ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতে সংঘটিত কৃষক ও আদিবাসী বিদ্রোহের কারণ

দশম শ্রেণীর ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতে সংঘটিত কৃষক ও আদিবাসী বিদ্রোহের কারণগুলি আলোচনা করা হল।

Table of Contents

ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতে সংঘটিত কৃষক ও আদিবাসী বিদ্রোহের কারণ

প্রশ্ন:- ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতে সংঘটিত কৃষক ও আদিবাসী বিদ্রোহের কারণগুলি আলোচনা কর।

ভূমিকা :- ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতের কৃষক ও উপজাতি গোষ্ঠীর ওপর সরকার এবং তাদের সহযোগী জমিদার ও মহাজন শ্রেণির শোষণ ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আন্দোলন ও বিদ্রোহ শুরু হয়। এসব আন্দোলন বা বিদ্রোহের প্রধান কারণগুলি ছিল নিম্নরূপ। –

ভূমিরাজস্ব বৃদ্ধি

ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কৃষকদের ওপর ভূমিরাজস্বের বোঝা বিপুল পরিমাণে বাড়িয়ে দিলে কৃষকরা নিঃস্ব হয়ে যায়।

ব্রিটিশ আইন ও বিচারব্যবস্থা

ইংরেজরা ভারতের চিরাচরিত আইনকানুন ও বিচারব্যবস্থা বাতিল করে তাদের নিজস্ব আইন ও বিচারব্যবস্থা চালু করে। ভারতীয় সমাজে এরূপ বিদেশি হস্তক্ষেপে দেশবাসী ক্ষুব্ধ হয়।

চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ত্রুটি

১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে সরকার প্রবর্তিত চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে কৃষকরা তাদের জমির মালিকানা হারায় এবং জমির মালিকানা চলে যায় একশ্রেণির নতুন জমিদারদের হাতে। এই জমিদাররা নিজের ইচ্ছামতো কৃষকদের ওপর কর বৃদ্ধি করে।

তীব্র অত্যাচার

ইংরেজ মদতপুষ্ট ইজারাদার, জমিদার প্রমুখ কর আদায়ের জন্য কৃষকদের ওপর সীমাহীন নির্যাতন ও অত্যাচার শুরু করে। তারা যখন তখন কৃষকদের জমি থেকে উৎখাত করতে শুরু করে। এর ফলে কৃষকদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে।

খাদ্যাভাব

সরকার কৃষকদের ধানের পরিবর্তে নীল, পাট, তুলো প্রভৃতি চাষে বাধ্য করলে কৃষকদের ঘরে খাদ্যাভাব দেখা দেয়।

ঋণের জাল

মহাজন শ্রেণি দরিদ্র প্রজাদের নানাভাবে ঋণের জালে জড়িয়ে দেয়। ফলে প্রজাদের অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়ে।

কুটিরশিল্প ধ্বংস

ব্রিটেনে শিল্পবিপ্লব ঘটার পর সেখানকার শিল্পজাত পণ্য ভারতের বাজারগুলি দখল করে নিলে ভারতের কুটিরশিল্প ধ্বংস হয় এবং শিল্পী ও কারিগররা বেকার হয়ে পড়ে।

উপনিবেশিক অরণ্য আইন

উপজাতিরা নানাভাবে বনজ সম্পদের ওপর নির্ভরশীল। তারা বনের পশু শিকার, মধু, কাঠ ইত্যাদি সংগ্রহের মাধ্যমে নিজেদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করত। কিন্তু উপনিবেশিক অরণ্য আইন তাদের এই চিরাচরিত জীবনযাত্রায় আঘাত হানে। নিজেদের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য তারা বিদ্রোহের পথ অনুসরণ করেন।

উপসংহার :- সীমাহীন শোষণ-নির্যাতনের শিকার হয়ে ভারতের কৃষক ও আদিবাসী সম্প্রদায় বিদ্রোহী হয়ে উঠতে বাধ্য হয়। তাদের বিদ্রোহগুলি বহুক্ষেত্রে ব্যর্থ হলেও পরবর্তীকালের বৃহৎ সংগ্রামের ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিল।

দশম শ্রেণীর ইতিহাস (তৃতীয় অধ্যায়) প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে অন্যান্য সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস তৃতীয় অধ্যায়- প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে সকল সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তরগুলি দেওয়া হল।

দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস তৃতীয় অধ্যায় – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

ঔপনিবেশিক অরণ্য আইন ও সেই বিষয়ে আদিবাসী জনগণের প্রতিক্রিয়া বিষয়ে সংক্ষিপ্ত ভূমিকা; প্রসঙ্গত বিদ্রোহ, অভ্যূত্থান ও বিপ্লব-এর ধারণাগত আলোচনা।

৩.১. আদিবাসী বিদ্রোহ

৩.১.ক. চুয়াড় বিদ্রোহ (দ্বিতীয় পর্ব, মেদিনীপুর, ১৭৯৮-৯৯)
৩.১.খ. কোল বিদ্রোহ (১৮৩১-৩২)
৩.১.গ. সাঁওতাল হুল (১৮৫৫-৫৬)
৩.১.ঘ. মুন্ডা বিদ্রোহ (১৮৯৯-১৯০০)

এই বিদ্রোহগুলির অতিসংক্ষিপ্ত আলোচনাসহ বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ।

টুকরো কথা

রংপুর বিদ্রোহ (১৭৮৩)
ভিল বিদ্রোহ (১৮১৯)

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য বিদ্রোহগুলির সময়কাল উল্লেখসহ মানচিত্রে সেগুলির অঞ্চল চিহ্নিতকরণ, বিদ্রোহগুলির সময়সারণি)

৩.২. ধর্ম প্রভাবিত বিদ্রোহ

(৩.২.ক.) সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহ (১৭৬৩-১৮০০)
(৩.২.খ.) ওয়াহাবি আন্দোলন
(৩.২.গ.) ফরাজি আন্দোলন

এই বিদ্রোহ গুলির অতি সংক্ষিপ্ত আলোচনাসহ বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

টুকরো কথা

(ক) পাগলপন্থি বিদ্রোহ (১৮২৫-২৭)
(খ) তারিখ-ই-মহম্মদীয়া

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য বিদ্রোহগুলির সময়কাল উল্লেখসহ মানচিত্রে সেগুলির অঞ্চল চিহ্নিতকরণ, বিদ্রোহগুলির সময়সারণি)

৩.৩. নীল বিদ্রোহ

এই বিদ্রোহের অতি সংক্ষিপ্ত আলোচনা সহ বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

টুকরো কথা

পাবনার কৃষক বিদ্রোহ

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য বিদ্রোহগুলির সময়কাল উল্লেখসহ মানচিত্রে সেগুলির অঞ্চল চিহ্নিতকরণ, বিদ্রোহগুলির সময়সারণি)।

Leave a Comment