বাংলায় নীল বিদ্রোহের বৈশিষ্ট্যগুলি সম্পর্কে আলোচনা

দশম শ্রেণীর ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে বাংলায় নীল বিদ্রোহের বৈশিষ্ট্যগুলি সম্পর্কে আলোচনা করা হল।

Table of Contents

বাংলায় নীল বিদ্রোহের বৈশিষ্ট্যগুলি সম্পর্কে আলোচনা

প্রশ্ন:- বাংলায় নীল বিদ্রোহের বৈশিষ্ট্যগুলি সম্পর্কে আলোচনা কর।

ভূমিকা :- নীলকর সাহেবদের তীব্র শোষণ ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে ১৮৫৯-৬০ খ্রিস্টাব্দে বাংলার বিভিন্ন জেলায় চাষিরা নীল বিদ্রোহ শুরু করে। এই বিদ্রোহের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। যেমন –

শক্তিশালী বিদ্রোহ

অত্যাচারিত নীলচাষিদের ব্যাপক অংশগ্রহণের ফলে অন্যান্য কৃষকবিদ্রোহের তুলনায় নীল বিদ্রোহ তীব্র আকার ধারণ করে। তৎকালীন বড়োেলাট লর্ড ক্যানিং স্বীকার করেছেন যে, তাঁদের কাছে নীল বিদ্রোহ ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের সিপাহি বিদ্রোহের চেয়েও উৎকণ্ঠার কারণ হয়ে উঠেছিল।

হিন্দু-মুসলিম ঐক্য

হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের অত্যাচারিত কৃষকরা নীলকরদের বিরুদ্ধে নীল বিদ্রোহে অংশগ্রহণ করে। ফলে বিদ্রোহীদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক ঐক্য দেখা যায়।

জমিদারদের যোগদান

বাংলার কৃষকদের সঙ্গে বহু জমিদারও নীলকরদের বিরুদ্ধে নীল বিদ্রোহে যোগ দেয়। এইসব জমিদারদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন নড়াইলের রামরতন রায়, রানাঘাটের শ্রীগোপাল পালচৌধুরী, চণ্ডীপুরের শ্রীহরি রায় প্রমুখ।

সংবাদপত্রে ভূমিকা

নীলচাষিদের ওপর নীলকরদের অত্যাচার ও শোষণ এবং নীল বিদ্রোহের নানা ঘটনা তৎকালীন সংবাদপত্রগুলিতে গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করা হত। এই সব পত্রিকার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’, ‘বামাবোধিনী’, ‘গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা’, ‘সমাচার চন্দ্রিকা’, ‘সমাচার দর্পণ’ প্রভৃতি।

ধর্মনিরপেক্ষ বিদ্রোহ

ওয়াহাবি আন্দোলন, ফরাজি আন্দোলন, সাঁওতাল বিদ্রোহ, মুণ্ডা বিদ্রোহের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি ছিল ধর্ম। কিন্তু নীল বিদ্রোহে তা  ছিল না। নীল বিদ্রোহ ছিল মূলত ধর্মনিরপেক্ষ বিদ্রোহ।

শিক্ষিত মধ্যবিত্তদের যোগ

উনিশ শতকে বাংলার বিভিন্ন কৃষক ও উপজাতি বিদ্ৰোহগুলির মধ্যে একমাত্র নীল বিদ্রোহই কলকাতা তথা বাংলার শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণির সমর্থন ও সহযোগিতা পায়।

অন্যান্য বৈশিষ্ট্য

  • (১) এটি শুরুতেই হিংসাত্মক বিদ্রোহ ছিল না,
  • (২) নীল বিদ্রোহ শুরুর পরেও বাংলার গভর্নর পিটার গ্রান্টের সরকারি সমর্থন লাভ করেছিল,
  • (৩) এই বিদ্রোহ জমিদার ও মহাজনবিরােধী ছিল না। বরং তা ছিল নীলকর বিরােধী বিদ্রোহ।

উপসংহার :- বাংলায় নীল বিদ্রোহ এক সামগ্রিক রূপ পরিগ্রহ করেছিল। হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে সাম্প্রদায়িক ঐক্য এই বিদ্রোহকে মান্যতা দিয়েছে।

দশম শ্রেণীর ইতিহাস (তৃতীয় অধ্যায়) প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে অন্যান্য সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস তৃতীয় অধ্যায়- প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে সকল সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তরগুলি দেওয়া হল।

দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস তৃতীয় অধ্যায় – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

ঔপনিবেশিক অরণ্য আইন ও সেই বিষয়ে আদিবাসী জনগণের প্রতিক্রিয়া বিষয়ে সংক্ষিপ্ত ভূমিকা; প্রসঙ্গত বিদ্রোহ, অভ্যূত্থান ও বিপ্লব-এর ধারণাগত আলোচনা।

৩.১. আদিবাসী বিদ্রোহ

৩.১.ক. চুয়াড় বিদ্রোহ (দ্বিতীয় পর্ব, মেদিনীপুর, ১৭৯৮-৯৯)
৩.১.খ. কোল বিদ্রোহ (১৮৩১-৩২)
৩.১.গ. সাঁওতাল হুল (১৮৫৫-৫৬)
৩.১.ঘ. মুন্ডা বিদ্রোহ (১৮৯৯-১৯০০)

এই বিদ্রোহগুলির অতিসংক্ষিপ্ত আলোচনাসহ বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ।

টুকরো কথা

রংপুর বিদ্রোহ (১৭৮৩)
ভিল বিদ্রোহ (১৮১৯)

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য বিদ্রোহগুলির সময়কাল উল্লেখসহ মানচিত্রে সেগুলির অঞ্চল চিহ্নিতকরণ, বিদ্রোহগুলির সময়সারণি)

৩.২. ধর্ম প্রভাবিত বিদ্রোহ

(৩.২.ক.) সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহ (১৭৬৩-১৮০০)
(৩.২.খ.) ওয়াহাবি আন্দোলন
(৩.২.গ.) ফরাজি আন্দোলন

এই বিদ্রোহ গুলির অতি সংক্ষিপ্ত আলোচনাসহ বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

টুকরো কথা

(ক) পাগলপন্থি বিদ্রোহ (১৮২৫-২৭)
(খ) তারিখ-ই-মহম্মদীয়া

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য বিদ্রোহগুলির সময়কাল উল্লেখসহ মানচিত্রে সেগুলির অঞ্চল চিহ্নিতকরণ, বিদ্রোহগুলির সময়সারণি)

৩.৩. নীল বিদ্রোহ

এই বিদ্রোহের অতি সংক্ষিপ্ত আলোচনা সহ বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

টুকরো কথা

পাবনার কৃষক বিদ্রোহ

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য বিদ্রোহগুলির সময়কাল উল্লেখসহ মানচিত্রে সেগুলির অঞ্চল চিহ্নিতকরণ, বিদ্রোহগুলির সময়সারণি)।

Leave a Comment