স্থানীয় ইতিহাস চর্চা সম্পর্কে আলোচনা

দশম শ্রেণীর ইতিহাস প্রথম অধ্যায়: ইতিহাসের ধারণা হতে স্থানীয় ইতিহাস চর্চা সম্পর্কে আলোচনা করা হল।

Table of Contents

স্থানীয় ইতিহাস চর্চা সম্পর্কে আলোচনা

প্রশ্ন:- স্থানীয় ইতিহাস চর্চা সম্পর্কে আলোচনা করো।

ভূমিকা :- বিগত শতকেও জাতি, দেশ বা মহাদেশের অতীত ঘটনাবলির আলোচনা ও বিশ্লেষণ ইতিহাসচর্চার প্রচলিত ও স্বীকৃত প্রথা ছিল। দেশ বা জাতির অভ্যন্তরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্থানীয় অঞ্চলের ইতিহাসচর্চা তখন বিশেষ গুরুত্ব পেত না।

স্থানীয় ইতিহাসের গুরুত্ব

ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিভিন্ন স্থান, অঞ্চল বা সম্প্রদায়ের ইতিহাস একত্রিত হয়ে কোনো দেশের জাতীয় ইতিহাস গড়ে ওঠে। তাই বিংশ শতকে স্থানীয় ইতিহাস ও ইতিহাসচর্চা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

স্থানীয় ইতিহাসের বিষয়

বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্থানীয় ইতিহাসের চর্চা করা হয়ে থাকে। স্থানীয় অঞ্চলের আর্থসামাজিক বিবর্তন, শিল্প-স্থাপত্য, লোকসংস্কৃতি, স্থানীয় শাসকের ইতিবৃত্ত প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয় স্থানীয় ইতিহাসের আলোচনায় উঠে আসে।

যাচাইকরণ

স্থানীয় ইতিহাসচর্চার প্রধান উপাদান হল মৌখিক উপাদান। কিন্তু কালের ধারায় মৌখিক উপাদানে বহু কল্পনা ও অতিকথার প্রবেশ ঘটে। তাই যথেষ্ট সাবধানতার সঙ্গে মৌখিক উপাদানগুলি যাচাই করে তারপর সেগুলি ইতিহাসের তথ্য হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।

জেলাস্তরের ইতিহাস চর্চা

ইতিহাসচর্চার একটি উল্লেখযোগ্য ধারা হল জেলাস্তরের ইতিহাসচর্চা। বাংলায় দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন গবেষক এই বিষয়ে চর্চা করছেন। কালীকমল সার্বভৌমের’সে ইতিহাস বগুড়ার বৃত্তান্ত’, কুমুদনাথ মল্লিকের’নদীয়া কাহিনি’, নিখিলনাথ রায়ের’মুর্শিদাবাদ কাহিনি’, সতীশচন্দ্র মিত্রর’যশোহর খুলনার ইতিহাস’ কালীনাথ চৌধুরীর’রাজশাহীর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস’, শ্রীকেদারনাথ মজুমদারের’ময়মনসিংহের ইতিহাস ও ময়মনসিংহের বিবরণ প্রভৃতিগ্ৰন্থ এই প্রসঙ্গে বিশেষ উল্লেখযোগ্য।

ক্ষুদ্র অঞ্চলের ইতিহাসচর্চা

বর্তমানে জেলাস্তর থেকে ক্ষুদ্রস্তর নিয়েও ইতিহাসচর্চা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এরূপ ইতিহাসচর্চার দৃষ্টান্ত হল ড. রতনলাল চক্রবর্তীর’ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রন্থিত ইতিহাস’, ড. খগেন্দ্রনাথ বসুর ‘দৌলতপুরের বিবরণ’, বিপুলরঞ্জন সরকার রচিত ‘চাকদহ রামলাল একাডেমি: পট ও পটভূমিকা’ প্রভৃতি।

উপসংহার :- বিভিন্ন স্থানের স্থানীয় বা আঞ্চলিক ইতিহাসের ওপর ভিত্তি করে কোনো দেশের জাতীয় ইতিহাস রচিত হয়। তাই স্থানীয় ইতিহাসচর্চা ছাড়া জাতীয় ইতিহাসের চর্চা করা খুবই কষ্টকর।

সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

১.১. আধুনিক ইতিহাসচর্চার বৈচিত্র্য

(১.১.ক.) নতুন সামাজিক ইতিহাস

(১.১.খ.) খেলার ইতিহাস

(১.১.গ.) খাদ্যাভাসের ইতিহাস

(১.১.ঘ.) শিল্পচর্চার ইতিহাস (সংগীত, নৃত্য, নাটক, চলচ্চিত্র)

(১.১.ঙ.) পোশাক পরিচ্ছদের ইতিহাস

(১.১.চ.) যানবাহন যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাস

(১.১.ছ.) দৃশ্য শিল্পের ইতিহাস (ছবি আঁকা, ফোটোগ্রাফি)

(১.১.জ.) স্থাপত্যের ইতিহাস

(১.১.ঝ.) স্থানীয় ইতিহাস

(১.১.ঞ.) শহরের ইতিহাস

(১.১.ট.) সামরিক ইতিহাস

(১.১.ঠ.) পরিবেশের ইতিহাস

(১.১.ড.) বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাস

(১.১.ঢ.) নারী ইতিহাস

এইসব ইতিহাসচর্চার ধারার মূল বৈশিষ্ট্যসমূহ অতিসংক্ষিপ্ত আলোচনা করে ইতিহাসের বিভিন্ন দিকের ধারণা।(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি)।

১.২. আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চার উপাদান ব্যবহারের পদ্ধতি

(১.২.ক.) সরকারি নথিপত্র (পুলিশ/গোয়েন্দা/সরকারি আধিকারিকদের প্রতিবেদন/ বিবরণ/চিঠিপত্র)

(১.২.খ.) আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা {সত্তর বৎসর (বিপিনচন্দ্র পাল), জীবনস্মৃতি (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর), জীবনের ঝরাপাতা (সরলা দেবী চৌধুরাণী)}

(১.২.গ.) চিঠিপত্র {ইন্দিরা গান্ধিকে লেখা জওহরলাল নেহরুর চিঠি (Letters from a Father to His Daughter)}

(১.২.ঘ.) সাময়িকপত্র ও সংবাদপত্র (বঙ্গদর্শন এবং সোমপ্রকাশ)

টুকরো কথা

আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চায় ফোটোগ্রাফের ব্যবহার। ইতিহাসের তথ্যসংগ্রহে ইনটারনেট ব্যবহারের সুবিধা-অসুবিধা।

উপরের উপাদানগুলি ব্যবহারের পদ্ধতি বিষয়ের সংক্ষিপ্ত আলোচনা (আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি)।

Leave a Comment