২০২৫ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ইতিহাস বিষয়ে সম্পূর্ণ সিলেবাসের সাজেশন্ ভিত্তিক পিডিএফ নোটস্ নেওয়ার জন্য যোগাযোগ করুণ (দাম প্রতি ক্লাস ৯৯ টাকা)।

👉Chat on WhatsApp

ঊনবিংশ শতাব্দীর সমাজসংস্কার ও শিক্ষাবিস্তারে বিদ্যাসাগরের অবদান

দশম শ্রেণীর ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায়-সংস্কার: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা হতে ঊনবিংশ শতাব্দীর সমাজসংস্কার ও শিক্ষাবিস্তারে বিদ্যাসাগরের অবদান আলোচনা করা হল।

Table of Contents

ঊনবিংশ শতাব্দীর সমাজসংস্কার ও শিক্ষাবিস্তারে বিদ্যাসাগরের অবদান

প্রশ্ন:- ঊনবিংশ শতাব্দীর সমাজসংস্কার ও শিক্ষাবিস্তারে বিদ্যাসাগরের অবদান আলোচনা কর।

ভূমিকা :- ঊনবিংশ শতকে ভারতে বিরল যে কয়েকজন ধর্মনিরপেক্ষ সমাজ সংস্কারকের আবির্ভাব ঘটেছিল তাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ছিলেন পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। তার কাছে মানুষই ছিল মুখ্য তাই মানুষের মুক্তির জন্য তিনি আজীবন সংগ্রাম করেছেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতে, এই ভীরুর দেশে তিনিই ছিলেন একমাত্র পুরুষ সিংহ।

সমাজসংস্কার

সমাজসংস্কারের কাজে তাঁর আন্তরিক উদ্যোগ বিশেষ প্রশংসার দাবি রাখে। এক্ষেত্রে তার গৃহীত পদক্ষেপ গুলি হল –

(১) বর্ণবৈষম্য দূরীকরণ

উনিশ শতকের ভারতীয় সমাজে প্রবল জাতিভেদ প্রথা ও বর্ণবৈষম্য সমাজকে দুর্বল করেছিল। বিদ্যাসাগর এই প্রথা দূর করেন। আগে কেবলমাত্র ব্রাহ্মণ ও বৈদ্য সন্তানরাই সংস্কৃত কলেজে ভর্তি হতে পারত। বিদ্যাসাগর এই প্রথা বাতিল করে সংস্কৃত কলেজের দরজা সকল বর্ণের হিন্দু ছাত্রদের জন্য খুলে দেন।

(২) বিধবাবিবাহের সমর্থনে আন্দোলন

তৎকালীন সমাজে বিধবাদের পুনর্বিবাহ স্বীকৃত ছিল না। বিদ্যাসাগর হিন্দু বাল্যবিধবাদের জীবনের করুণ দশা দেখে ব্যথিত হন এবং বিধবাবিবাহ প্রবর্তনের উদ্দেশ্যে আন্দোলনে নামেন।

(i) জনমত গঠন

বিদ্যাসাগর ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে বিধবাবিবাহের সমর্থনে জনমত গঠন করতে থাকেন। তিনি “বিধবা বিবাহ প্রচলিত হওয়া উচিত কিনা এতদ্বিবিষয়ক প্রস্তাব’ নামে একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেন। তিনি ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকায় বিধবাবিবাহ বিষয়ক প্রবন্ধ প্রকাশ করেন।

(ii) সরকারের কাছে আবেদন

সমাজে বিধবা বিবাহকে আইনসিদ্ধ করার উদ্দেশ্যে তিনি গণস্বাক্ষর গ্রহণ করে একটি আবেদনপত্র সরকারের কাছে জমা দেন। অবশেষে ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দের ১৬ই জুলাই লর্ড ক্যানিং ‘বিধবাবিবাহ আইন’ পাস করে বিধবাবিবাহকে আইনি স্বীকৃতি দেন।

(iii) বিধবাবিবাহের প্রচলন

১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দের ৭ ডিসেম্বর বিদ্যাসাগরের উদ্যোগে কলকাতায় শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন বর্ধমানের জনৈক বিধবা কালীমতীকে বিবাহ করার মধ্য দিয়ে প্রথম বিধবাবিবাহ সম্পন্ন হয়। ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে বিদ্যাসাগর নিজ পুত্র নারায়ণচন্দ্রকে ভবসুন্দরী নামে এক বিধবার সঙ্গে বিবাহ দেন।

(৩) বহুবিবাহের বিরোধিতা

তৎকালীন হিন্দু সমাজে প্রচলিত বহুবিবাহের বিরুদ্ধেও বিদ্যাসাগর প্রতিবাদ জানান।

(i) সরকারের কাছে আবেদন

বহুবিবাহ প্রথা নিষিদ্ধ করার আবেদন জানিয়ে তিনি ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে ৫০ হাজার মানুষের স্বাক্ষর সংবলিত এক আবেদনপত্র সরকারের কাছে পাঠান।

(ii) প্রচার

বিদ্যাসাগর ১৮৭১ খ্রিস্টাব্দে বহুবিবাহের বিরুদ্ধে দুটি পুস্তিকা প্রকাশ করেন এবং প্রমাণ করার চেষ্টা করেন যে, বহুবিবাহ অশাস্ত্রীয়। বিদ্যাসাগরের প্রচার ও আন্তরিক উদ্যোগের ফলে বহুবিবাহের প্রকোপ বহুলাংশে হ্রাস পায়।

(৪) বাল্যবিবাহের বিরোধিতা

হিন্দুধর্মে মেয়েদের বাল্যবিবাহ নামক সামাজিক ব্যাধি দূর করার জন্য তিনি নিরলস সংগ্রাম করেন। তিনি সর্ব শুভকরী পত্রিকায় ‘বাল্য বিবাহের দোষ’ শীর্ষক নিবন্ধ প্রকাশ করে বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করেন। তার প্রচেষ্টার ফলেই ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে সরকার আইন করে মেয়েদের বিবাহের বয়স কমপক্ষে ১০ বছর ধার্য করে।

শিক্ষাবিস্তারে বিদ্যাসাগরের অবদান

শিক্ষাবিস্তারের ক্ষেত্রে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। বাংলার জনশিক্ষা, উচ্চশিক্ষা ও নারীশিক্ষার প্রসারে এবং বাংলা গদ্যের বিকাশে বিদ্যাসাগরের ভূমিকা বিশেষ উল্লেখযোগ্য।

(১) গ্রামে বিদ্যালয় স্থাপন

বিদ্যাসাগর বিশ্বাস করতেন যে, একমাত্র শিক্ষাই মানুষের মধ্যে জ্ঞানের সঞ্চার ঘটানোর মধ্য দিয়ে মানুষের মন থেকে অজ্ঞানতার অন্ধকার দূর করতে এবং প্রকৃত মনুষত্ব জাগিয়ে তুলতে পারে। তাই শিক্ষার প্রসারের জন্য তিনি লর্ড হার্ডিঞ্জের সহায়তায় গ্রাম-বাংলার বিভিন্ন স্থানে বহু বিদ্যালয় স্থাপন করেন।

(২) মডেল স্কুল স্থাপন

শিক্ষার মানোন্নয়নের উদ্দেশ্যে বিদ্যাসাগর বাংলার বিভিন্ন জেলায় মডেল স্কুল বা আদর্শ বিদ্যালয় স্থাপন করেন। এগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটি বিদ্যালয় তিনি নিজ ব্যয়ে চালাতেন।

(৩) নারী শিক্ষার প্রসার

বিদ্যাসাগর নারী শিক্ষার প্রসারে সক্রিয় উদ্যোগ নেন। তাঁর উদ্যোগে গ্রামাঞ্চলে ৩৫টি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। তার সহায়তায় জন এলিয়ট ড্রিংকওয়াটার বেথুন ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় প্রতিষ্ঠা করেন ‘হিন্দু ফিমেল স্কুল’ যা বর্তমানে বেথুন স্কুল নামে পরিচিত।

(৪) মেট্রোপলিটন ইন্সটিটিউশন

শিক্ষাবিস্তারের কাজে বিদ্যাসাগরের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি হল কলকাতার মেট্রোপলিটন ইন্সটিটিউশনের প্রতিষ্ঠা। বর্তমানে এটি বিদ্যাসাগর কলেজ নামে পরিচিত।

(৫) পাঠ্যপুস্তক রচনা

শিক্ষাবিস্তারের প্রয়োজনে বিদ্যাসাগর শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পাঠ্যপুস্তক রচনা করেন। ‘বর্ণপরিচয়’, ‘কথামালা’, ‘বোধোদয়’, নীতিবোধ প্রভৃতি পাঠ্যপুস্তক রচনার মধ্য দিয়ে তিনি এই কাজে অগ্রসর হন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতে, “বিদ্যাসাগর বাংলা ভাষার প্রথম যথার্থ শিল্পী ছিলেন।”

উপসংহার :- ঊনবিংশ শতাব্দীর সমাজ সংস্কার ও শিক্ষাবিস্তারের ক্ষেত্রে বিদ্যাসাগর যে ভূমিকা গ্রহণ করেন তা এককথায় অবিস্মরণীয়। তিনি ছিলেন বঙ্গীয় নবজাগরণের অন্যতম স্রষ্টা এবং নবজাগরণের মূর্ত প্রতীক। তাঁর প্রশংসা করে ঐতিহাসিক অমলেশ ত্রিপাঠী তাঁকে ‘ঐতিহ্যবাহী আধুনিকতাবাদী’ বলে অভিহিত করেছেন।

দশম শ্রেণীর ইতিহাস (দ্বিতীয় অধ্যায়) সংস্কার: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা হতে অন্যান্য সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস দ্বিতীয় অধ্যায়- সংস্কার বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা হতে সকল সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তরগুলি দেওয়া হল।

২.১. উনিশ শতকের বাংলা সাময়িকপত্র, সংবাদপত্র ও সাহিত্যে সমাজের প্রতিফলন

(২.১.ক.) বামাবোধিনী

(২.১.খ.) হিন্দু প্যাট্রিয়ট

(২.১.গ.) হুতোম প্যাঁচার নকশা

(২.১.ঘ.) নীলদর্পণ

(২.১.ঙ.) গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা

উপরিউক্ত আলোচনার নিরিখে এই প্রসঙ্গগুলির বিশেষ আলোচনা করতে হবে (আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি)।

২.২. উনিশ শতকের বাংলা শিক্ষাসংস্কার: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা

(২.২.ক.) প্রাচ্য শিক্ষা-পাশ্চাত্য শিক্ষা বিষয়ক দ্বন্দ্ব

(২.২.খ.) ইংরেজি শিক্ষার প্রসার

(২.২.গ.) নারী শিক্ষা ও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর

(২.২.ঘ.) পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের উদ্যোগ

(২.২.ঙ.) রাজা রামমোহন রায়

(২.২.চ.) রাজা রাধাকান্ত দেব

(২.২.ছ.) ডেভিড হেয়ার

(২.২.জ.) জন এলিয়ট ড্রিংক ওয়াটার বীটন বা বেথুন

(২.২.ঝ.) কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ

(২.২.ঞ.) চিকিৎসাবিদ্যার বিকাশ

(২.২.ট.) কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এবং উচ্চশিক্ষার বিকাশ

টুকরো কথা: মধুসূদন গুপ্ত

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি)

২.৩. উনিশ শতকের বাংলা-সমাজসংস্কার: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা

(২.৩.ক.) ব্রাহ্মসমাজসমূহের উদ্দোগ

(২.৩.খ.) সতীদাহপ্রথা বিরোধী আন্দোলন

(২.৩.গ.) নব্যবঙ্গ গোষ্ঠী

(২.৩.ঘ.) বিধবাবিবাহ আন্দোলন

টুকরো কথা: হাজি মহম্মদ মহসীন

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি)

২.৪. উনিশ শতকের বাংলা-ধর্মসংস্কার: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা

(২.৪.ক.) ব্রাহ্ম আন্দোলন-বিবর্তন, বিভাজন, বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা

(২.৪.খ.) রামকৃষ্ণের সর্বধর্মসমন্বয়’-এর আদর্শ

(২.৪.গ.) স্বামী বিবেকানন্দের ধর্মসংস্কারের অভিমুখ

(২.৪.ঘ.) নব্য বেদান্ত-বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা

টুকরো কথা: 

লালন ফকির
বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি)

২.৫. “বাংলার নবজাগরণ”-এর চরিত্র ও পর্যালোচনা,

উনিশ শতকের বাংলায় ‘নবজাগরণ’ ধারণার ব্যবহার বিষয়ক বিতর্ক

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি)।

Leave a Comment