ধর্ম ও সমাজ সংস্কার আন্দোলনে ব্রাহ্মসমাজের সীমাবদ্ধতা

দশম শ্রেণীর ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায়-সংস্কার: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা হতে ধর্ম ও সমাজ সংস্কার আন্দোলনে ব্রাহ্মসমাজের সীমাবদ্ধতা গুলি কি ছিল তা আলোচনা করা হল।

ধর্ম ও সমাজ সংস্কার আন্দোলনে ব্রাহ্মসমাজের সীমাবদ্ধতা

প্রশ্ন:- ধর্ম ও সমাজ সংস্কার আন্দোলনে ব্রাহ্মসমাজের সীমাবদ্ধতা গুলি কি ছিল?

ভূমিকা :- উনিশ শতকের বাংলার হিন্দুধর্ম ও সমাজ সংস্কারের ক্ষেত্রে ব্রাহ্মসমাজের গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। কিন্তু ধর্ম ও সমাজ সংস্কার আন্দোলনে ব্রাহ্মসমাজের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে অবহিত থাকা জরুরি।

সীমাবদ্ধ প্রসার

ধর্ম ও সমাজ সংস্কারের ক্ষেত্রে ব্রাহ্মসমাজের আন্দোলন সমাজের সর্বস্তরের সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রসারিত হয়নি। ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে কেশবচন্দ্রের মৃত্যুকালে ব্রাহ্মসমাজের তিনটি শাখা মিলিয়ে মোট সদস্যসংখ্যা ছিল মাত্র ৬৪০০ জন।

শহুরে আন্দোলন

ব্রাহ্মসমাজের আন্দোলন মূলত শহরাঞ্চলের মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। বৃহত্তর গ্রামবাংলায় এই আন্দোলনের প্রসার ঘটানোর বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

শিক্ষিত মানুষের আন্দোলন

ব্রাহ্মসমাজের আন্দোলন মূলত শিক্ষিত মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। সমাজের অগণিত অশিক্ষিত বা স্বল্পশিক্ষিত মানুষদের এই আন্দোলনে শামিল করার বিশেষ চেষ্টা করা হয়নি।

ঐক্যের অভাব

ব্রাহ্মসমাজের নেতাদের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে মতভেদ এই আন্দোলনের যথেষ্ট ক্ষতি করে। প্রথমে দেবেন্দ্রনাথ-কেশবচন্দ্র বিরোধ এবং পরে কেশবচন্দ্রের সঙ্গে তাঁর অনুগামীদের বিরোধ ও মতভেদ ব্রাহ্মসমাজের আন্দোলনের গতিকে দুর্বল করে দেয়।

উপসংহার :- সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও ব্রাহ্মসমাজের অবদানকে অস্বীকার করা যায় না। উনিশ শতকে বাঙালি হিন্দুধর্ম ও সমাজ যখন মধ্যযুগীয় অন্ধকারে ডুবেছিল তখন ব্রাহ্মসমাজের আন্দোলন তাকে আলোর পথে নিয়ে এসেছিল।

Leave a Comment