দশম শ্রেণীর ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়-বিশ শতকের ভারতে কৃষক, শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা হতে একা আন্দোলন সম্পর্কে টীকা দেওয়া হল।
একা আন্দোলন সম্পর্কে টীকা
প্রশ্ন:- টীকা লেখ: একা আন্দোলন।
ভূমিকা :- মহাত্মা গান্ধির ডাকে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে অহিংস অসহযোগ আন্দোলন (১৯২০-২২ খ্রি.) শুরু হলে উত্তরপ্রদেশে এই আন্দোলনের ব্যাপক প্রভাব দেখা যায়। এই রাজ্যের অযোধ্যা অঞ্চলে কৃষকদের নিয়ে একা আন্দোলন গড়ে ওঠে।
নামকরণ
১৯২১ খ্রিস্টাব্দের শেষ ও ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের প্রথমদিকে কৃষক আন্দোলন তীব্র হয়ে ওঠে। আন্দোলনকারী কৃষকরা একতাবদ্ধ থাকার শপথ নেওয়ায় এই আন্দোলনের নাম হয় ‘একা’ বা ‘একতা’ আন্দোলন ৷
আন্দোলনের কারণ
একা আন্দোলনের প্রধান কারণগুলি ছিল –
- (১) কৃষকদের ওপর অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ নতুন কর আরোপ।
- (২) কর আদায়ে চরম অত্যাচার।
- (৩) প্রভুর জমি ও খামারে কৃষককে বিনা বেতনে বেগার শ্রম দিতে বাধ্য করা প্রভৃতি।
আন্দোলনের নেতৃত্ব
একা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন মাদারি পাশি ও বাবা গরিবদাস। এই আন্দোলন উত্তরপ্রদেশের উত্তর-পশ্চিম অযোধ্যাঅঞ্চলের হরদৈ, বারাবাকি, সীতাপুর, বারাইচ প্রভৃতি জেলায়ছড়িয়ে পড়ে।
শপথ
আন্দোলনকারীরা শপথ গ্রহণ করে যে, তারা-
- (১) অতিরিক্ত কর দেবে না,
- (২) বেগার শ্রম দেবে না,
- (৩) অপরাধীদের সাহায্য করবে না,
- (৪) জমি থেকে উৎখাত করলেও তারা জমি ছেড়ে যাবে না,
- (৫) তারা পঞ্চায়েতের যাবতীয় সিদ্ধান্ত মেনে নেবে।
কংগ্রেসের ভূমিকা
প্রথমদিকে কংগ্রেস একা আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানালেও কিছুকাল পর এই আন্দোলনে হিংসার প্রবেশ ঘটলে কংগ্রেস ও জাতীয় নেতৃবৃন্দ এই আন্দোলন থেকে নিজেদের সরিয়েনেয়।
উপসংহার:- একা আন্দোলনের নেতৃত্ব থেকে কংগ্রেস ও জাতীয় নেতৃবৃন্দ সরে গেলে আন্দোলন কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে। তীব্র সরকারি দমননীতির ফলে ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাস নাগাদ এই আন্দোলন বন্ধ হয়ে যায়।