ইতিহাসের উপাদান হিসেবে কন্যা ইন্দিরা গান্ধীকে লেখা পিতা জওহরলাল নেহরুর চিঠিগুলি গুরুত্ব

দশম শ্রেণীর ইতিহাস প্রথম অধ্যায়: ইতিহাসের ধারণা হতে ইতিহাসের উপাদান হিসেবে কন্যা ইন্দিরা গান্ধীকে লেখা পিতা জওহরলাল নেহরুর চিঠিগুলি গুরুত্ব আলোচনা করা হল।

Table of Contents

ইতিহাসের উপাদান হিসেবে কন্যা ইন্দিরা গান্ধীকে লেখা পিতা জওহরলাল নেহরুর চিঠিগুলি গুরুত্ব

প্রশ্ন:- ইতিহাসের উপাদান হিসেবে কন্যা ইন্দিরা গান্ধীকে লেখা পিতা জওহরলাল নেহরুর চিঠিগুলি গুরুত্ব কী?

সূচনা :- ভারতের আধুনিক ইতিহাস -এর অন্যতম উপাদান হিসেবে ব্যক্তিগত চিঠিপত্র নিঃসন্দেহে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। এরূপ একটি উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিগত চিঠি পত্র হল “লেটার্স ফ্রম আ ফাদার টু হিজ ডটার”।

প্রেক্ষাপট

১৯২৮ খ্রিঃ জওহরলাল নেহেরু তাঁর দশ বছরের কন্যা ইন্দিরাকে ধারাবাহিক ভাবে ৩০ টি চিঠি পাঠিয়ে ছিলেন। এই চিঠিগুলি ১৯২৯ খ্রিঃ একত্রিত হয়ে একটি বইয়ের আকারে প্রকাশিত হয়। এই বইটিরই নাম ছিল “Letters from a Father to his Daughter”। মুন্সী প্রেমচাঁদ এগুলি হিন্দিতে অনুবাদ করেন।

ঐতিহাসিক গুরুত্ব

ইন্দিরাকে লেখা জওহরলাল নেহেরুর চিঠি গুলির গুরুত্ব অপরিসীম।

(১) চিঠিপত্র সেন্সর

চিঠিপত্র থেকে জওহরলাল নেহেরুর স্বাধীনতা সংগ্রাম ও কারাবরণের কথা যেমন জানা যায়, তেমনি সেই সময় কারাগারে জেলবন্দিদের যে ঘন ঘন চিঠি লেখা যেত না সে সম্পর্কেও অনেক তথ্য পাওয়া যায়।

(২) পিতার উপদেশ

১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে জওহরলাল নেহেরু এলাহাবাদের জেল থেকে তার দশ বছর বয়সী কন্যা ইন্দিরা গান্ধীকে যে চিঠিগুলি লিখেছিলেন সেগুলিতে কন্যার প্রতি একজন স্নেহময় পিতার অমূল্য তত্ত্বাবধান ও উপদেশ আছে।

(৩) অর্থনৈতিক দুর্দশা

এই চিঠি গুলিতে তিনি ভারত -এর অর্থনৈতিক বৈষম্য, খাদ্য সংকট, দারিদ্র্য প্রভৃতি বিভিন্ন দিক এবং তার কারণ গুলিও তুলে ধরেন।

(৪) সভ্যতার প্রতিষ্ঠা

বুদ্ধি কিভাবে মানুষকে অন্যান্য প্রাণীদের থেকে চতুর ও শক্তিশালী করে তুলল, কিভাবে ধর্ম বিশ্বাসের প্রচলন হল, কিভাবে ভাষার উদ্ভব হল, প্রাচীনকালে কিভাবে সমাজ, সভ্যতা, রাজতন্ত্র ও রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা হল তা খুব সহজ ভাবে এই পত্রগুলির মাধ্যমে তিনি তাঁর কন্যার কাছে তুলে ধরেন।

 (৫) ধর্মগত দিক

নেহেরু তার কন্যাকে লেখা চিঠিতে ধর্ম নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন। কারণ ব্রিটিশ শাসিত ভারতে হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা, সাম্প্রদায়িক টানাপড়েন ও হানাহানি থেকে মুক্তির জন্য ধর্ম নিরপেক্ষ নীতিকে তিনি প্রাধান্য দিয়েছেন।

(৬) জাতিভেদ প্রথা

চিঠিতে জাতি বা বর্ণভেদ গত বৈষম্যের কারণ বিশ্লেষণ প্রসঙ্গে জলবায়ু দিকটিকে বিচার করে বর্ণ বৈষম্যের বিরোধিতার কথা তিনি উল্লেখ করেছেন।

মূল্যায়ন :- ভারতবর্ষের ঔপনিবেশিক শাসন, ভারতে সভ্যতার অগ্রগতি, আর্যদের আগমন, রামায়ণ ও মহাভারতের আদর্শ, শক্তিশালী রাজবংশ প্রতিষ্ঠা প্রভৃতি নানা বিষয় এই চিঠিপত্রে স্থান পেয়েছে যা এই চিঠির গুরুত্বকে অমূল্য করেছে।

সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

১.১. আধুনিক ইতিহাসচর্চার বৈচিত্র্য

(১.১.ক.) নতুন সামাজিক ইতিহাস

(১.১.খ.) খেলার ইতিহাস

(১.১.গ.) খাদ্যাভাসের ইতিহাস

(১.১.ঘ.) শিল্পচর্চার ইতিহাস (সংগীত, নৃত্য, নাটক, চলচ্চিত্র)

(১.১.ঙ.) পোশাক পরিচ্ছদের ইতিহাস

(১.১.চ.) যানবাহন যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাস

(১.১.ছ.) দৃশ্য শিল্পের ইতিহাস (ছবি আঁকা, ফোটোগ্রাফি)

(১.১.জ.) স্থাপত্যের ইতিহাস

(১.১.ঝ.) স্থানীয় ইতিহাস

(১.১.ঞ.) শহরের ইতিহাস

(১.১.ট.) সামরিক ইতিহাস

(১.১.ঠ.) পরিবেশের ইতিহাস

(১.১.ড.) বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাস

(১.১.ঢ.) নারী ইতিহাস

এইসব ইতিহাসচর্চার ধারার মূল বৈশিষ্ট্যসমূহ অতিসংক্ষিপ্ত আলোচনা করে ইতিহাসের বিভিন্ন দিকের ধারণা।(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি)।

১.২. আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চার উপাদান ব্যবহারের পদ্ধতি

(১.২.ক.) সরকারি নথিপত্র (পুলিশ/গোয়েন্দা/সরকারি আধিকারিকদের প্রতিবেদন/ বিবরণ/চিঠিপত্র)

(১.২.খ.) আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা {সত্তর বৎসর (বিপিনচন্দ্র পাল), জীবনস্মৃতি (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর), জীবনের ঝরাপাতা (সরলা দেবী চৌধুরাণী)}

(১.২.গ.) চিঠিপত্র {ইন্দিরা গান্ধিকে লেখা জওহরলাল নেহরুর চিঠি (Letters from a Father to His Daughter)}

(১.২.ঘ.) সাময়িকপত্র ও সংবাদপত্র (বঙ্গদর্শন এবং সোমপ্রকাশ)

টুকরো কথা

আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চায় ফোটোগ্রাফের ব্যবহার। ইতিহাসের তথ্যসংগ্রহে ইনটারনেট ব্যবহারের সুবিধা-অসুবিধা।

উপরের উপাদানগুলি ব্যবহারের পদ্ধতি বিষয়ের সংক্ষিপ্ত আলোচনা (আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি)।

Leave a Comment