২০২৫ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ইতিহাস বিষয়ে সম্পূর্ণ সিলেবাসের সাজেশন্ ভিত্তিক পিডিএফ নোটস্ নেওয়ার জন্য যোগাযোগ করুণ👇

👉Chat on WhatsApp

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের কারণ ও গুরুত্ব আলোচনা করো

দশম শ্রেণীর ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়-বিশ শতকের ভারতে কৃষক, শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা হতে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের কারণ ও গুরুত্ব আলোচনা করা হল।

Table of Contents

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের কারণ ও গুরুত্ব আলোচনা

প্রশ্ন:- ভারত ছাড়ো আন্দোলনের কারণ ও গুরুত্ব আলোচনা করো।

ভূমিকা :- স্বাধীনতা লাভের পূর্বে ভারত ছাড়ো আন্দোলন ছিল এদেশের শেষ বৃহত্তম ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলন। গান্ধিজির নেতৃত্বে ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ৮ আগস্ট কংগ্রেসের বোম্বাই অধিবেশনে ভারত ছাড়ো আদোলনের প্রস্তাব গৃহীত হয়।সরকার ৯ আগস্ট ভোরে বোম্বাই স্টেশন থেকে কংগ্রেসের প্রথম শ্রেণির প্রায় সকল নেতাদের গ্রেফতার করলে সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভারত ছাড়ো আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

কারণ

ভারতীয়দের ওপর ব্রিটিশ সরকারের অত্যাচার, সরকারের দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় নীতি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ফলে বেকারত্ব, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, খাদ্য সংকট প্রভৃতি এই আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তৈরি করে।যেমন –

(১) ক্রিপস মিশনের ব্যর্থতা

১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুহলে ব্রিটিশ সরকার ভারতের প্রথম শ্রেণির নেতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার উদ্দেশ্যে ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ২৯ মার্চস্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপসের নেতৃত্বে ভারতে ক্রিপস মিশন পাঠান। এই মিশন জানায় যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ভারতকে ‘ডোমিনিয়ন স্ট্যাটাস’ বা স্বায়ত্তশাসনের মর্যাদা দেওয়া হবে। কিন্তু গান্ধিজি পূর্ণ স্বাধীনতা ছাড়া অন্য কোনো প্রস্তাবে রাজি ছিলেন না। তিনি এই প্রস্তাবটিকে “ফেল পড়া ব্যাংকের ওপর আগামী তারিখের চেক” বলে প্রত্যাখ্যান করেন।

(২) গাম্বিজির ভূমিকা

১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে গান্ধিজি স্পষ্টতই বুঝতে পারেন যে, এখনই ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেওয়ার আদর্শ সময়। এজন্য তিনি ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ৮ আগস্ট ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ‘Do or Die’-এর ডাক দেন।

(৩) ভারতের দিকে জাপানের অগ্রগতি

ভারত ব্রিটিশ উপনিবেশ হিসেবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরোক্ষভাবে জড়িয়ে পড়ে। তাই জাপান দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ব্রিটিশ বাহিনীর মিত্রজোটকে পরাজিত করেভারতের দিকে অগ্রসর হতে শুরু করে। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় নেতারা পূর্ণ স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলনের প্রয়োজন অনুভব করেন।

(৪) দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সৈন্যদের জন্য ভারত থেকে প্রচুর পরিমাণ খাবার পাঠানো হতে থাকে। এর ফলে ভারতে খাদ্যদ্রব্য সহ অন্যান্য পণ্যের মূল্যও যথেষ্ট বৃদ্ধি পায়। মূল্যবৃদ্ধি ভারতীয়দের ক্ষুদ্ধ করে।

(৫) সেনাদের ওপর অত্যাচার

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ভারতীয় সৈন্যদের দূরদেশে বিপদসংকুল যুদ্ধক্ষেত্রগুলিতে পাঠানো হয়। নিয়মিত বেতন না পাওয়া, একই পদে কর্মরত শ্বেতাঙ্গ সৈন্যদের চেয়ে কম বেতন পাওয়া, অত্যন্ত নিম্নমানের খাদ্য সরবরাহ, শ্বেতাঙ্গদের অত্যাচার প্রভৃতি ছিল ভারতীয় সেনাদের নিত্যসঙ্গী। বহু ভারতীয় সৈন্যের যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তাদের কখনও পদোন্নতি বা উচ্চপদে নিয়োগের সুযোগ ছিল না। এইসব ঘটনা ভারতীয়দের ক্ষুদ্ধ করেছিল।

(৬) কৃষকশ্রেণির পুঞ্জীভূত ক্ষোভ

বাংলা, বিহার, আসাম ও উত্তরপ্রদেশ প্রভৃতি স্থানের কৃষকরা ছিল ভূমিহীন, দরিদ্র ও ক্ষেত মজুর। তাদের ওপর করের বোঝা, উৎপন্ন ফসলের ন্যায্যমূল্য না পাওয়া প্রভৃতি ঘটনা তাদের ক্ষুব্ধ করে এবং আন্দোলনে উৎসাহ জোগায়।

(৭) শ্রমিক শ্রেণির পুঞ্জীভূত ক্ষোভ

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেলে ভারতের শ্রমিকরা মজুরি বৃদ্ধির দাবি জানায়। কিন্তু মালিকশ্রেণি তাদের মজুরি বৃদ্ধি করেনি। বরং যুদ্ধের ডামাডোলে শিল্পপণ্য বিক্রি ব্যাহত হলে কলকারখানাগুলি থেকে বহু শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়। ফলে ক্ষুব্ধ শ্রমিকশ্রেণি আন্দোলনের পথে পা বাড়ায়।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের গুরুত্ব

ভারত ছাড়ো আন্দোলন আপাতদৃষ্টিতে ব্যর্থ হলেও এই আন্দোলনের নানা গুরুত্ব ছিল। যেমন –

(১) আন্দোলনের ব্যাপ্তি

সমাজের সর্বস্তরের মানুষ ভারত ছাড়ো আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে। কৃষক শ্রমিক, নারী-পুরুষ, ছাত্রছাত্রী নির্বিশেষে সকলের যোগদানের ফলে এটি প্রকৃত অর্থে গণ আন্দোলনে পরিণত হয়। জ্ঞানেন্দ্র পান্ডে সম্পাদিত ‘The Indian Nation in 1942″ গ্রন্থে ভারত ছাড়ো আন্দোলনকে জাতীয়তাবাদী গণ আন্দোলন বলে অভিহিত করা হয়েছে।

(২) স্বাধীনতার ভিত্তি স্থাপন

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, ভারতবাসী স্বাধীনতা লাভের জন্য প্রস্তুত এবং তা অর্জনের জন্য তারা সব ধরনের ত্যাগ, তিতিক্ষা, অত্যাচার, লাঞ্ছনা—এমনকি মৃত্যুবরণ করতেও প্রস্তুত। ড. অস্বাপ্রসাদ বলেছেন, “১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহ ব্যর্থ হলেও তা ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ভারতের স্বাধীনতার ভিত্তি প্রস্তুত করে।”

(৩) ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তুতি

ভারত ছাড়ো আন্দোলন প্রমাণ করে যে, মুক্তিসংগ্রামে ভারতের জয় অনিবার্য। বড়োলাট লর্ড ওয়াভেল ব্রিটিশ সরকারকে লেখেন, “ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের দিন শেষ হয়েছে। পুনরায় এই ধরনের একটি আন্দোলন হলে তা মোকাবিলা করার শক্তি সরকারের নেই।”

(৪) কংগ্রেসের প্রভাব বৃদ্ধি

ঐতিহাসিক বিপান চন্দ্রের মতে, জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে ৪২-এর আন্দোলন হল চূড়ান্ত পর্যায়। কংগ্রেসের ডাকে ভারত ছাড়ো আন্দোলনে দেশের সর্বস্তরের মানুষ শামিল হয়। ফলে জনমানসে কংগ্রেসের প্রভাব আরও ব্যাপক ও সর্বাত্মক হয়।

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি

উত্তরপ্রদেশ, বিহার, চট্টগ্রাম, শিলচর-সহ বহু স্থানের মুসলিমরা এই আন্দোলনে যোগ দেয়।ফলে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া এইসময় কোনো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ঘটনা ঘটেনি।

উপসংহার :- ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে ভারত ছাড়ো আন্দোলন ছিল এক যুগান্তকারী ঘটনা। বড়োলাট লিনলিথগো বলেছেন, “১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের পরবর্তীকালে এত বড়ো বিদ্রোহ আর হয়নি।” এই আন্দোলন ১৯৪৭ -এর স্বাধীনতার ক্ষেত্র প্রস্তুত করে দেয়।

দশম শ্রেণীর ইতিহাস (ষষ্ঠ অধ্যায়) বিশ শতকের ভারতে কৃষক, শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা হতে অন্যান্য সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস ষষ্ঠ অধ্যায়- বিশ শতকের ভারতে কৃষক, শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা হতে অন্যান্য সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তরগুলি দেওয়া হল।

৬.১. বিশ শতকের ভারতে কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে জাতীয় কংগ্রেস ও বামপন্থী রাজনীতির সংযোগ :

(৬.১.ক.) বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন

(৬.১.খ.) অহিংস অসহযোগ আন্দোলন

(৬.১.গ.) আইন অমান্য আন্দোলন

(৬.১.ঘ.) ভারত ছাড়ো আন্দোলন

(৬.১.ঙ.) একা আন্দোলন

(৬.১.চ.) বারদৌলি সত্যাগ্রহ

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য আন্দোলনগুলির সময়সারণি)

৬.২. বিশ শতকে ভারতে শ্রমিক আন্দোলনের সঙ্গে জাতীয় কংগ্রেস ও বামপন্থী রাজনীতির সংযোগ :

(৬.২.ক.) বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন

(৬.২.খ.) অহিংস অসহযোগ আন্দোলন

(৬.২.গ.) আইন অমান্য আন্দোলন

(৬.২.ঘ.) ভারত ছাড়ো আন্দোলন

(৬.২.ঙ.) ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস্ পার্টি

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য আন্দোলনগুলির সময়সারণি)

৬.৩. বিশ শতকের ভারতে উপনিবেশ বিরোধী আন্দোলনে বামপন্থী রাজনীতির অংশগ্রহণের চরিত্র, বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা

টুকরো কথা

মানবেন্দ্রনাথ রায় ও ভারতের বামপন্থী আন্দোলন

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য আন্দোলনগুলির সময়সারণি)

Leave a Comment