বাংলায় নীল বিদ্রোহের প্রকৃতি বা চরিত্র

দশম শ্রেণীর ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে বাংলায় নীল বিদ্রোহের প্রকৃতি বা চরিত্র কীরূপ ছিল তা আলোচনা করা হল।

Table of Contents

বাংলায় নীল বিদ্রোহের প্রকৃতি বা চরিত্র

প্রশ্ন:- বাংলায় নীল বিদ্রোহের প্রকৃতি বা চরিত্র কীরূপ ছিল?

ভূমিকা :- ১৮৫৯-৬০ খ্রিস্টাব্দের নীল বিদ্রোহ ছিল উনিশ শতকে বাংলার সবচেয়ে শক্তিশালী কৃষক বিদ্রোহ। এই বিদ্রোহের প্রকৃতি বা চরিত্র নিয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে মতভেদ লক্ষ্য করা যায়। যেমন –

জমিদার-নীলকর বিরোধ

অধ্যাপক চিত্তব্রত পালিত মনে করেন যে, নীল বিদ্রোহ ছিল বাঙালি জমিদারদের সঙ্গে বিদেশি নীলকরদের সংঘাত। গ্রামবাংলায় নীলকরদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হলে বাঙালি জমিদারদের স্বার্থে আঘাত লাগে। তাই জমিদারদের নির্দেশে কৃষকরা নীলকরদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে শামিল হয়।

কৃষক বিদ্রোহ

নীল বিদ্রোহ ছিল একটি কৃষকবিদ্রোহ। কোনো কোনো জমিদার বিদ্রোহে অংশ নিলেও মূলত কৃষকদের স্বার্থেই এই বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল এবং তারাই বিদ্রোহের অগ্রভাগে ছিল।

গণ আন্দোলন

অনেকে নীল বিদ্রোহকে প্রকৃত গণ আন্দোলন বলে অভিহিত করেছেন। তৎকালীন বাংলার ছোটোলাট জন পিটার গ্রান্ট একে ‘লক্ষ লক্ষ মানুষের তীব্র অসন্তোষের বহিঃপ্রকাশ’ বলে অভিহিত করেছেন। ‘ক্যালকাটা রিভিউ পত্রিকায় লেখা হয়েছে, “এটা একটা বিদ্রোহ, সমগ্র দেশই এতে যোগ দিয়েছে।”

ধর্মনিরপেক্ষ আন্দোলন

ওয়াহাবি আন্দোলন, ফরাজি আন্দোলন, সাঁওতাল বিদ্রোহ, মুণ্ডা বিদ্রোহের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি ছিল ধর্ম। কিন্তু নীল বিদ্রোহ ছিল মূলত ধর্মনিরপেক্ষ বিদ্রোহ। হিন্দু-মুসলিম কৃষকরা সমবেত ভাবে এই বিদ্রোহ করেছিল।

জাতীয় আন্দোলন

কেউ কেউ নীল বিদ্রোহকে জাতীয় আন্দোলনের সমান বলে মনে করেন। ইতিহাসবিদ সতীশচন্দ্র মিত্র বলেছেন, “এই বিদ্রোহ স্থানিক বা সাময়িক নয়, উহার নিমিত্ত যে কত গ্রাম্য বীর ও নেতাদের উদয় হইয়াছিল ইতিহাসের পাতায় তাহাদের নাম নাই।”

উপসংহার :- নীলচাষিদের সমস্যাকে কেন্দ্র করে যে বিদ্রোহের আগুন ওঠে তা দাবানলের জন্ম দিয়েছিল। নীল বিদ্রোহের প্রকৃতি বা চরিত্র নিয়ে বিতর্ক থাকলেও এই বিদ্রোহ যে ব্রিটিশ সরকারকে এক বিরাট ধাক্কা দিয়েছিল এই বিষয়ে কোনো দ্বিমত নেই।

দশম শ্রেণীর ইতিহাস (তৃতীয় অধ্যায়) প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে অন্যান্য সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস তৃতীয় অধ্যায়- প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে সকল সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তরগুলি দেওয়া হল।

দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস তৃতীয় অধ্যায় – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

ঔপনিবেশিক অরণ্য আইন ও সেই বিষয়ে আদিবাসী জনগণের প্রতিক্রিয়া বিষয়ে সংক্ষিপ্ত ভূমিকা; প্রসঙ্গত বিদ্রোহ, অভ্যূত্থান ও বিপ্লব-এর ধারণাগত আলোচনা।

৩.১. আদিবাসী বিদ্রোহ

৩.১.ক. চুয়াড় বিদ্রোহ (দ্বিতীয় পর্ব, মেদিনীপুর, ১৭৯৮-৯৯)
৩.১.খ. কোল বিদ্রোহ (১৮৩১-৩২)
৩.১.গ. সাঁওতাল হুল (১৮৫৫-৫৬)
৩.১.ঘ. মুন্ডা বিদ্রোহ (১৮৯৯-১৯০০)

এই বিদ্রোহগুলির অতিসংক্ষিপ্ত আলোচনাসহ বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ।

টুকরো কথা

রংপুর বিদ্রোহ (১৭৮৩)
ভিল বিদ্রোহ (১৮১৯)

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য বিদ্রোহগুলির সময়কাল উল্লেখসহ মানচিত্রে সেগুলির অঞ্চল চিহ্নিতকরণ, বিদ্রোহগুলির সময়সারণি)

৩.২. ধর্ম প্রভাবিত বিদ্রোহ

(৩.২.ক.) সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহ (১৭৬৩-১৮০০)
(৩.২.খ.) ওয়াহাবি আন্দোলন
(৩.২.গ.) ফরাজি আন্দোলন

এই বিদ্রোহ গুলির অতি সংক্ষিপ্ত আলোচনাসহ বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

টুকরো কথা

(ক) পাগলপন্থি বিদ্রোহ (১৮২৫-২৭)
(খ) তারিখ-ই-মহম্মদীয়া

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য বিদ্রোহগুলির সময়কাল উল্লেখসহ মানচিত্রে সেগুলির অঞ্চল চিহ্নিতকরণ, বিদ্রোহগুলির সময়সারণি)

৩.৩. নীল বিদ্রোহ

এই বিদ্রোহের অতি সংক্ষিপ্ত আলোচনা সহ বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

টুকরো কথা

পাবনার কৃষক বিদ্রোহ

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য বিদ্রোহগুলির সময়কাল উল্লেখসহ মানচিত্রে সেগুলির অঞ্চল চিহ্নিতকরণ, বিদ্রোহগুলির সময়সারণি)।

Leave a Comment