঙ্গে নৃত্য করছেন।

নিম্নরুচির সমালোচনা

সমকালীন কিছু বাঙালির নিম্নরুচি গগনেন্দ্রনাথের চিত্রে নিন্দিত হয়েছে। ‘খল ব্রাহ্মণ’ চিত্রটিতে দেখা যায়, জনৈক ব্রাহ্মণ ধর্মের প্রতি অনুরাগের পরিবর্তে মাংস, মদ ও মহিলায় অনুরক্ত।

নারীর প্রতি কুদৃষ্টির সমালোচনা

নারী জাতির দুর্দশার চিত্র গগনেন্দ্রনাথের কোনো কোনো ব্যঙ্গচিত্রে তুলে ধরা হয়েছে। একটি চিত্রে তিনি স্বামীর মত্ততা এবং তার স্ত্রীর আচরণ তুলে ধরেছেন।

জাতপাতের সমালোচনা

‘জাতাসুর’ নামে একটি ব্যঙ্গচিত্রে গগনেন্দ্রনাথ ভারতীয় সমাজব্যবস্থার জাতপাত ও বর্ণবৈষম্য ব্যবস্থার সমালোচনা করেছেন।

উপসংহার :- গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যঙ্গচিত্র গুলি নিঃসন্দেহে দক্ষতা ও মৌলিকতায় অতুলনীয়। ব্যঙ্গচিত্রের মধ্য দিয়ে তিনি যেভাবে ঔপনিবেশিক সমাজের সমালোচনা করেছেন তা এক কথায় অনবদ্য। চিত্রশিল্পে সমকালীন দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে বেরিয়ে ব্যঙ্গচিত্রকে ঔপনিবেশিক সমালোচনার হাতিয়ার করে তিনি ‘ব্যঙ্গচিত্রের জনক’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন।

দশম শ্রেণীর ইতিহাস (চতুর্থ অধ্যায়) সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে অন্যান্য সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস চতুর্থ অধ্যায়- সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে অন্যান্য সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তরগুলি দেওয়া হল।

দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস চতুর্থ অধ্যায়- সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

৪.১. ১৮৫৭-র বিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি

(ওই বিদ্রোহের সঙ্গে জাতিয়তাবোধের সম্বন্ধ বিষয়ক বিতর্ক) – সংক্ষিপ্ত আলোচনা।

প্রসঙ্গক্রমে ১৮৫৭-র বিদ্রোহের প্রতি শিক্ষিত বাঙালি সমাজের মনোভাব, মহারানীর ঘোষণাপত্র (১৮৫৮) – এই বিষয় দুটিরও আলোচনা করতে হবে।

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য বিদ্রোহগুলির সময়কাল উল্লেখসহ মানচিত্রে সেগুলির অঞ্চল চিহ্নিতকরণ, বিদ্রোহগুলির সময়সারণি)

৪.২. সভাসমিতির যুগ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

(৪.২.ক.) বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা

(৪.২.খ.) জমিদার সভা

(৪.২.গ.) ভারত সভা

(৪.২.ঘ.) হিন্দুমেলা

উপরিউক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে এই চারটি উদ্যোগের আলোচনায় জোর দিতে হবে।

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য সংগঠন ও অন্যান্য তুলনীয় সংগঠনগুলির উল্লেখ সহ সময়সারণী)

৪.৩. লেখায় ও রেখায় জাতীয়তাবোধের বিকাশ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

(৪.৩.ক.) আনন্দমঠ

(৪.৩.খ.) বর্তমান ভারত

(৪.৩.গ.) গোরা

(৪.৩.ঘ.) ভারতমাতা (চিত্র)

এই তিনটি রচনার ও ছবিটির মধ্যে কিভাবে জাতিয়তাবোধ ফুটে উঠেছে কেবল সেই বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করতে হবে। প্রসঙ্গক্রমে গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যঙ্গচিত্রে ঔপনিবেশিক সমাজের সমালোচনা বিষয়টিও আলোচ্য।

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি)

Leave a Comment