২০২৫ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ইতিহাস বিষয়ে সম্পূর্ণ সিলেবাসের সাজেশন্ ভিত্তিক পিডিএফ নোটস্ নেওয়ার জন্য যোগাযোগ করুণ (দাম প্রতি ক্লাস ৯৯ টাকা)।

👉Chat on WhatsApp

ঔপনিবেশিক ভারতে আদিবাসী ও কৃষকবিদ্রোহগুলির সংক্ষিপ্ত পরিচয়

দশম শ্রেণীর ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে ঔপনিবেশিক ভারতে আদিবাসী ও কৃষকবিদ্রোহগুলির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দেওয়া হল।

Table of Contents

ঔপনিবেশিক ভারতে আদিবাসী ও কৃষকবিদ্রোহগুলির সংক্ষিপ্ত পরিচয়

প্রশ্ন:- ঔপনিবেশিক ভারতে আদিবাসী ও কৃষকবিদ্রোহগুলির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

ভূমিকা :- ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতে ঔপনিবেশিক শোষণ ও অত্যাচারের প্রতিবাদে বেশ কয়েকটি আদিবাসী ও কৃষকবিদ্রোহ সংঘটিত হয়। উল্লেখযোগ্য বিদ্রোহগুলির সংক্ষিপ্ত পরিচয় নীচে উল্লেখ করা হল।

সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহ

উত্তর ভারত থেকে আসা সন্ন্যাসী ও ফকিররা ভবানী পাঠক, চিরাগ আলি, মজনু শাহ প্রমুখের নেতৃত্বে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ১৭৬৩ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮০২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বিদ্রোহ চালায়। এটি সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহ নামে পরিচিত।

চুয়াড় বিদ্রোহ

মেদিনীপুর ও বাঁকুড়া জেলার কিছু অংশে আদিবাসী চুয়াড় সম্প্রদায় বসবাস করত। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এই অঞ্চলের স্থানীয় জমিদারদের ওপর অত্যাচার চালালে জমিদারদের পক্ষ নিয়ে এই চুয়াড় সম্প্রদায়ের লোকেরা বিদ্রোহ করে। এটি ইতিহাসে ‘চুয়াড় বিদ্রোহ’ নামে পরিচিত। এই বিদ্রোহ প্রথম পর্যায়ে ১৭৬৭ খ্রিস্টাব্দে এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে১৭৯৮-৯৯ খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত হয়।

সন্দীপ বিদ্রোহ

বঙ্গোপসাগরের বুকে কয়েকটি ছোটোবড়ো দ্বীপ নিয়ে সন্দীপ অঞ্চলটি গড়ে উঠেছিল। এখানে দরিদ্র জনগণ ব্রিটিশ কোম্পানির সহযোগী গোকুল ঘোষালের শোষণ ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে ১৭৬৯ খ্রিস্টাব্দে সন্দীপ বিদ্রোহ শুরু করে।

বারাণসী বিদ্রোহ

অযোধ্যার নবাবের অধীনস্থ বারাণসীর জায়গিরদার ছিলেন বলবন্ত সিং। বলবন্তের পুত্র চৈত্য সিংহের আমলে এখানকার নির্যাতিত কৃষকরা ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দে বিদ্রোহ ঘোষণা করে, যা বারাণসী বিদ্রোহ নামে পরিচিত।

রংপুর বিদ্রোহ

১৭৮১ খ্রিস্টাব্দে সরকারের কাছ থেকে দিনাজপুর, রংপুর ও এদ্রাকপুর পরগনার ইজারা নেন দেবী সিংহ। কিছুদিনের মধ্যেই তিনি কৃষকদের ওপর ভয়ানক শোষণ ও অত্যাচার শুরু করলে তার বিরুদ্ধে কৃষকরা ১৭৮৩ খ্রিস্টাব্দে বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। এটি রংপুর বিদ্রোহ নামে পরিচিত।

পলিগার বিদ্রোহ

পলিগার জাতি দক্ষিণ ভারতের বেলারি, কুর্নুল, কুডাপ্পা, অনন্তপুর প্রভৃতি অঞ্চলে বসবাস করত। তারা ১৭৮৩-১৮০৫ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ কোম্পানি ও জমিদারদের শোষণের বিরুদ্ধে যে বিদ্রোহ শুরু করে তা পলিগার বিদ্রোহ নামে পরিচিত।

পাইক বিদ্রোহ

বাংলা ও উড়িষ্যার পাইকরা ছিল জমিদারদের অস্ত্রবাহক ও শান্তিরক্ষক। তারা বিদ্যাধর মহাপাত্রের নেতৃত্বে ব্রিটিশ শোষণের বিরুদ্ধে ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে যে বিদ্রোহ শুরু করে তা পাইক বিদ্রোহ নামে পরিচিত।

ভিল বিদ্রোহ

গুজরাট, মহারাষ্ট্রসহ পশ্চিম ভারতের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ভিল উপজাতির কৃষকদের ওপর ব্রিটিশ কোম্পানি শোষণ ও অত্যাচার চালালে তারা ১৮১৯ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ শক্তিশালী বিদ্রোহ সংগঠিত করে। এই বিদ্রোহ ব্যর্থ হলেও ভিলরা ১৮২৫, ১৮৩৬ ও ১৮৪৬ খ্রিস্টাব্দে আবার বিদ্রোহ করে।

ফরাজি আন্দোলন

ফরিদপুর জেলার হাজি শরিয়ত উল্লাহ ইসলাম ধর্মসংস্কারের উদ্দেশ্যে ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে ‘ফরাজি’ নামে একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠা করেন। এই আন্দোলন ক্রমে ইংরেজ কোম্পানি ও জমিদারদের শোষণের বিরুদ্ধে পরিচালিত হয়ে ফরিদপুর, ঢাকা, খুলনা, ময়মনসিংহ প্রভৃতি জেলায় ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সক্রিয় থাকে। হাজি শরিয়ত উল্লাহের পর তাঁর পুত্র দুদু মিঞা এবং পরে দুদু মিঞার পুত্র নোয়া মিঞা এই আন্দোলনেনেতৃত্ব দেন।

পাগলপন্থী বিদ্রোহ

ময়মনসিংহ জেলার শেরপুরের রাজবংশী, হাজং, ডালু এবং মুসলমান সহ সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষ ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ১৮২৫-২৭ খ্রিস্টাব্দে বিদ্রোহ শুরু করে। এতে নেতৃত্ব দেন ফকির করিম শাহের পুত্র টিপু শাহ।

ওয়াহাবি আন্দোলন ও বারাসাত বিদ্রোহ

তিতুমিরের নেতৃত্বে ১৮৩১ খ্রিস্টাব্দে ২৪ পরগনা, নদিয়া, যশোহর, ঢাকা, রাজশাহি, মালদহ প্রভৃতি জেলায় শক্তিশালী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে, যা ওয়াহাবি আন্দোলন নামে পরিচিত। তিতুমির এই সময় বারাসাতে এক বাঁশের কেল্লা তৈরি করে ব্রিটিশ কোম্পানি, জমিদার ও মহাজনদের মিলিত বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে প্রাণ দেন। এটি বারাসাত বিদ্রোহ নামে পরিচিত।

কোল বিদ্রোহ

ছোটোনাগপুর অঞ্চলের আদিবাসী কোলদেরওপর ব্রিটিশ কোম্পানির অর্থনৈতিক ও সামাজিক শোষণ ও অত্যাচার নেমে আসে। এর বিরুদ্ধে কোলরা ১৮৩১-৩২ খ্রিস্টাব্দে যে বিদ্রোহ শুরু করে তা কোল বিদ্রোহ নামে পরিচিত।

সাঁওতাল বিদ্রোহ

ছোটোনাগপুর, পালামৌ, সিংভূম, মানভূম,বাঁকুড়া, বীরভূম, মেদিনীপুর প্রভৃতি অঞ্চলে বসবাসকারী আদিবাসী সাঁওতালরা ১৮৫৫-৫৬ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ ব্রিটিশ কোম্পানি, জমিদার ও মহাজনদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে।সিধু, কানু, চাঁদ, ভৈরব, বীর সিং, কালো প্রামাণিক, ডোমন মাঝি প্রমুখের নেতৃত্বে সাঁওতাল বিদ্রোহ তীব্র আকার ধারণ করে।

নীল বিদ্রোহ

নীলকর সাহেবরা নদিয়া, যশোহর, খুলনা,ফরিদপুর, মুরশিদাবাদ, রাজশাহি, মালদহ, দিনাজপুর প্রভৃতি জেলার চাষিদের নীলচাষে বাধ্য করলে এবং তাদের ওপর চরম নির্যাতন চালালে চাষিরা ১৮৫৯-৬০ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ তীব্র আন্দোলন সংগঠিত করে। এটি নীল বিদ্রোহ নামে পরিচিত। এই বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেন দিগম্বর বিশ্বাস, বিষ্ণুচরণ বিশ্বাস, মেঘাই সর্দার, বিশ্বনাথ সর্দার প্রমুখ।

মোপালা বিদ্রোহ

দক্ষিণ ভারতের মালাবার উপকূল অঞ্চলে বসবাসকারী কৃষিজীবী মোপালারা ১৮৭৬-৯৬ খ্রিস্টাব্দে জমিদারদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে যে বিদ্রোহ সংগঠিত করে তা মোপালা বিদ্রোহ নামে পরিচিত।

মুন্ডা বিদ্রোহ

ছোটোনাগপুর অঞ্চলের মুন্ডা কৃষকদের ওপর ব্রিটিশ সরকার এবং তাদের সহযোগী জমিদার ও মহাজনরা উৎপীড়ন চালালে ১৮৯৯-১৯০০ খ্রিস্টাব্দে বিরসা মুন্ডার নেতৃত্বে আদিবাসী মুন্ডা সম্প্রদায় বিদ্রোহ করে। এটি মুন্ডা বিদ্রোহনামে পরিচিত।

উপসংহার:- আঞ্চলিক সীমাবদ্ধতা, পরিকল্পনা বিহীন বিদ্রোহ, বিপ্লবীদের মধ্যে যোগাযোগের অভাব, ধর্মীয় বিভেদ প্রভৃতি কারণে ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতে সংগঠিত বিভিন্ন কৃষক ও উপজাতি বিদ্রোহগুলির অধিকাংশই ব্যর্থ হয়েছিল।

দশম শ্রেণীর ইতিহাস (তৃতীয় অধ্যায়) প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে অন্যান্য সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস তৃতীয় অধ্যায়- প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে সকল সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তরগুলি দেওয়া হল।

দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস তৃতীয় অধ্যায় – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

ঔপনিবেশিক অরণ্য আইন ও সেই বিষয়ে আদিবাসী জনগণের প্রতিক্রিয়া বিষয়ে সংক্ষিপ্ত ভূমিকা; প্রসঙ্গত বিদ্রোহ, অভ্যূত্থান ও বিপ্লব-এর ধারণাগত আলোচনা।

৩.১. আদিবাসী বিদ্রোহ

৩.১.ক. চুয়াড় বিদ্রোহ (দ্বিতীয় পর্ব, মেদিনীপুর, ১৭৯৮-৯৯)
৩.১.খ. কোল বিদ্রোহ (১৮৩১-৩২)
৩.১.গ. সাঁওতাল হুল (১৮৫৫-৫৬)
৩.১.ঘ. মুন্ডা বিদ্রোহ (১৮৯৯-১৯০০)

এই বিদ্রোহগুলির অতিসংক্ষিপ্ত আলোচনাসহ বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ।

টুকরো কথা

রংপুর বিদ্রোহ (১৭৮৩)
ভিল বিদ্রোহ (১৮১৯)

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য বিদ্রোহগুলির সময়কাল উল্লেখসহ মানচিত্রে সেগুলির অঞ্চল চিহ্নিতকরণ, বিদ্রোহগুলির সময়সারণি)

৩.২. ধর্ম প্রভাবিত বিদ্রোহ

(৩.২.ক.) সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহ (১৭৬৩-১৮০০)
(৩.২.খ.) ওয়াহাবি আন্দোলন
(৩.২.গ.) ফরাজি আন্দোলন

এই বিদ্রোহ গুলির অতি সংক্ষিপ্ত আলোচনাসহ বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

টুকরো কথা

(ক) পাগলপন্থি বিদ্রোহ (১৮২৫-২৭)
(খ) তারিখ-ই-মহম্মদীয়া

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য বিদ্রোহগুলির সময়কাল উল্লেখসহ মানচিত্রে সেগুলির অঞ্চল চিহ্নিতকরণ, বিদ্রোহগুলির সময়সারণি)

৩.৩. নীল বিদ্রোহ

এই বিদ্রোহের অতি সংক্ষিপ্ত আলোচনা সহ বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

টুকরো কথা

পাবনার কৃষক বিদ্রোহ

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য বিদ্রোহগুলির সময়কাল উল্লেখসহ মানচিত্রে সেগুলির অঞ্চল চিহ্নিতকরণ, বিদ্রোহগুলির সময়সারণি)।

Leave a Comment