দশম শ্রেণীর ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে জাতীয়তাবোধের বিকাশে বিবেকানন্দের অবদান আলোচনা করা হল।
জাতীয়তাবোধের বিকাশে বিবেকানন্দের অবদান
প্রশ্ন:- জাতীয়তাবোধের বিকাশে বিবেকানন্দের অবদান আলোচনা কর।
অথবা, স্বামী বিবেকানন্দ কীভাবে স্বদেশবাসীকে স্বদেশ মন্ত্রে দীক্ষিত করতে চেয়েছিলেন?
ভূমিকা :- ভারতবর্ষ যখন পরাধীনতার অন্ধকারে নিমজ্জিত, তখন যাঁরা জাতীয়তাবাদের প্রচার করে দেশবাসীকে স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন, রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের প্রধান শিষ্য স্বামী বিবেকানন্দ তাঁদের মধ্যে অন্যতম। তিনি হতদরিদ্র, নির্যাতিত ভারতবাসীকে মানবপ্রেম ও স্বদেশপ্রেমের মন্ত্রে দীক্ষিত করে তাদের নতুন শক্তিতে জাগিয়ে তোলেন।
আত্মবিশ্বাস
স্বামী বিবেকানন্দ ভারতবাসীকে পরাধীনতার গ্লানি দূর করে আত্মবিশ্বাসী হতে বলেন। তিনি ‘বর্তমান ভারত’ গ্রন্থে দেশবাসীকে বলেন, “ভারতবাসী আমার ভাই, ভারতবাসী আমার প্রাণ, ভারতের দেবদেবী আমার ঈশ্বর, ভারতের সমাজ আমার শিশুশয্যা, আমার যৌবনের উপবন, আমার বার্ধক্যের বারাণসী ; বল ভাই – ভারতের মৃত্তিকা আমার স্বর্গ, ভারতের কল্যাণ আমার কল্যাণ।”
স্বদেশের সংস্কৃতির প্রতি আস্থা
বিবেকানন্দ তাঁর ‘বর্তমান ভারত’ গ্রন্থে পাশ্চাত্য সভ্যতা ও সংস্কৃতির অন্ধ অনুকরণের নিন্দা করেন এবং ভারতবাসীকে নিজ সভ্যতা ও সংস্কৃতির প্রতি আস্থাবান হতে বলেন।
ভারতমাতার বন্দনা
বিবেকানন্দ ভারতবাসীকে বলেন যে, মানুষ জন্ম থেকেই মায়ের জন্য বলিপ্রদত্ত। মা বলতে তিনি দেশমাতাকে বুঝিয়েছেন। তিনি ভারতবাসীকে বলেন যে, অন্যান্য দেবদেবী বাদ দিয়ে আগামী ৫০ বছর ভারতমাতাই যেন সবার একমাত্র আরাধ্য দেবী হন। অধ্যাপক অমলেশ ত্রিপাঠী বলেছেন, “যে দেশপ্রেম বঙ্কিমচন্দ্রে ছিল কবিকল্পনা, বিবেকানন্দের রচনায় তা একটি অবয়ব নিল।”
শিকাগো বক্তৃতা
বিবেকানন্দ ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে আমেরিকার শিকাগো শহরে আয়োজিত বিশ্বধর্ম সম্মেলনে ভারতের অদ্বৈত বেদান্তের কথা বিশ্ববাসীকে শোনান এবং বিশ্ববাসী ভারতের উদার ধর্মীয় ঐতিহ্যের কথা শুনে মুগ্ধ হয়। এতে ভারতীয় ঐতিহ্যের মর্যাদা বৃদ্ধি পায়।
মানবধর্ম প্রচার
বিবেকানন্দ জাতিগঠনের উদ্দেশ্যে মানবধর্মের কথা বলেন। তাঁর ধর্ম হল ‘মানুষ তৈরির ধর্ম’। এই মানুষ তৈরির উদ্দেশ্যেই তিনি ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন।
নবভারতের স্বপ্ন
বিবেকানন্দ ভারতের সাধারণ শ্রমজীবী ও তথাকথিত নীচজাতির উন্নতির মাধ্যমে এক নতুন ভারত গড়ার স্বপ্ন দেখতেন। ঈতিনি বলেন, “নূতন ভারত বেরুক, বেরুক লাঙ্গল ধরে, চাষার কুটির ভেদ করে, জেলে-মালা-মুচি-মেথরের ঝুপড়ির মধ্য হতে, বেরুক মুদির দোকান থেকে, ভুনাওয়ালার উনুনের পাশ থেকে, বেরুক কারখানা থেকে, হাট থেকে, বাজার থেকে, বেরুক ঝোপ-জঙ্গল পাহাড়-পর্বত থেকে।”
ঐক্যবদ্ধ ভারতের স্বপ্ন
বিবেকানন্দ ভারতবাসীকে জাতিভেদ ত্যাগ করে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের উন্নতির জন্য কাজ করতে বলেন। তিনি বলেন যে, অতীতের বিভিন্ন যুগে ভারতে শূদ্ররা নিপীড়িত হয়েছে। কালের চক্রেই একদিন শূদ্ররা ভারতে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করবে। তাই বিভেদ নয়, একতাই ভারতের উন্নতির একমাত্র পথ।
উপসংহার :- ভারতীয় জাতীয়তাবাদের বিকাশে স্বামী বিবেকানন্দের অসামান্য ভূমিকার কথা স্মরণ করে ঐতিহাসিক আর জি প্রধান তাঁকে ‘ভারতীয় জাতীয়তাবাদের জনক’ বলে অভিহিত করেছেন। বিপ্লবী অরবিন্দ ঘোষ বলেছেন, “বিবেকানন্দই আমাদের জাতীয় জীবনের গঠনকর্তা। তিনিই ইহার প্রধান নেতা।”
দশম শ্রেণীর ইতিহাস (চতুর্থ অধ্যায়) সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে অন্যান্য সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর
দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস চতুর্থ অধ্যায়- সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে অন্যান্য সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তরগুলি দেওয়া হল।
দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস চতুর্থ অধ্যায়- সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ
৪.১. ১৮৫৭-র বিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি
- ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহকে সামন্ত শ্রেণির বিদ্রোহ বলার ক্ষেত্রে কী যুক্তি দেওয়া হয়?
- ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহকে ‘ভারতের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ’ বলা যায় কি? যুক্তি দাও।
- মহাবিদ্রোহের প্রকৃতি ও চরিত্র বিশ্লেষণ কর। অথবা,সংক্ষেপে মহাবিদ্রোহের চরিত্র বিশ্লেষণ কর।
- ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহকে জাতীয় বিদ্রোহ বলা যায় কী?
- ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের ব্যর্থতার কারণগুলি কী ছিল?
- ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের সূত্রপাত ও প্রসার সম্পর্কে আলোচনা করো।
- ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের সিপাহি বিদ্রোহের কারণগুলি কী ছিল?
- ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহে কোথায়, কারা নেতৃত্ব দেন?
- ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের সামাজিক কারণগুলি কী ছিল?
- মহাবিদ্রোহের প্রত্যক্ষ কারণ কী ছিল?
- ১৮৫৭-এর মহাবিদ্রোহের অর্থনৈতিক কারণগুলি কী ছিল?
- ১৮৫৭-এর মহাবিদ্রোহের রাজনৈতিক কারণগুলি কী ছিল?
(ওই বিদ্রোহের সঙ্গে জাতিয়তাবোধের সম্বন্ধ বিষয়ক বিতর্ক) – সংক্ষিপ্ত আলোচনা।
প্রসঙ্গক্রমে ১৮৫৭-র বিদ্রোহের প্রতি শিক্ষিত বাঙালি সমাজের মনোভাব, মহারানীর ঘোষণাপত্র (১৮৫৮) – এই বিষয় দুটিরও আলোচনা করতে হবে।
- টীকা লেখো: মহারানির ঘোষণাপত্র।
- মহারানীর ঘোষণাপত্রের ঐতিহাসিক তাৎপর্য।
- ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের প্রতি শিক্ষিত বাঙালি সমাজের কীরূপ মনোভাব ছিল? অথবা, শিক্ষিত বাঙালি সমাজ কেন ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহকে সমর্থন করেনি?
(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য বিদ্রোহগুলির সময়কাল উল্লেখসহ মানচিত্রে সেগুলির অঞ্চল চিহ্নিতকরণ, বিদ্রোহগুলির সময়সারণি)
৪.২. সভাসমিতির যুগ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ
- সভা সমিতির যুগের বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো।
- ‘সভাসমিতির যুগ’ বলতে কী বোঝ? অথবা, টীকা লেখো – সভাসমিতির যুগ।
(৪.২.ক.) বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা
- বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভার গঠন ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে আলোচনা কর।
- বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভাকে ভারতের প্রথম রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান বলার কারণ কী?
(৪.২.খ.) জমিদার সভা
(৪.২.গ.) ভারত সভা
- টীকা লেখো: ইলবার্ট বিল
- ভারতসভা বা ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান কার্যাবলী বা পদক্ষেপ গুলি উল্লেখ কর। অথবা, ভারতসভার প্রতিবাদ আন্দোলন গুলি উল্লেখ কর।
- ভারতসভার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধিতে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কী ভূমিকা ছিল? অথবা, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কার্যকলাপগুলি সম্পর্কে আলোচনা কর। অথবা, রাজনৈতিক সমিতি হিসেবে ভারতসভার গুরুত্ব লেখ।
(৪.২.ঘ.) হিন্দুমেলা
- হিন্দুমেলার সীমাবদ্ধতাগুলি কী ছিল? অথবা, “হিন্দুমেলা’ কেন জনপ্রিয়তা লাভ করতে পারেনি?
- হিন্দুমেলার উদ্দেশ্য কী ছিল?
- টীকা লেখো- হিন্দুমেলা।
উপরিউক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে এই চারটি উদ্যোগের আলোচনায় জোর দিতে হবে।
(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য সংগঠন ও অন্যান্য তুলনীয় সংগঠনগুলির উল্লেখ সহ সময়সারণী)
৪.৩. লেখায় ও রেখায় জাতীয়তাবোধের বিকাশ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ
(৪.৩.ক.) আনন্দমঠ
(৪.৩.খ.) বর্তমান ভারত
(৪.৩.গ.) গোরা
(৪.৩.ঘ.) ভারতমাতা (চিত্র)
এই তিনটি রচনার ও ছবিটির মধ্যে কিভাবে জাতিয়তাবোধ ফুটে উঠেছে কেবল সেই বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করতে হবে। প্রসঙ্গক্রমে গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যঙ্গচিত্রে ঔপনিবেশিক সমাজের সমালোচনা বিষয়টিও আলোচ্য
(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি)