আধুনিক ভারতের ইতিহাসের উপাদান হিসেবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা আত্মজীবনী জীবনস্মৃতির গুরুত্ব

দশম শ্রেণীর ইতিহাস প্রথম অধ্যায়: ইতিহাসের ধারণা হতে আধুনিক ভারতের ইতিহাসের উপাদান হিসেবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা আত্মজীবনী জীবনস্মৃতির গুরুত্ব আলোচনা করা হল।

Table of Contents

আধুনিক ভারতের ইতিহাসের উপাদান হিসেবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা আত্মজীবনী জীবনস্মৃতির গুরুত্ব

প্রশ্ন:- আধুনিক ভারতের ইতিহাসের উপাদান হিসেবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা আত্মজীবনী জীবনস্মৃতির গুরুত্ব কী ?

ভূমিকা :- ভারত -এর আধুনিক ইতিহাস -এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল বিভিন্ন ব্যক্তির লেখা আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা। এক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা আত্মজীবনী ‘জীবনস্মৃতি’ আধুনিক ভারতের ইতিহাসের উপাদান হিসেবে বিশেষ গুরুত্বের দাবি রাখে।

প্রকাশ কাল

এটি প্রথমে প্রবাসী পত্রিকায় ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে এটি গ্ৰন্থাকারে প্রকাশিত হয়।

ঐতিহাসিক গুরুত্ব

এই গ্ৰন্থের ঐতিহাসিক গুরুত্বকে আমরা নিম্নলিখিত ভাবে আলোচনা করতে পারি। যেমন –

  • (i) ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহলজীবনস্মৃতি গ্রন্থে ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহলে বৃহৎ পরিবার, শিশুদের বাল্যকাল, নারীদের স্বাধীনতা প্রভৃতি বিভিন্ন ঘটনার ছবি তুলে ধরা হয়েছে। এগুলি থেকে সমকালীন বাংলার সামাজিক ইতিহাসের নানা তথ্য পাওয়া যায়।
  • (ii) স্বদেশিকতা :- তৎকালীন সময়ে অভিজাত পরিবার গুলি কিভাবে পাশ্চাত্য ভাবধারায় জীবনযাপনের প্রতি অভ্যস্ত ছিল এবং শিক্ষা ও স্বদেশীর প্রতি অনুরাগ কতখানি তা এই গ্রন্থ থেকে জানা যায়।
  • (iii) রাজনৈতিক ঘটনাবলী :- জীবনস্মৃতি’তে কবি রাজনারায়ণ বসুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্বাদেশিকতার গােপনসভা এবং তাতে ঠাকুরবাড়ির বালকদের যােগদান, স্বদেশি দেশলাই কারখানা বা কাপড়ের কল প্রতিষ্ঠায় যুবকদের উদ্যোগ প্রভৃতির উল্লেখ করেছেন।
  • (i) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর জীবনস্মৃতি গ্ৰন্থে নবগােপাল মিত্রের নেতৃত্বে হিন্দুমেলার প্রতিষ্ঠা ও তার কার্যকলাপের এক বিস্তৃত বিবরণ দিয়েছেন। উল্লেখ্য, এই হিন্দমেলাই তৎকালীন ভারতবর্ষে স্বদেশভাবনার অন্যতম কেন্দ্ররূপে গড়ে উঠেছিল।

সীমাবদ্ধতা

এই গ্ৰন্থের সবথেকে বড়ো সীমাবদ্ধতা হল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সমগ্র জীবনের কথা এতে নেই। তাছাড়া রাজনৈতিক ইতিহাস সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য এই গ্ৰন্থ থেকে পাওয়া যায় না।

উপসংহার :- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় “এই স্মৃতি ভাণ্ডারে অত্যন্ত যথাযথভাবে ইতিহাস সংগ্রহের চেষ্টা ব্যর্থ হইতে পারে ……………”। কিন্তু যতটুকু পাওয়া যায়, তার মূল্যও ইতিহাসের ছাত্রদের কাছে অপরিসীম।

সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

১.১. আধুনিক ইতিহাসচর্চার বৈচিত্র্য

(১.১.ক.) নতুন সামাজিক ইতিহাস

(১.১.খ.) খেলার ইতিহাস

(১.১.গ.) খাদ্যাভাসের ইতিহাস

(১.১.ঘ.) শিল্পচর্চার ইতিহাস (সংগীত, নৃত্য, নাটক, চলচ্চিত্র)

(১.১.ঙ.) পোশাক পরিচ্ছদের ইতিহাস

(১.১.চ.) যানবাহন যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাস

(১.১.ছ.) দৃশ্য শিল্পের ইতিহাস (ছবি আঁকা, ফোটোগ্রাফি)

(১.১.জ.) স্থাপত্যের ইতিহাস

(১.১.ঝ.) স্থানীয় ইতিহাস

(১.১.ঞ.) শহরের ইতিহাস

(১.১.ট.) সামরিক ইতিহাস

(১.১.ঠ.) পরিবেশের ইতিহাস

(১.১.ড.) বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাস

(১.১.ঢ.) নারী ইতিহাস

এইসব ইতিহাসচর্চার ধারার মূল বৈশিষ্ট্যসমূহ অতিসংক্ষিপ্ত আলোচনা করে ইতিহাসের বিভিন্ন দিকের ধারণা।(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি)।

১.২. আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চার উপাদান ব্যবহারের পদ্ধতি

(১.২.ক.) সরকারি নথিপত্র (পুলিশ/গোয়েন্দা/সরকারি আধিকারিকদের প্রতিবেদন/ বিবরণ/চিঠিপত্র)

(১.২.খ.) আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা {সত্তর বৎসর (বিপিনচন্দ্র পাল), জীবনস্মৃতি (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর), জীবনের ঝরাপাতা (সরলা দেবী চৌধুরাণী)}

(১.২.গ.) চিঠিপত্র {ইন্দিরা গান্ধিকে লেখা জওহরলাল নেহরুর চিঠি (Letters from a Father to His Daughter)}

(১.২.ঘ.) সাময়িকপত্র ও সংবাদপত্র (বঙ্গদর্শন এবং সোমপ্রকাশ)

টুকরো কথা

আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চায় ফোটোগ্রাফের ব্যবহার। ইতিহাসের তথ্যসংগ্রহে ইনটারনেট ব্যবহারের সুবিধা-অসুবিধা।

উপরের উপাদানগুলি ব্যবহারের পদ্ধতি বিষয়ের সংক্ষিপ্ত আলোচনা (আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি)।

Leave a Comment