আধুনিক ভারতের ইতিহাস চর্চার উপাদান হিসেবে বঙ্গদর্শন পত্রিকার গুরুত্ব

দশম শ্রেণীর ইতিহাস প্রথম অধ্যায়: ইতিহাসের ধারণা হতে আধুনিক ভারতের ইতিহাস চর্চার উপাদান হিসেবে বঙ্গদর্শন পত্রিকার গুরুত্ব আলোচনা করা হল।

Table of Contents

আধুনিক ভারতের ইতিহাস চর্চার উপাদান হিসেবে বঙ্গদর্শন পত্রিকার গুরুত্ব

প্রশ্ন:- আধুনিক ভারতের ইতিহাস চর্চার উপাদান হিসেবে বঙ্গদর্শন পত্রিকার গুরুত্ব আলোচনা কর।

সূচনা :- ভারতের আধুনিক ইতিহাস -এর উপাদান হিসেবে সমসাময়িকপত্র ও সংবাদপত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। উনিশ শতকে বাংলায় প্রকাশিত পত্রিকাগুলির মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয় পত্রিকা ছিল বঙ্গদর্শন।

বঙ্গদর্শন পত্রিকার প্রকাশনা

১৮৭২ খ্রিস্টাব্দের ১২ ই এপ্রিল সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র -এর সম্পাদনায় কলকাতার ভবানীপুরের পিপুলপাতি লেনের প্রেস থেকে বঙ্গদর্শন পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়। পরে সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, শ্রীশচন্দ্র মজুমদার ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই পত্রিকার সম্পাদনা করেন।

বঙ্গদর্শন পত্রিকার ঐতিহাসিক গুরুত্ব

বঙ্গদর্শন পত্রিকা থেকে সমকালীন বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান পাওয়া যায়।

(১) সমকালীন তথ্য

এই পত্রিকা থেকে সমকালীন সমাজ, অর্থনীতি,‌ রাজনীত, শিক্ষা, ধর্ম, সংস্কার প্রভৃতি বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়। এই পত্রিকা থেকে ব্রিটিশ সরকারের শাসন ও শোষণের পরিচয় পাওয়া যায়।

(২) বাঙালির স্বদেশ চেতনা

বঙ্গদর্শন পত্রিকাটি বাঙালি জাতির মধ্যে স্বদেশ চেতনার বিকাশ ঘটায়। এই পত্রিকায় বঙ্কিমচন্দ্রের লেখা বন্দেমাতরম সঙ্গীতটি প্রথম প্রকাশিত হয়। এই গানটি পরবর্তীকালে বাঙালি তথা ভারত -এর বিপ্লবী ও জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মূলমন্ত্রে পরিণত হয়েছিল।

(৩) সমাজতান্ত্রিক ভাবধারার প্রসার

এই পত্রিকায় সাম্য সহ বিভিন্ন প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। এর ফলে বাঙালি সমাজে সমাজতান্ত্রিক ভাবধারার প্রসার ঘটে।

(৪) বাঙালি সমাজের মেলবন্ধন

বঙ্গদর্শন পত্রিকাটি সমকালীন বাঙালি জাতির উচ্চশিক্ষিত সম্প্রদায়ের চিন্তাধারা তুলে ধরত যা, অসংখ্য সাধারণ পাঠক ও শ্রোতার সঙ্গে উচ্চশিক্ষিত ও সাধারণ বাঙালির ভাবধারার মেলবন্ধন ঘটাতে সাহায্য করেছিল।

(৫) উদারনৈতিক বাঙালির পত্রিকা

বঙ্গদর্শন ছিল মধ্যবিত্ত উদারপন্থী বাঙালির পত্রিকা, বঙ্কিমচন্দ্রের কমলাকান্তের দপ্তর এই পত্রিকায় প্রকাশিত হয় এবং তখনকার প্রখ্যাত লেখক চন্দ্রনাথ বসু, রামনাথ সেন, দীনবন্ধু মিত্র প্রমুখের লেখাও বঙ্গদর্শনে প্রকাশিত হত।

মূল্যায়ন:- পরিশেষে বলা যায় যে অতি জনপ্রিয় বঙ্গদর্শন পত্রিকা বাঙালি জাতির মনে নতুন উদ্দীপনা উৎসাহ ও সমাজতান্ত্রিক ভাবধারা সঞ্চার করেছিল। যার ফলে নতুন সমাজ গঠনের পক্ষে সহায়তা হয়েছিল।

সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

১.১. আধুনিক ইতিহাসচর্চার বৈচিত্র্য

(১.১.ক.) নতুন সামাজিক ইতিহাস

(১.১.খ.) খেলার ইতিহাস

(১.১.গ.) খাদ্যাভাসের ইতিহাস

(১.১.ঘ.) শিল্পচর্চার ইতিহাস (সংগীত, নৃত্য, নাটক, চলচ্চিত্র)

(১.১.ঙ.) পোশাক পরিচ্ছদের ইতিহাস

(১.১.চ.) যানবাহন যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাস

(১.১.ছ.) দৃশ্য শিল্পের ইতিহাস (ছবি আঁকা, ফোটোগ্রাফি)

(১.১.জ.) স্থাপত্যের ইতিহাস

(১.১.ঝ.) স্থানীয় ইতিহাস

(১.১.ঞ.) শহরের ইতিহাস

(১.১.ট.) সামরিক ইতিহাস

(১.১.ঠ.) পরিবেশের ইতিহাস

(১.১.ড.) বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাস

(১.১.ঢ.) নারী ইতিহাস

এইসব ইতিহাসচর্চার ধারার মূল বৈশিষ্ট্যসমূহ অতিসংক্ষিপ্ত আলোচনা করে ইতিহাসের বিভিন্ন দিকের ধারণা।(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি)।

১.২. আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চার উপাদান ব্যবহারের পদ্ধতি

(১.২.ক.) সরকারি নথিপত্র (পুলিশ/গোয়েন্দা/সরকারি আধিকারিকদের প্রতিবেদন/ বিবরণ/চিঠিপত্র)

(১.২.খ.) আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা {সত্তর বৎসর (বিপিনচন্দ্র পাল), জীবনস্মৃতি (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর), জীবনের ঝরাপাতা (সরলা দেবী চৌধুরাণী)}

(১.২.গ.) চিঠিপত্র {ইন্দিরা গান্ধিকে লেখা জওহরলাল নেহরুর চিঠি (Letters from a Father to His Daughter)}

(১.২.ঘ.) সাময়িকপত্র ও সংবাদপত্র (বঙ্গদর্শন এবং সোমপ্রকাশ)

টুকরো কথা

আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চায় ফোটোগ্রাফের ব্যবহার। ইতিহাসের তথ্যসংগ্রহে ইনটারনেট ব্যবহারের সুবিধা-অসুবিধা।

উপরের উপাদানগুলি ব্যবহারের পদ্ধতি বিষয়ের সংক্ষিপ্ত আলোচনা (আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি)।

Leave a Comment