দ্বিতীয় পর্বের চুয়াড় বিদ্রোহের (১৭৯৮-৯৯ খ্রি.) বিবরণ

দশম শ্রেণীর ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে দ্বিতীয় পর্বের চুয়াড় বিদ্রোহের (১৭৯৮-৯৯ খ্রি.) বিবরণ দেওয়া হল।

Table of Contents

দ্বিতীয় পর্বের চুয়াড় বিদ্রোহের (১৭৯৮-৯৯ খ্রি.) বিবরণ

প্রশ্ন:- দ্বিতীয় পর্বের চুয়াড় বিদ্রোহের (১৭৯৮-৯৯ খ্রি.) বিবরণ দাও।

ভূমিকা :- ভারতের আদিবাসী চুয়াড় বা চোয়াড় জনগোষ্ঠী বাংলার মেদিনীপুর জেলার উত্তর-পশ্চিমাংশ ও বাঁকুড়া জেলার দক্ষিণ পশ্চিমাংশে বসবাস করত। চুয়াড়রা কৃষিকাজ ও পশুশিকারের পাশাপাশি স্থানীয় জমিদারদের অধীনে পাইক বা সৈনিকের কাজ করত।

বিদ্রোহের কারণ

দ্বিতীয় পর্বের চুয়াড় বিদ্রোহের পিছনে (১৭৯৮-৯৯) বিভিন্ন কারণ ছিল।যেমন –

  • (১) ব্রিটিশ সরকার ও তাদের কর্মচারীরা আদিবাসী চুয়াড় এবং স্থানীয় জমিদারদের ওপর নির্যাতন শুরু করে।
  • (২) ইংরেজরা দরিদ্র চূয়াড়দের জমির মালিকানা বাতিল করে তাদের জমি থেকে উৎখাত করে।
  • (৩)  সরকার বহু চুয়াড়কে তাদের পাইকের পেশা থেকে বরখাস্ত করে।
  • (৪) জমিদারদের ওপর রাজস্বের পরিমাণ যথেষ্ট বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এসব কারণে জমিদার ও চুয়াড় কৃষকরা ক্ষুদ্ধ হয়।

বিদ্রোহের সূচনা

ব্রিটিশ শাসকদের শোষণ ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে ঘাটশিলায় ধলভূমের রাজা জগন্নাথ সিংহ চুয়াড়দের নিয়ে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। এই বিদ্রোহ ব্যর্থ হলে পরবর্তীকালে ১৭৯৮-৯৯ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় পর্বের চুয়াড় বিদ্রোহ শুরু হয়।

বিদ্রোহের প্রসার

জঙ্গলমহল-সহ মেদিনীপুর জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে চুয়াড় বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন জমিদার ও আদিবাসী চুয়াড়দের বিদ্রোহে শামিল হয়। দুর্জন সিং প্রায় ১৫০০ জনঅনুগামী নিয়ে প্রবল আন্দোলন গড়ে তোলেন এবং প্রায় ৩০টি গ্রামে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেন। বিদ্রোহীরা সরকারি দপ্তরেও আক্রমণ চালায়।

বিদ্রোহের নেতৃত্ব

দ্বিতীয় পর্বের চুয়াড় বিদ্রোহে নেতৃত্বের অগ্রভাগে ছিলেন বাঁকুড়ার রায়পুরের জমিদার দুর্জন সিং, মেদিনীপুরের রানি শিরোমণি প্রমুখ। বিদ্রোহে অসামান্য অবদানের জন্য রানি শিরোমণি মেদিনীপুরের লক্ষ্মীবাই নামে পরিচিত হন।

বিদ্রোহের অবসান

বিদ্রোহীদের চাপে ইংরেজ পুলিশ ও কর্মচারীরা বিদ্রোহের মূল কেন্দ্র রায়পুর ছেড়ে পালিয়ে গেলেও শীঘ্রই সশস্ত্র ব্রিটিশ সেনা এসে বিদ্রোহী জমিদার ও আদিবাসী চুয়াড়দের পরাজিত করে। রানি শিরোমণিকে হত্যা করা হয় এবং দুর্জন সিংকে গ্রেফতার করা হয়। এর ফলে বিদ্রোহ থেমে যায়।

উপসংহার :- এই বিদ্রোহের পর চুয়াড়দের কঠোর নিয়ন্ত্রণে আনার উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ সরকার চুয়াড়-অধ্যুষিত এলাকায় শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটায়। ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে বিষ্ণুপুর শহরটিকে কেন্দ্র করে দুর্গম বনাঞ্চল নিয়ে গড়ে তোলা হয় ‘জঙ্গলমহল’ নামে একটি বিশেষ জেলা।

দশম শ্রেণীর ইতিহাস (তৃতীয় অধ্যায়) প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে অন্যান্য সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস তৃতীয় অধ্যায়- প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে সকল সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তরগুলি দেওয়া হল।

দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস তৃতীয় অধ্যায় – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

ঔপনিবেশিক অরণ্য আইন ও সেই বিষয়ে আদিবাসী জনগণের প্রতিক্রিয়া বিষয়ে সংক্ষিপ্ত ভূমিকা; প্রসঙ্গত বিদ্রোহ, অভ্যূত্থান ও বিপ্লব-এর ধারণাগত আলোচনা।

৩.১. আদিবাসী বিদ্রোহ

৩.১.ক. চুয়াড় বিদ্রোহ (দ্বিতীয় পর্ব, মেদিনীপুর, ১৭৯৮-৯৯)
৩.১.খ. কোল বিদ্রোহ (১৮৩১-৩২)
৩.১.গ. সাঁওতাল হুল (১৮৫৫-৫৬)
৩.১.ঘ. মুন্ডা বিদ্রোহ (১৮৯৯-১৯০০)

এই বিদ্রোহগুলির অতিসংক্ষিপ্ত আলোচনাসহ বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ।

টুকরো কথা

রংপুর বিদ্রোহ (১৭৮৩)
ভিল বিদ্রোহ (১৮১৯)

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য বিদ্রোহগুলির সময়কাল উল্লেখসহ মানচিত্রে সেগুলির অঞ্চল চিহ্নিতকরণ, বিদ্রোহগুলির সময়সারণি)

৩.২. ধর্ম প্রভাবিত বিদ্রোহ

(৩.২.ক.) সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহ (১৭৬৩-১৮০০)
(৩.২.খ.) ওয়াহাবি আন্দোলন
(৩.২.গ.) ফরাজি আন্দোলন

এই বিদ্রোহ গুলির অতি সংক্ষিপ্ত আলোচনাসহ বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

টুকরো কথা

(ক) পাগলপন্থি বিদ্রোহ (১৮২৫-২৭)
(খ) তারিখ-ই-মহম্মদীয়া

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য বিদ্রোহগুলির সময়কাল উল্লেখসহ মানচিত্রে সেগুলির অঞ্চল চিহ্নিতকরণ, বিদ্রোহগুলির সময়সারণি)

৩.৩. নীল বিদ্রোহ

এই বিদ্রোহের অতি সংক্ষিপ্ত আলোচনা সহ বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

টুকরো কথা

পাবনার কৃষক বিদ্রোহ

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য বিদ্রোহগুলির সময়কাল উল্লেখসহ মানচিত্রে সেগুলির অঞ্চল চিহ্নিতকরণ, বিদ্রোহগুলির সময়সারণি)।

Leave a Comment