আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চায় ফোটোগ্রাফির ব্যবহার সম্পর্কে আলোচনা

দশম শ্রেণীর ইতিহাস প্রথম অধ্যায়: ইতিহাসের ধারণা হতে আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চায় ফোটোগ্রাফির ব্যবহার সম্পর্কে আলোচনা করা হল।

Table of Contents

আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চায় ফোটোগ্রাফির ব্যবহার সম্পর্কে আলোচনা

প্রশ্ন:- আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চায় ফোটোগ্রাফির ব্যবহার সম্পর্কে আলোচনা করো।

অথবা, আধুনিক ভারতের ইতিহাসের উপাদান হিসেবে ফোটোগ্রাফির গুরুত্ব কী?

ভূমিকা :- ক্যামেরার সাহায্যে কোনো ঘটনা বা বিষয়ের ছবি তোলার প্রক্রিয়া সাধারণভাবে ফোটোগ্রাফি বা আলোকচিত্র নামে পরিচিত। আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চায় বা ইতিহাসের উপাদান হিসেবে ফোটোগ্রাফির ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।

তথ্য প্রদান

ক্যামেরায় তোলা বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার ছবি ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে কাজ করেথাকে। যেমন – জন মুরে, ফেলিক্স বিয়াতো, লাল দীনদয়াল প্রমুখ ফোটোগ্রাফারের তোলা ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের বিভিন্ন ছবিগুলি মহাবিদ্রোহের ইতিহাসের মূল্যবান উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয়। জাতীয় কংগ্রেসের নানা অধিবেশনের ছবিগুলি সেই সময়ের রাজনৈতিক ইতিহাসের দলিলরূপে বিবেচিত হয়।

তথ্যকে সমর্থন

ফোটোগ্রাফ বিভিন্ন ঐতিহাসিক তথ্যকে আরও জোরালো করে তোলে। যেমন – ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় যে ভয়াবহ দাঙ্গা সংঘটিত হয়েছিল বলে তথ্য পাওয়া যায় তাকে আরও জোরালো করে তোলে সেইসময় তোলা দাঙ্গার বিভিন্ন ছবিগুলি।

তথ্যের যথার্থতা নির্ণয়

কোনো ঐতিহাসিক ঘটনা সম্পর্কেলোকমুখে বহু গুজব বা ভ্রান্ত তথ্য ঘুরে বেড়ালেও সেই ঘটনার বিষয়ে ক্যামেরায় তোলা ছবি থেকে সঠিক ঐতিহাসিক তথ্য পাওয়া যেতে পারে। যেমন – ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে দেশভাগএবং তারপর উদ্‌বাস্তুদের জীবন-যন্ত্রণার ভয়াবহতা কোনো কোনো রাজনীতিক ছোটো করে দেখাতে চাইলেও সমকালীন ফোটোগ্রাফগুলি সেই ভয়াবহতার প্রমাণ দেয়।

সতর্কতা অবলম্বন

ইতিহাসের উপাদান হিসেবেফোটোগ্রাফ ব্যবহারের সময় যথেষ্ট সচেতন থাকা উচিত। কারণ, ফোটোগ্রাফার অনেকসময় নিজের দৃষ্টিভঙ্গির ছাপ রাখার উদ্দেশ্যে প্রকৃত ঘটনা থেকে পৃথক ছবি তুলে নতুন কিছু দেখানোর উদ্দেশ্যে বিশেষ বিশেষ কিছু ছবি তুলতে পারেন। সেই ছবিতে ইতিহাসের প্রকৃত তথ্য না-ও থাকতে পারে। যেমন – ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে জিন্নার নেতৃত্বে মুসলিম লিগ পৃথক পাকিস্তানের দাবিতে আন্দোলন শুরু করলেও ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে বোম্বাইয়ে তোলা ছবিতে জিন্না ও গান্ধিজির আন্তরিক সুসম্পর্ক ধরা পড়ে। কিন্তু এই ‘সুসম্পর্ক’ কতটা বাস্তব ছিল তা নিয়ে বিতর্ক আছে।

উপসংহার :- আধুনিক কালের ইতিহাস রচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল ফোটোগ্রাফি। ফোটোগ্রাফির কিছু সীমাবদ্ধতাথাকলেও সাবধানে ফোটোগ্রাফিকে ইতিহাস রচনার কাজে ব্যবহার করলে তা ইতিহাসের সার্থক উপাদান হয়ে উঠতে পারে।

সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

১.১. আধুনিক ইতিহাসচর্চার বৈচিত্র্য

(১.১.ক.) নতুন সামাজিক ইতিহাস

(১.১.খ.) খেলার ইতিহাস

(১.১.গ.) খাদ্যাভাসের ইতিহাস

(১.১.ঘ.) শিল্পচর্চার ইতিহাস (সংগীত, নৃত্য, নাটক, চলচ্চিত্র)

(১.১.ঙ.) পোশাক পরিচ্ছদের ইতিহাস

(১.১.চ.) যানবাহন যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাস

(১.১.ছ.) দৃশ্য শিল্পের ইতিহাস (ছবি আঁকা, ফোটোগ্রাফি)

(১.১.জ.) স্থাপত্যের ইতিহাস

(১.১.ঝ.) স্থানীয় ইতিহাস

(১.১.ঞ.) শহরের ইতিহাস

(১.১.ট.) সামরিক ইতিহাস

(১.১.ঠ.) পরিবেশের ইতিহাস

(১.১.ড.) বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাস

(১.১.ঢ.) নারী ইতিহাস

এইসব ইতিহাসচর্চার ধারার মূল বৈশিষ্ট্যসমূহ অতিসংক্ষিপ্ত আলোচনা করে ইতিহাসের বিভিন্ন দিকের ধারণা।(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি)।

১.২. আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চার উপাদান ব্যবহারের পদ্ধতি

(১.২.ক.) সরকারি নথিপত্র (পুলিশ/গোয়েন্দা/সরকারি আধিকারিকদের প্রতিবেদন/ বিবরণ/চিঠিপত্র)

(১.২.খ.) আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা {সত্তর বৎসর (বিপিনচন্দ্র পাল), জীবনস্মৃতি (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর), জীবনের ঝরাপাতা (সরলা দেবী চৌধুরাণী)}

(১.২.গ.) চিঠিপত্র {ইন্দিরা গান্ধিকে লেখা জওহরলাল নেহরুর চিঠি (Letters from a Father to His Daughter)}

(১.২.ঘ.) সাময়িকপত্র ও সংবাদপত্র (বঙ্গদর্শন এবং সোমপ্রকাশ)

টুকরো কথা

আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চায় ফোটোগ্রাফের ব্যবহার। ইতিহাসের তথ্যসংগ্রহে ইনটারনেট ব্যবহারের সুবিধা-অসুবিধা।

উপরের উপাদানগুলি ব্যবহারের পদ্ধতি বিষয়ের সংক্ষিপ্ত আলোচনা (আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি)।

Leave a Comment