সাম্প্রতিককালে শিল্পের ইতিহাসচর্চায় চলচ্চিত্র কিভাবে গুরুত্বপূৰ্ণ

দশম শ্রেণীর ইতিহাস প্রথম অধ্যায়: ইতিহাসের ধারণা হতে সাম্প্রতিককালে শিল্পের ইতিহাসচর্চায় চলচ্চিত্র কিভাবে গুরুত্বপূৰ্ণ হয়ে উঠেছে তা আলোচনা করা হল।

Table of Contents

সাম্প্রতিককালে শিল্পের ইতিহাসচর্চায় চলচ্চিত্র কিভাবে গুরুত্বপূৰ্ণ

প্রশ্ন:- সাম্প্রতিককালে শিল্পের ইতিহাসচর্চায় চলচ্চিত্র কিভাবে গুরুত্বপূৰ্ণ হয়ে উঠেছে?

ভূমিকা :- আধুনিক যুগে সিনেমা বা চলচ্চিত্রকে অনেকেই বিনোদনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম বলে মনে করে থাকেন। অগাস্ট লুমিয়ের ও লুই লুমিয়ের নামে দুই ভাই ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দের ২৮ ডিসেম্বরপ্যারিসে প্রথম বায়োস্কোপের সফল বাণিজ্যিক প্রদর্শনী করেন।

চলচ্চিত্র নির্মাণের কেন্দ্র

বিংশ শতকের প্রথমার্ধে আমেরিকার হলিউড এবং ভারতের বোম্বাই, চলচ্চিত্র নির্মাণের দুটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে ওঠে। দাদাসাহেব ফালকের পরিচালনায় ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম নির্বাক ছবি ‘রাজা হরিশচন্দ্র’ মুক্তি পায়। বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম কেন্দ্র হয়ে ওঠে কলকাতা, বিশেষ করেটালিগঞ্জ।

কাহিনির বৈচিত্র্য

চলচ্চিত্রের কাহিনির বিষয়বস্তু বিভিন্ন ধরনেরহয়ে থাকে। ঐতিহাসিক ঘটনা, সমকালীন সমাজের ঘটনাবলি ও পরিস্থিতি, রাজনৈতিক টানাপোড়েন, ঔপনিবেশিক শাসন, জাতীয়তাবাদ প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয়ে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়। তাই সমকালীন সমাজের ঐতিহাসিক তথ্য চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ফুটে ওঠে। উদাহরণ হিসেবে ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত ‘মেঘে ঢাকা তারা’, ‘সুবর্ণরেখা’ প্রভৃতি সিনেমার কথা বলা যায়। যেগুলিতে দেশভাগের বলি হয়ে পূর্ব পাকিস্তান থেকে আগত উদ্‌বাস্তুদের জীবন-যন্ত্রণা স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

ইউরোপের চলচ্চিত্রের ইতিহাসচর্চা

চলচ্চিত্রের যাত্রাপথের বিবর্তনের ইতিহাস নিয়ে আজকাল যথেষ্ট চর্চা হচ্ছে। এই বিষয়ে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ইংরেজি গ্রন্থ হল পাম কুকের ‘দি সিনেমা বুক’, জিওফ্রে নাওয়েল স্মিথের’দ্য অক্সফোর্ড হিস্ট্রি অব ওয়ার্ল্ড সিনেমা’ প্রভৃতি।

বাংলায় চলচ্চিত্রের ইতিহাসচর্চা

চলচ্চিত্রের ইতিহাসচর্চায় বাংলার খ্যাতি কোনো অংশে কম নয়। এই বিষয়ে ঋত্বিক ঘটকের ‘চলচ্চিত্র, মানুষ এবং আরও কিছু’, সত্যজিৎ রায়ের ‘একেই বলে শুটিং’ ও ‘বিষয় চলচ্চিত্র’ তপন সিংহের ‘চলচ্চিত্র আজীবন’, অপূর্ব কুমার কুন্ডুর ‘ইউরোপের চলচ্চিত্র’, নির্মাল্য আচার্যর ‘শতবর্ষে চলচ্চিত্র’, জাকির হোসেন রাজুর ‘চলচ্চিত্রের চালচিত্র’, ফারহানা মিলির ‘সিনেমা এলো কেমন করে’, সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়ের ‘দেখার রকমফের : ঋত্বিক ও সত্যজিৎ’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য গ্ৰন্থ।

উপসংহার :- চলচ্চিত্র সবযুগেই সমাজের আয়না হিসেবে কাজ করে চলেছে। সাম্প্রতিককালে চলচ্চিত্রের ইতিহাসচর্চা সামাজিক ইতিহাসের উপাদান হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

১.১. আধুনিক ইতিহাসচর্চার বৈচিত্র্য

(১.১.ক.) নতুন সামাজিক ইতিহাস

(১.১.খ.) খেলার ইতিহাস

(১.১.গ.) খাদ্যাভাসের ইতিহাস

(১.১.ঘ.) শিল্পচর্চার ইতিহাস (সংগীত, নৃত্য, নাটক, চলচ্চিত্র)

(১.১.ঙ.) পোশাক পরিচ্ছদের ইতিহাস

(১.১.চ.) যানবাহন যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাস

(১.১.ছ.) দৃশ্য শিল্পের ইতিহাস (ছবি আঁকা, ফোটোগ্রাফি)

(১.১.জ.) স্থাপত্যের ইতিহাস

(১.১.ঝ.) স্থানীয় ইতিহাস

(১.১.ঞ.) শহরের ইতিহাস

(১.১.ট.) সামরিক ইতিহাস

(১.১.ঠ.) পরিবেশের ইতিহাস

(১.১.ড.) বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাস

(১.১.ঢ.) নারী ইতিহাস

এইসব ইতিহাসচর্চার ধারার মূল বৈশিষ্ট্যসমূহ অতিসংক্ষিপ্ত আলোচনা করে ইতিহাসের বিভিন্ন দিকের ধারণা।(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি)।

১.২. আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চার উপাদান ব্যবহারের পদ্ধতি

(১.২.ক.) সরকারি নথিপত্র (পুলিশ/গোয়েন্দা/সরকারি আধিকারিকদের প্রতিবেদন/ বিবরণ/চিঠিপত্র)

(১.২.খ.) আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা {সত্তর বৎসর (বিপিনচন্দ্র পাল), জীবনস্মৃতি (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর), জীবনের ঝরাপাতা (সরলা দেবী চৌধুরাণী)}

(১.২.গ.) চিঠিপত্র {ইন্দিরা গান্ধিকে লেখা জওহরলাল নেহরুর চিঠি (Letters from a Father to His Daughter)}

(১.২.ঘ.) সাময়িকপত্র ও সংবাদপত্র (বঙ্গদর্শন এবং সোমপ্রকাশ)

টুকরো কথা

আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চায় ফোটোগ্রাফের ব্যবহার। ইতিহাসের তথ্যসংগ্রহে ইনটারনেট ব্যবহারের সুবিধা-অসুবিধা।

উপরের উপাদানগুলি ব্যবহারের পদ্ধতি বিষয়ের সংক্ষিপ্ত আলোচনা (আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি)।

Leave a Comment