বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলন পর্বে কৃষক আন্দোলন সম্পর্কে আলোচনা করো

দশম শ্রেণীর ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়-বিশ শতকের ভারতে কৃষক, শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা হতে বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলন পর্বে কৃষক আন্দোলন সম্পর্কে আলোচনা করা হল।

বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলন পর্বে কৃষক আন্দোলন সম্পর্কে আলোচনা

প্রশ্ন:- বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলন পর্বে কৃষক আন্দোলন সম্পর্কে আলোচনা করো।

ভূমিকা:- দেশপ্রেমিক জমিদার শ্রেণি অসন্তুষ্ট হতে পারে এই ভেবে কংগ্রেস বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলন পর্বে কৃষক আন্দোলন গড়ে তালার চেষ্টা করেনি। কিন্তু তা সত্ত্বেও এই সময় বেশ কিছু জায়গায় কৃষক আন্দোলন গড়ে উঠেছিল।

পূর্ববঙ্গ

বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনকালে পূর্ববঙ্গের দরিদ্র মুসলিম কৃষকরা জমিদারের অতিরিক্ত শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্দোলন গড়ে তোলে। ঢাকা, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ, বাখরগঞ্জ প্রভৃতি এলাকায় হিন্দু জমিদারদের বিরুদ্ধে মুসলিম কৃষকদের আন্দোলন সাম্প্রদায়িক রূপ নেয়।

পাঞ্জাব

লর্ড মিন্টোর শোষণমূলক আইনের প্রতিবাদে ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে পাঞ্জাবের কিছু এলাকায় কৃষকরা আন্দোলনমুখী হয়ে ওঠে। এখানকার শিক্ষিত কৃষকশ্রেণি অন্যান্য কৃষকদের সংঘবদ্ধ করার কাজে বিশেষ ভূমিকা নেয়। লালা লাজপত রায়, অজিত সিংহ প্রমুখও কৃষকদের সাথে আন্দোলনে যোগ দেন।

বিহার

বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময়কালে বিহারের চম্পারণ জেলার মতিহারিবেতিয়া অঞ্চলে শক্তিশালী কৃষক আন্দোলন গড়ে ওঠে। তিনকাঠিয়া ব্যবস্থা অনুসারে সরকার কৃষকদের জোর করে নীলচাষ করতে বাধ্য করলে কৃষকরা সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলনে নামে।

মেবার

মেবারের উদয়পুর অঞ্চলের ‘বিজোলিয়া’ নামে জমিদারি এলাকার কৃষকদের ওপর প্রায় ৮৫ ধরনের কর ও উপকর চাপানো হয়। এর প্রতিবাদে এখানকার অগণিত কৃষক উদয়পুরের মহারানার বিরুদ্ধে কর বন্ধের আন্দোলন শুরু করে। এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন সীতারাম দাস নামে জনৈক সাধু।

উপসংহার :- বঙ্গবঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনের সময় কৃষক সমাজের ক্ষোভ বিক্ষোভ বিচ্ছিন্নভাবে তাদের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে উঠে আসে। কিন্তু কংগ্রেসের সহযোগিতার অভাবে, আবার কোথাও সাম্প্রদায়িক কারণে কৃষকদের এই আন্দোলন ব্যাপক ও সর্বভারতীয় চরিত্র লাভ করতে পারেনি।

1 thought on “বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলন পর্বে কৃষক আন্দোলন সম্পর্কে আলোচনা করো”

Leave a Comment