২০২৫ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ইতিহাস বিষয়ে সম্পূর্ণ সিলেবাসের সাজেশন্ ভিত্তিক পিডিএফ নোটস্ নেওয়ার জন্য যোগাযোগ করুণ👇

👉Chat on WhatsApp

নীল বিদ্রোহের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা

দশম শ্রেণীর ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে নীল বিদ্রোহের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেওয়া হল।

Table of Contents

নীল বিদ্রোহের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা

প্রশ্ন:- নীল বিদ্রোহের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।

ভূমিকা :- উনিশ শতকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে নীলকররা ভারতে এসে নীলের লাভজনক ব্যাবসায় যুক্ত হয়ে পড়ে। তাদের অত্যাচার ও শোষণে অতিষ্ঠ হয়ে ১৮৫৯-৬০ খ্রিস্টাব্দে বাংলার নীলচাষিরা বিদ্রোহ করে, যা ইতিহাসে নীল বিদ্রোহ নামে পরিচিত।

বিদ্রোহের কারণ

নীল বিদ্রোহের পশ্চাতে নানাবিধ কারণ ছিল। যেমন –

(১) চাষিদের ক্ষতি

নীলচাষ করে চাষিরা আর্থিকভাবে যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হত এবং নীলচাষের কারণে খাদ্যশস্য চাষ বন্ধ থাকায় চাষিদের খাদ্যাভাব দেখা দিত।

(২) চাষিদের ওপর অত্যাচার

নীলকর সাহেবরা চাষিদের জোর করে নীলচাষে বাধ্য করত। নীলচাষে রাজি না হলে চাষিকে আটক করে শারীরিক নির্যাতন, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ প্রভৃতি করা হত।

(৩) দাদন প্রথা

নীলকররা চাষিকে বিঘা প্রতি ২ টাকা অগ্রিম দাদন দিয়ে চাষিকে এমনভাবে ঋণের জালে জড়িয়ে ফেলত যে ঋণ কোনোদিনই শোধ করতে পারত না। আবার দাদন গ্রহণ না করা চাষির গোরুবাছুর নীলকুঠিতে নিয়ে আটকে রাখা হয়।

(৪) ন্যয় বিচার থেকে বঞ্চিত

অত্যাচারী নীলকরদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েও ন্যায় বিচার পেত না।

বিদ্রোহের সূত্রপাত

তীব্র শোষণ ও অত্যাচারে জর্জরিত হয়ে বাংলার প্রায় ৬০ লক্ষ নীলচাষি বিদ্রোহের পথে পা বাড়ায়।

বিদ্রোহের নেতৃত্ব

নীল বিদ্রোহের বিখ্যাত নেতা ছিলেন কৃষ্ণনগরের দিগম্বর বিশ্বাস ও বিষ্ণুচরণ বিশ্বাস, আসাননগরের মেঘাই সর্দার, পাবনার মহেশ বন্দ্যোপাধ্যায়, খুলনার কাদের মোল্লা, মালদহের রফিক মণ্ডল, বাঁশবেড়িয়ার বৈদ্যনাথ সর্দার ও বিশে ডাকাত নামে পরিচিত বিশ্বনাথ সর্দার প্রমুখ।

বিদ্রোহের বৈশিষ্ট্য

নীল চাষিদের চাষিদের বিদ্রোহকে তিনটি পর্যায়ে দেখা যেতে পারে। যথা –

(১) প্রথম

আন্দোলনের প্রথম পর্যায়ে তারা নীলকরদের শোষণ, অত্যাচার, নির্যাতন ও মিথ্যা মামলা চাপিয়ে তাদের সর্বস্বান্ত করা বিষয়ে সরকারি কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেন।

(২) দ্বিতীয়

অভিযোগের কোনো প্রতিকার না পেয়ে আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্যায়ে চাষিরা দাদন নিতে অস্বীকার করে এবং নীলচাষ বয়কট করে।

(৩) তৃতীয়

আন্দোলনের তৃতীয় পর্যায়ে চাষিরা বর্শা, তরবারি প্রভৃতি নিয়ে নীলকরদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়।

বিদ্রোহের প্রসার

নীল বিদ্রোহ দাবানলের মতো নদিয়া, যশোহর, পাবনা, ফরিদপুর, বরিশাল, রাজশাহ খুলনা, মালদহ, মুরশিদাবাদ, দিনাজপুর প্রভৃতি জেলায় বিস্তার লাভ করে।

শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণীর প্রভাব

বাংলার শিক্ষিত মধ্যবিত্তশ্রেণির একাংশ নীলচাষিদের পক্ষ নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে সরব হন। হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকা চাষিদের পক্ষে কলম ধরে। দীনবন্ধু মিত্র তাঁর ‘নীলদর্পণ’ নাটকে নীলকর সাহেবদের অত্যাচারের মর্মস্পর্শী চিত্র তুলে ধরেন।

বিদ্রোহের অবসান

বাংলার ছোটোলাট পিটার গ্রান্ট পূর্ববাংলা সফরে এলে হাজার হাজার নীলচাষি নদীর তীরে দাঁড়িয়ে তাদের করুণ অবস্থার কথা তাঁকে জানান। শেষপর্যন্ত তিনি নীল কমিশন (১৮৬০ খ্রি.) গঠন করেন। এই কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে বাংলায় জোরপূর্বক নীলচাষ নিষিদ্ধ হলে নীল বিদ্রোহ থেমে যায়।

ফলাফল ও গুরুত্ব

নীল বিদ্রোহ আপাতদৃষ্টিতে ব্যর্থ হলেও এই বিদ্রোহের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। যেমন –

  • (১) এই বিদ্রোহ বাংলার সর্বস্তরের মানুষকে ঐক্যবন্ধ করে।
  • (২) বিদ্রোহের পর সরকার ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে নীল কমিশন গঠন করে।
  • (৩) সরকার ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দে ‘অষ্টম আইন’ -এর দ্বারা নীলচুক্তি আইন বাতিল বলে ঘোষণা করে এবং জানায় যে নীলচাষ সম্পূর্ণভাবে চাষিদের ইচ্ছাধীন।

উপসংহার :- নীলকরদের অত্যাচার, ‘নীলদর্পণ’ নাটকের মর্মস্পর্শী বিবরণ, লং সাহেরের কারাবাস, হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু প্রভৃতি জাতীয় চেতনাকে শক্তিশালী করে।

দশম শ্রেণীর ইতিহাস (তৃতীয় অধ্যায়) প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে অন্যান্য সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস তৃতীয় অধ্যায়- প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে সকল সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তরগুলি দেওয়া হল।

দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস তৃতীয় অধ্যায় – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

ঔপনিবেশিক অরণ্য আইন ও সেই বিষয়ে আদিবাসী জনগণের প্রতিক্রিয়া বিষয়ে সংক্ষিপ্ত ভূমিকা; প্রসঙ্গত বিদ্রোহ, অভ্যূত্থান ও বিপ্লব-এর ধারণাগত আলোচনা।

৩.১. আদিবাসী বিদ্রোহ

৩.১.ক. চুয়াড় বিদ্রোহ (দ্বিতীয় পর্ব, মেদিনীপুর, ১৭৯৮-৯৯)
৩.১.খ. কোল বিদ্রোহ (১৮৩১-৩২)
৩.১.গ. সাঁওতাল হুল (১৮৫৫-৫৬)
৩.১.ঘ. মুন্ডা বিদ্রোহ (১৮৯৯-১৯০০)

এই বিদ্রোহগুলির অতিসংক্ষিপ্ত আলোচনাসহ বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ।

টুকরো কথা

রংপুর বিদ্রোহ (১৭৮৩)
ভিল বিদ্রোহ (১৮১৯)

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য বিদ্রোহগুলির সময়কাল উল্লেখসহ মানচিত্রে সেগুলির অঞ্চল চিহ্নিতকরণ, বিদ্রোহগুলির সময়সারণি)

৩.২. ধর্ম প্রভাবিত বিদ্রোহ

(৩.২.ক.) সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহ (১৭৬৩-১৮০০)
(৩.২.খ.) ওয়াহাবি আন্দোলন
(৩.২.গ.) ফরাজি আন্দোলন

এই বিদ্রোহ গুলির অতি সংক্ষিপ্ত আলোচনাসহ বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

টুকরো কথা

(ক) পাগলপন্থি বিদ্রোহ (১৮২৫-২৭)
(খ) তারিখ-ই-মহম্মদীয়া

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য বিদ্রোহগুলির সময়কাল উল্লেখসহ মানচিত্রে সেগুলির অঞ্চল চিহ্নিতকরণ, বিদ্রোহগুলির সময়সারণি)

৩.৩. নীল বিদ্রোহ

এই বিদ্রোহের অতি সংক্ষিপ্ত আলোচনা সহ বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

টুকরো কথা

পাবনার কৃষক বিদ্রোহ

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য বিদ্রোহগুলির সময়কাল উল্লেখসহ মানচিত্রে সেগুলির অঞ্চল চিহ্নিতকরণ, বিদ্রোহগুলির সময়সারণি)।

Leave a Comment