২০২৫ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ইতিহাস বিষয়ে সম্পূর্ণ সিলেবাসের সাজেশন্ ভিত্তিক পিডিএফ নোটস্ নেওয়ার জন্য যোগাযোগ করুণ👇

👉Chat on WhatsApp

মহাবিদ্রোহের প্রকৃতি ও চরিত্র বিশ্লেষণ কর

দশম শ্রেণীর ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে মহাবিদ্রোহের প্রকৃতি ও চরিত্র বিশ্লেষণ করা হল।

Table of Contents

মহাবিদ্রোহের প্রকৃতি ও চরিত্র বিশ্লেষণ

প্রশ্ন:- মহাবিদ্রোহের প্রকৃতি ও চরিত্র বিশ্লেষণ কর।

অথবা, সংক্ষেপে মহাবিদ্রোহের চরিত্র বিশ্লেষণ কর।

ভূমিকা:- ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের ব্রিটিশবিরোধী মহাবিদ্রোহ অত্যন্ত তীব্র হয়ে ওঠে এবং ভারতে ইংরেজ শাসনের ভিতকে কাঁপিয়ে দেয়। এই বিদ্রোহের প্রকৃতি বা চরিত্র সম্পর্কে পণ্ডিতদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে।

সিপাহিদের বিদ্রোহ

স্যার জন লরেন্স, জন সিলি, চার্লস রেক্স প্রমুখ ইউরোপীয় ঐতিহাসিক এবং অক্ষয়কুমার দত্ত, হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়, কিশোরীচাঁদ মিত্র, দাদাভাই নওরোজি প্রমুখ ভারতীয় ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহকে ‘সিপাহি বিদ্রোহ’ বলে অভিহিত করেছেন। তাঁরা বলেছেন, এই বিদ্রোহে যোগদানকারী বিভিন্ন গোষ্ঠীর লক্ষ্য ছিল নিজ নিজ স্বার্থসিদ্ধি করা। এই বিদ্রোহে সারা ভারতের সমাজের সকল শ্রেণির মানুষ যোগ দেয়নি। দেশের শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণির একটি বড়ো অংশ বিদ্রোহকে সমর্থন করেনি। শিখ ও গোরখা সেনারা বিদ্রোহের সময় ইংরেজদের সহায়তা করেছিল। কিশোরীচাঁদ মিত্র বলেছেন, ‘এই বিদ্রোহ ছিল একান্তভাবেই সিপাহিদের অভ্যুত্থান’।

সামন্তদের বিদ্রোহ

রজনীপাম দত্ত, রমেশচন্দ্র মজুমদার, সুরেন্দ্রনাথ সেন, মানবেন্দ্রনাথ রায় প্রমুখ ১৮৫৭-র বিদ্রোহকে রক্ষণশীল ও সামন্ততান্ত্রিক শক্তির অভ্যুত্থান বলে অভিহিত করেছেন। তাঁদের মতে, নানা সাহেব, রাণী লক্ষ্মীবাই, কুনওয়ার সিং প্রমুখ সামন্তশ্রেণির মানুষ এই বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেন। ড. রমেশচন্দ্র মজুমদার বলেছেন যে, এই বিদ্রোহ ছিল ক্ষয়িষ্ণু অভিজাত শ্রেণি ও মৃতপ্রায় সামন্তশ্রেণির ‘মৃত্যুকালীন আর্তনাদ’।

জনসাধারণের অংশগ্রহণ

নর্টন, ম্যালেসন, জন কে প্রমুখ ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহকে একটি ‘গণবিদ্রোহ’ হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন। ড. সুরেন্দ্রনাথ সেন এই বিদ্রোহে সামন্ত নেতাদের নেতৃত্বের কথা স্বীকার করে তার ‘১৮৫৭’ গ্রন্থে বলেছেন যে, এই বিদ্রোহ শেষ পর্যন্ত নানা স্থানে গণবিদ্রোহের আকার নেয়। ভারতের এক বৃহৎ অঞ্চল, বিশেষ করে পশ্চিম বিহার থেকে পূর্ব পাঞ্জাব পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলে বিদ্রোহ বিস্তার লাভ করে। অন্তত কিছুদিনের জন্য হলেও এই অঞ্চলে ব্রিটিশ শাসন মুক্ত হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সাধারণ কৃষক, শ্রমিক, কারিগর, স্বেচ্ছায় এই বিদ্রোহে যোগ দেয়।

জাতীয় বিদ্রোহ

ঐতিহাসিক আউট্রান, ডাফ, রবার্টসন, টোরি দলের নেতা ডিসরেলি, সমাজতন্ত্রবিদ কার্ল মার্কস প্রমুখ এই বিদ্রোহকে জাতীয় বিদ্রোহ বলে অভিহিত করেছেন। ঐতিহাসিক শশীভূষণ চৌধুরী বলেছেন যে, এটি ছিল সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী জাতীয় যুদ্ধ। তাদের মতে, মুজাফফরনগর, বিহার ও উত্তরপ্রদেশে সিপাহিদের সংযোগ ছাড়াই অসামরিক লোকজন ও জমিদার শ্রেণির ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলন সক্রিয় হয়ে ওঠে। সিপাহিরা সিংহাসনচ্যুত মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে ভারতের সম্রাট হিসেবে ঘোষণা করে। ফলে দেশবাসীর মনে দেশপ্রেমের মনোভাব জেগে ওঠে।

স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রথম পদক্ষেপ

বিপ্লবী বিনায়ক দামোদর সাভারকার ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহকে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ বলে অভিহিত করেছেন। কার্ল মার্কস, এঙ্গেলস, পি সি জোশী, অশোক মেহতা, অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, অধ্যাপক সুশোভন সরকার প্রমুখ ১৮৫৭ র বিদ্রোহকে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম বলে অভিহিত করেছেন।

সর্বস্তরে ব্যাপক প্রভাব

ভারতের জাতীয়তাবাদী ঐতিহাসিকগণ এই বিদ্রোহের ব্যাপকতা লক্ষ্য করে একে মহাবিদ্রোহ নামে অভিহিত করেন। হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় একে মহান বিপ্লব বলে অভিহিত করেছেন। এরিক স্টোকস বলেছেন যে, এই বিদ্রোহ ছিল ভারতে ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আন্দোলনের শেষ অধ্যায়। এই আন্দোলনে ইংরেজদের বিতাড়নের কথা ভাবা হয়েছিল।

উপসংহার :- মহাবিদ্রোহের প্রকৃতি কি ছিল তা এককথায় বলা বেশ কষ্টসাধ্য। এই বিদ্রোহের প্রকৃতি নিয়ে যেসব মত উঠে আসে তার প্রত্যেকটি সুনির্দিষ্ট যুক্তি আছে। আবার এই সবের পাল্টা যুক্তিও আছে। তাই সম্পূর্ণভাবে এক কথায় ১৮৫৭ -র বিদ্রোহের প্রকৃতি বলা দুঃসাধ্য।

দশম শ্রেণীর ইতিহাস (চতুর্থ অধ্যায়) সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে অন্যান্য সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস চতুর্থ অধ্যায়- সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে অন্যান্য সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তরগুলি দেওয়া হল।

দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস চতুর্থ অধ্যায়- সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

৪.১. ১৮৫৭-র বিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি

(ওই বিদ্রোহের সঙ্গে জাতিয়তাবোধের সম্বন্ধ বিষয়ক বিতর্ক) – সংক্ষিপ্ত আলোচনা।

প্রসঙ্গক্রমে ১৮৫৭-র বিদ্রোহের প্রতি শিক্ষিত বাঙালি সমাজের মনোভাব, মহারানীর ঘোষণাপত্র (১৮৫৮) – এই বিষয় দুটিরও আলোচনা করতে হবে।

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য বিদ্রোহগুলির সময়কাল উল্লেখসহ মানচিত্রে সেগুলির অঞ্চল চিহ্নিতকরণ, বিদ্রোহগুলির সময়সারণি)

৪.২. সভাসমিতির যুগ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

(৪.২.ক.) বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা

(৪.২.খ.) জমিদার সভা

(৪.২.গ.) ভারত সভা

(৪.২.ঘ.) হিন্দুমেলা

উপরিউক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে এই চারটি উদ্যোগের আলোচনায় জোর দিতে হবে।

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য সংগঠন ও অন্যান্য তুলনীয় সংগঠনগুলির উল্লেখ সহ সময়সারণী)

৪.৩. লেখায় ও রেখায় জাতীয়তাবোধের বিকাশ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

(৪.৩.ক.) আনন্দমঠ

(৪.৩.খ.) বর্তমান ভারত

(৪.৩.গ.) গোরা

(৪.৩.ঘ.) ভারতমাতা (চিত্র)

এই তিনটি রচনার ও ছবিটির মধ্যে কিভাবে জাতিয়তাবোধ ফুটে উঠেছে কেবল সেই বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করতে হবে। প্রসঙ্গক্রমে গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যঙ্গচিত্রে ঔপনিবেশিক সমাজের সমালোচনা বিষয়টিও আলোচ্য

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি)

Leave a Comment