‘নতুন সামাজিক ইতিহাস’-এ কাদের আলোচনা প্রাধান্য পায়? আধুনিককালে কারা নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চাকে জনপ্রিয় করে তুলেছেন ?

দশম শ্রেণীর ইতিহাস প্রথম অধ্যায়: ইতিহাসের ধারণা হতে ‘নতুন সামাজিক ইতিহাস’-এ কাদের আলোচনা প্রাধান্য পায় ও আধুনিককালে কারা নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চাকে জনপ্রিয় করে তুলেছেন তা আলোচনা করা হল।

Table of Contents

‘নতুন সামাজিক ইতিহাস’-এ কাদের আলোচনা প্রাধান্য পায়? আধুনিককালে কারা নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চাকে জনপ্রিয় করে তুলেছেন?

প্রশ্ন:- ‘নতুন সামাজিক ইতিহাস’-এ কাদের আলোচনা প্রাধান্য পায়? আধুনিককালে কারা নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চাকে জনপ্রিয় করে তুলেছেন?

ভূমিকা :- ইতিহাসের আলোচনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল সামাজিক ইতিহাস। বিংশ শতকের নতুন সামাজিক ইতিহাসে সমাজের নিম্নবর্গের সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ, দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষের আলোচনা প্রাধান্য পায়।

নতুন সামাজিক ইতিহাসের চর্চা

বিগত শতকে ১৯৬০-৭০-এর দশকে নতুন সামাজিক ইতিহাসের আলোচনার সূত্রপাত ঘটে। এই সময় থেকে বিভিন্ন ঐতিহাসিক নতুন সামাজিক ইতিহাসকে জনপ্রিয় করে তোলেন। যেমন –

(১) অ্যানাল গোষ্ঠীর ভূমিকা

১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে মার্ক ব্লখ ও লুসিয়েন ফেবর অ্যানালস অব ইকনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল হিস্ট্রি নামে পত্রিকার প্রকাশ করেন। ফ্রান্সের এই অ্যানাল পত্রিকাগোষ্ঠী নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এই গোষ্ঠীর ফার্নান্দ ব্রদেল, লাদুরি প্রমুখ সাধারণ মানুষের পরিসংখ্যান, পরিবার, মনস্তত্ত্ব, সমাজ, সংস্কৃতি, অর্থনীতি প্রভৃতি ইতিহাসের প্রতি দৃষ্টিপাত করেছেন।

(২) মার্কিন ঐতিহাসিকদের ভূমিকা

ইউজিন জেনোভিস, হারবার্ট গুটম্যান প্রমুখ মার্কিন ঐতিহাসিক সমাজের সাধারণ শ্রমিকদের জীবনযাত্রা, ক্রীতদাসপ্রথা, দাস সমাজ প্রভৃতি নিয়ে ইতিহাসচর্চা করেছেন। পাস্ট অ্যান্ড প্রেজেন্ট পত্রিকায় এই ইতিহাসচর্চার নানা প্রমাণ পাওয়া যায়।

(৩) ভারতীয় ঐতিহাসিকদের ভূমিকা

ভাতসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ১৯৮০-র দশক থেকে নিম্নবর্গের ইতিহাস চর্চা (সাবলটার্ন স্টাডিজ) ক্রমে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। রণজিৎ গুহ, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্ঞানেন্দ্র পাণ্ডে, সুমিত সরকার, গৌতম ভদ্র প্রমুখ ঐতিহাসিক জাতিধর্ম নির্বিশেষে সমাজের নিম্নস্তরের মানুষের ইতিহাস চর্চা করে নিম্নবর্গের ইতিহাসকে জনপ্রিয় করে তুলেছেন।

উপসংহার :- নতুন সামাজিক ইতিহাস চর্চায় ইতিহাসের বিষয়বস্তু নির্দিষ্ট গন্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। মার্ক ব্লখ, লুসিয়ান ফেবরপ্রমূখ এই কাজে যে গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নিয়েছিলেন তা আজকের দিনে আরও যথাযথ ও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।

সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

১.১. আধুনিক ইতিহাসচর্চার বৈচিত্র্য

(১.১.ক.) নতুন সামাজিক ইতিহাস

(১.১.খ.) খেলার ইতিহাস

(১.১.গ.) খাদ্যাভাসের ইতিহাস

(১.১.ঘ.) শিল্পচর্চার ইতিহাস (সংগীত, নৃত্য, নাটক, চলচ্চিত্র)

(১.১.ঙ.) পোশাক পরিচ্ছদের ইতিহাস

(১.১.চ.) যানবাহন যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাস

(১.১.ছ.) দৃশ্য শিল্পের ইতিহাস (ছবি আঁকা, ফোটোগ্রাফি)

(১.১.জ.) স্থাপত্যের ইতিহাস

(১.১.ঝ.) স্থানীয় ইতিহাস

(১.১.ঞ.) শহরের ইতিহাস

(১.১.ট.) সামরিক ইতিহাস

(১.১.ঠ.) পরিবেশের ইতিহাস

(১.১.ড.) বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাস

(১.১.ঢ.) নারী ইতিহাস

এইসব ইতিহাসচর্চার ধারার মূল বৈশিষ্ট্যসমূহ অতিসংক্ষিপ্ত আলোচনা করে ইতিহাসের বিভিন্ন দিকের ধারণা।(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি)।

১.২. আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চার উপাদান ব্যবহারের পদ্ধতি

(১.২.ক.) সরকারি নথিপত্র (পুলিশ/গোয়েন্দা/সরকারি আধিকারিকদের প্রতিবেদন/ বিবরণ/চিঠিপত্র)

(১.২.খ.) আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা {সত্তর বৎসর (বিপিনচন্দ্র পাল), জীবনস্মৃতি (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর), জীবনের ঝরাপাতা (সরলা দেবী চৌধুরাণী)}

(১.২.গ.) চিঠিপত্র {ইন্দিরা গান্ধিকে লেখা জওহরলাল নেহরুর চিঠি (Letters from a Father to His Daughter)}

(১.২.ঘ.) সাময়িকপত্র ও সংবাদপত্র (বঙ্গদর্শন এবং সোমপ্রকাশ)

টুকরো কথা

আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চায় ফোটোগ্রাফের ব্যবহার। ইতিহাসের তথ্যসংগ্রহে ইনটারনেট ব্যবহারের সুবিধা-অসুবিধা।

উপরের উপাদানগুলি ব্যবহারের পদ্ধতি বিষয়ের সংক্ষিপ্ত আলোচনা (আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি)।

Leave a Comment