দশম শ্রেণীর ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে জমিদার সভা সম্পর্কে টীকা দেওয়া হল।
জমিদার সভা সম্পর্কে টীকা
প্রশ্ন:- টীকা লেখ : জমিদার সভা।
ভূমিকা :- উনিশ শতকের মধ্যভাগে ভারতে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে ওঠে। তাই ড. অনিল শীল এই শতককে ‘রাজনৈতিক সভাসমিতির যুগ’ বলে অভিহিত করেছেন। এই সময় প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক সংগঠনগুলির মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য ছিল জমিদার সভা। এটিই ছিল ভারতের প্রথম উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান।
প্রতিষ্ঠা
১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দের ১৯ মার্চ দ্বারকানাথ ঠাকুরের উদ্যোগে এবং রাজা রাধাকান্ত দেবের সভাপতিত্বে কলকাতায় জমিদার সভা প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর “ভূমিমালিক সমিতি’ নামে এটি অধিক পরিচিতি লাভ করে।
সদস্য
জমিদার সভার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বিভিন্ন জমিদার এবং ধনী ব্যবসায়ী। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন দ্বারকানাথ ঠাকুর, রাজা রাধকান্ত দেব, প্রসন্নকুমার ঠাকুর, রাজকমল সেন, ভবানীচরণ মিত্র প্রমুখ। বাংলার ব্যাবসাবাণিজ্যে নিযুক্ত বেসরকারি ব্রিটিশরাও জমিদার সভার সদস্য হতে পারত। তবে সাধারণ মানুষ জমিদার সভার সদস্য হওয়ার বিশেষ সুযোগ পেত না।
উদ্দেশ্য
জমিদার সভার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল জমিদার শ্রেণির স্বার্থরক্ষা করা। এই উদ্দেশ্যে সভার সদস্যরা কলকাতার ব্রিটিশ আমলাতন্ত্রকে নিজেদের পক্ষে আনার চেষ্টা চালায়। তারা লন্ডনে ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং সোসাইটির সভাপতি জর্জ থম্পসনকে লন্ডনে ভূমিমালিক সমিতির প্রতিনিধি নিয়োগ করে।
কর্মসূচি
জমিদার সভা বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে। যেমন –
- (১) জমিদারদের স্বার্থরক্ষার জন্য তারা সরকারের কাছে দাবি জানায়।
- (২) তারা ব্রিটিশ আমলাতন্ত্রকে নিজেদের পক্ষে আনার চেষ্টা করে।
- (৩) তারা ভারতের সর্বত্র চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের প্রসার ঘটানোর দাবি জানায়।
- (৪) তারা নিষ্কর জমি ভোগদখলের অধিকার পুনঃপ্রবর্তন বন্ধ করার চেষ্টা চালায়।
- (৫) শাসনসংস্কারের জন্য তারা সরকারের কাছে দাবি জানায়।
- (৬) তারা সরকারের কাছে পুলিশবিভাগ, বিচারবিভাগ ও রাজস্ববিভাগের সংস্কারের দাবি জানায়।
অবদান
জমিদার সভা ভারতে আধুনিক প্রাতিষ্ঠানিক রাজনীতির ক্ষেত্রে একটি নতুন ধারার সূচনা করে। এই সভার আবেদনে সরকার ১০ বিঘা পর্যন্ত ব্রহ্মোত্তর জমির খাজনা মকুব করে। ড. রাজেন্দ্রলাল মিত্র মনে করেন যে, জমিদার সভাই ছিল ভারতের স্বাধীনতার অগ্রদূত।
বিলুপ্তি
বাংলার বাইরে জমিদার সভা তাদের প্রভাব বিস্তারে সফল হয়নি। তাছাড়া ১৮৪২ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ জমিদার সভা ক্রমে গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এর অস্তিত্ব কোনোরকমে টিকে ছিল। পরবর্তীকালে এর স্থান দখল করে নেয় বেঙ্গল ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি।
উপসংহার :- জমিদার সভা ছিল একান্তভাবেই জমিদার ও বণিকদের একটি সংগঠন। সদস্যরা এর আভিজাত্য রক্ষায় সর্বদা যত্নবান থাকতেন। ব্রিটিশরাজের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনেও তারা সচেষ্ট থাকতেন। তবে এই সংগঠন ভারতে আধুনিক প্রাতিষ্ঠানিক রাজনীতির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। এই সংগঠনের অনুকরণে পরবর্তীকালে ভারতে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে ওঠে। ফলে এদেশে ব্রিটিশবিরোধী রাজনৈতিক আন্দোলন শক্তিশালী হয়ে ওঠে।
দশম শ্রেণীর ইতিহাস (চতুর্থ অধ্যায়) সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে অন্যান্য সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর
দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস চতুর্থ অধ্যায়- সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে অন্যান্য সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তরগুলি দেওয়া হল।
দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস চতুর্থ অধ্যায়- সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ
৪.১. ১৮৫৭-র বিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি
- ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহকে সামন্ত শ্রেণির বিদ্রোহ বলার ক্ষেত্রে কী যুক্তি দেওয়া হয়?
- ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহকে ‘ভারতের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ’ বলা যায় কি? যুক্তি দাও।
- মহাবিদ্রোহের প্রকৃতি ও চরিত্র বিশ্লেষণ কর। অথবা,সংক্ষেপে মহাবিদ্রোহের চরিত্র বিশ্লেষণ কর।
- ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহকে জাতীয় বিদ্রোহ বলা যায় কী?
- ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের ব্যর্থতার কারণগুলি কী ছিল?
- ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের সূত্রপাত ও প্রসার সম্পর্কে আলোচনা করো।
- ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের সিপাহি বিদ্রোহের কারণগুলি কী ছিল?
- ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহে কোথায়, কারা নেতৃত্ব দেন?
- ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের সামাজিক কারণগুলি কী ছিল?
- মহাবিদ্রোহের প্রত্যক্ষ কারণ কী ছিল?
- ১৮৫৭-এর মহাবিদ্রোহের অর্থনৈতিক কারণগুলি কী ছিল?
- ১৮৫৭-এর মহাবিদ্রোহের রাজনৈতিক কারণগুলি কী ছিল?
(ওই বিদ্রোহের সঙ্গে জাতিয়তাবোধের সম্বন্ধ বিষয়ক বিতর্ক) – সংক্ষিপ্ত আলোচনা।
প্রসঙ্গক্রমে ১৮৫৭-র বিদ্রোহের প্রতি শিক্ষিত বাঙালি সমাজের মনোভাব, মহারানীর ঘোষণাপত্র (১৮৫৮) – এই বিষয় দুটিরও আলোচনা করতে হবে।
- টীকা লেখো: মহারানির ঘোষণাপত্র।
- মহারানীর ঘোষণাপত্রের ঐতিহাসিক তাৎপর্য।
- ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের প্রতি শিক্ষিত বাঙালি সমাজের কীরূপ মনোভাব ছিল? অথবা, শিক্ষিত বাঙালি সমাজ কেন ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহকে সমর্থন করেনি?
(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য বিদ্রোহগুলির সময়কাল উল্লেখসহ মানচিত্রে সেগুলির অঞ্চল চিহ্নিতকরণ, বিদ্রোহগুলির সময়সারণি)
৪.২. সভাসমিতির যুগ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ
- সভা সমিতির যুগের বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো।
- ‘সভাসমিতির যুগ’ বলতে কী বোঝ? অথবা, টীকা লেখো – সভাসমিতির যুগ।
(৪.২.ক.) বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা
- বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভার গঠন ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে আলোচনা কর।
- বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভাকে ভারতের প্রথম রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান বলার কারণ কী?
(৪.২.খ.) জমিদার সভা
(৪.২.গ.) ভারত সভা
- টীকা লেখো: ইলবার্ট বিল
- ভারতসভা বা ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান কার্যাবলী বা পদক্ষেপ গুলি উল্লেখ কর। অথবা, ভারতসভার প্রতিবাদ আন্দোলন গুলি উল্লেখ কর।
- ভারতসভার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধিতে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কী ভূমিকা ছিল? অথবা, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কার্যকলাপগুলি সম্পর্কে আলোচনা কর। অথবা, রাজনৈতিক সমিতি হিসেবে ভারতসভার গুরুত্ব লেখ।
(৪.২.ঘ.) হিন্দুমেলা
- হিন্দুমেলার সীমাবদ্ধতাগুলি কী ছিল? অথবা, “হিন্দুমেলা’ কেন জনপ্রিয়তা লাভ করতে পারেনি?
- হিন্দুমেলার উদ্দেশ্য কী ছিল?
- টীকা লেখো- হিন্দুমেলা।
উপরিউক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে এই চারটি উদ্যোগের আলোচনায় জোর দিতে হবে।
(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য সংগঠন ও অন্যান্য তুলনীয় সংগঠনগুলির উল্লেখ সহ সময়সারণী)
৪.৩. লেখায় ও রেখায় জাতীয়তাবোধের বিকাশ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ
(৪.৩.ক.) আনন্দমঠ
(৪.৩.খ.) বর্তমান ভারত
- জাতীয়তাবোধের বিকাশে বিবেকানন্দের অবদান আলোচনা কর। অথবা, স্বামী বিবেকানন্দ কীভাবে স্বদেশবাসীকে স্বদেশ মন্ত্রে দীক্ষিত করতে চেয়েছিলেন?
- ভারতীয় জাতীয়তাবোধের বিকাশে স্বামী বিবেকানন্দের ‘বর্তমান ভারত’ গ্রন্থটির কী ভূমিকা ছিল?
(৪.৩.গ.) গোরা
(৪.৩.ঘ.) ভারতমাতা (চিত্র)
এই তিনটি রচনার ও ছবিটির মধ্যে কিভাবে জাতিয়তাবোধ ফুটে উঠেছে কেবল সেই বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করতে হবে। প্রসঙ্গক্রমে গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যঙ্গচিত্রে ঔপনিবেশিক সমাজের সমালোচনা বিষয়টিও আলোচ্য
(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি)