২০২৫ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ইতিহাস বিষয়ে সম্পূর্ণ সিলেবাসের সাজেশন্ ভিত্তিক পিডিএফ নোটস্ নেওয়ার জন্য যোগাযোগ করুণ👇

👉Chat on WhatsApp

চুয়াড় বিদ্রোহের কারণ ও প্রসার সম্পর্কে আলোচনা

দশম শ্রেণীর ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে চুয়াড় বিদ্রোহের কারণ ও প্রসার সম্পর্কে আলোচনা করা হল।

Table of Contents

চুয়াড় বিদ্রোহের কারণ ও প্রসার সম্পর্কে আলোচনা

প্রশ্ন:- চুয়াড় বিদ্রোহের কারণ ও প্রসার সম্পর্কে আলোচনা করো।

অথবা, চুয়াড় বিদ্রোহের বিবরণ দাও।

ভূমিকা :- ভারতের আদিবাসী চুয়াড় জনগোষ্ঠী বাংলার বর্তমান মেদিনীপুর জেলার উত্তর-পশ্চিমাংশ ও বাঁকুড়া জেলার দক্ষিণ পশ্চিমাংশে বসবাস করত। তারা কৃষিকাজ ও পশুশিকারের পাশাপাশি স্থানীয় জমিদারদের অধীনে পাইক বা সৈনিকের কাজ করত। জমিদারের কাজের বিনিময়ে তারা কিছু নিষ্কর জমি ভোগ করত।

চুয়াড় বিদ্রোহ

ইংরেজদের শোষণ ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে আদিবাসী চুয়াড়রা যে বিদ্রোহ শুরু করে, তা চুয়াড় বিদ্রোহ নামে পরিচিত।

বিদ্রোহের পর্ব

চুয়াড় বিদ্রোহ অন্তত তিন দশক ধরে চলে। এই বিদ্রোহদুটি পর্বে অত্যন্ত শক্তিশালী হয়ে ওঠে। যেমন –

(১) প্রথম পর্ব

আদিবাসী চুয়াড়দেরপ্রথম পর্বের বিদ্রোহ শুরু হয় ১৭৬৭-৬৮ খ্রিস্টাব্দে।প্রথম পর্বের এই বিদ্রোহ তেমন আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারে নি।

(২) দ্বিতীয় পর্ব

১৭৯৮-৯৯ খ্রিস্টাব্দে আদিবাসী চুয়াড়দের দ্বিতীয় পর্বের বিদ্রোহ শুরু হয়। এই পর্বে বিদ্রোহ ব্যাপক আকার ধারণ করে।

প্রথম পর্বের বিদ্রোহের কারণ

প্রথম পর্বের চুয়াড় বিদ্রোহেরপ্রধান কারণগুলি হল নিম্নরূপ। –

(১) জীবিকা সমস্যা

ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আদিবাসী চুয়াড়দের অধিকাংশজমিজমা কেড়ে নিলে তাদের জীবিকা নির্বাহ কঠিন হয়েপড়ে।

(২) রাজস্ব বৃদ্ধি

চুয়াড়দের কৃষিজমির ওপর ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি রাজস্বের হার যথেষ্ট বাড়িয়ে দেয়।

(৩) অত্যাচার

রাজস্ব আদায়কারী ও অন্যান্য সরকারিকর্মচারীরা চুয়াড়দের ওপর চরম অত্যাচার চালাতে শুরু করে।

প্রথম পর্বের বিদ্রোহ

ঘাটশিলায় ধলভূমের রাজা জগন্নাথ সিংহপ্রথম কোম্পানির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। চুয়াড়রা এই বিদ্রোহে সক্রিয়ভাবে যোগ দেয়। শেষপর্যন্ত চুয়াড়রা ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর কাছে পরাজিত হয়। এরপর ১৭৭১ খ্রিস্টাব্দে তারা ধাদকার শ্যামগঞ্জনের নেতৃত্বে আবার বিদ্রোহ শুরু করে। কিন্তু এই বিদ্রোহও ব্যর্থ হয়।

দ্বিতীয় পর্বের বিদ্রোহের কারণ

১৭৯৮-৯৯ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় পর্যায়ের চুয়াড়বিদ্রোহের বিভিন্ন কারণ ছিল।যেমন –

(১) নির্যাতন

ব্রিটিশ সরকার ও তাদের কর্মচারীরা আদিবাসী চুয়াড় এবং স্থানীয় জমিদারদের ওপর নির্যাতন শুরু করে।

(২) জমি থেকে উৎখাত

প্রথম পর্যায়ের চুয়াড় বিদ্রোহীদের শায়েস্তা করার উদ্দেশ্যে ইংরেজরা দরিদ্র চুয়াড়দের জমির মালিকানা বাতিল করে তাদের জমি থেকে উৎখাত করে।

(৩) জীবিকাচ্যুত

ব্রিটিশ সরকার বহু চুয়াড়কে তাদের পাইকের পেশা থেকে বিতাড়িত করে। ফলে জীবিকাচ্যুত হয়ে আদিবাসী চুয়াড়রা বিদ্রোহের পথে পা বাড়ায়।

(৪) রাজস্ব বৃদ্ধি

এখানকার জমিদারদের ওপর রাজস্বের পরিমাণ যথেষ্ট বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এইসব কারণে জমিদার ও চুয়াড় কৃষকরা ক্ষুদ্ধ হয়।

দ্বিতীয় পর্বের বিদ্রোহের সূচনা

জঙ্গলমহল সহ মেদিনীপুর জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে দ্বিতীয় পর্যায়ের চুয়াড় বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় ১৫০০ অনুগামী নিয়ে প্রবল আন্দোলন গড়ে ওঠে এবং চুয়াড়রা প্রায় ৩০টি গ্রামে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁরা বিভিন্ন জমিদার ও আদিবাসী চুয়াড়দের বিদ্রোহে শামিল করতে সক্ষম হন।

বিদ্রোহের নেতা

এই বিদ্রোহের নেতাদের মধ্যে বাঁকুড়ার রায়পুরের জমিদার দুর্জন সিং, মেদিনীপুরের রানি শিরোমণি প্রমুখ উল্লেখযোগ্য। বিদ্রোহে অসামান্য অবদানের জন্য রানি শিরোমণি মেদিনীপুরের লক্ষ্মীবাই নামে পরিচিত হন।

বিদ্রোহের অবসান

প্রবল বিদ্রোহের ফলে ইংরেজ পুলিশ ও কর্মচারীরা বিদ্রোহের মূলকেন্দ্র রায়পুর ছেড়ে পালিয়ে যায়। কিন্তু শীঘ্রই পরিস্থিতি পালটে যায়। সশস্ত্র ব্রিটিশ সেনা এসে বিদ্রোহী জমিদার ও আদিবাসী চুয়াড়দের পরাজিত করে। রানি শিরোমণিকে হত্যা এবং দুর্জন সিংকে গ্রেফতার করা হয়। এর ফলে বিদ্রোহ থেমে যায়।

ফলাফল

চুয়াড় বিদ্রোহ ব্যর্থ হলেও এর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল লক্ষ করা যায়। যেমন – ব্রিটিশসরকার অত্যাচারের বিরুদ্ধে পশ্চাৎপদ চুয়াড়রা বিদ্রোহ শুরু করে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল। এই বিদ্রোহে জমিদার ও কৃষকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিদ্রোহে শামিল হয়।

উপসংহার :- চুয়াড়দের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার উদ্দেশ্যে সরকার এখানকার শাসনব্যবস্থায় পরিবর্তন ঘটায়। বিষ্ণুপুর শহরটিকে কেন্দ্র করে দুর্গম বনাঞ্চল নিয়ে জঙ্গলমহল নামে একটি বিশেষ জেলা গঠন করা হয়।

দশম শ্রেণীর ইতিহাস (তৃতীয় অধ্যায়) প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে অন্যান্য সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস তৃতীয় অধ্যায়- প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ হতে সকল সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তরগুলি দেওয়া হল।

দশম শ্রেণী ইতিহাস সিলেবাস তৃতীয় অধ্যায় – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

ঔপনিবেশিক অরণ্য আইন ও সেই বিষয়ে আদিবাসী জনগণের প্রতিক্রিয়া বিষয়ে সংক্ষিপ্ত ভূমিকা; প্রসঙ্গত বিদ্রোহ, অভ্যূত্থান ও বিপ্লব-এর ধারণাগত আলোচনা।

৩.১. আদিবাসী বিদ্রোহ

৩.১.ক. চুয়াড় বিদ্রোহ (দ্বিতীয় পর্ব, মেদিনীপুর, ১৭৯৮-৯৯)
৩.১.খ. কোল বিদ্রোহ (১৮৩১-৩২)
৩.১.গ. সাঁওতাল হুল (১৮৫৫-৫৬)
৩.১.ঘ. মুন্ডা বিদ্রোহ (১৮৯৯-১৯০০)

এই বিদ্রোহগুলির অতিসংক্ষিপ্ত আলোচনাসহ বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ।

টুকরো কথা

রংপুর বিদ্রোহ (১৭৮৩)
ভিল বিদ্রোহ (১৮১৯)

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য বিদ্রোহগুলির সময়কাল উল্লেখসহ মানচিত্রে সেগুলির অঞ্চল চিহ্নিতকরণ, বিদ্রোহগুলির সময়সারণি)

৩.২. ধর্ম প্রভাবিত বিদ্রোহ

(৩.২.ক.) সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহ (১৭৬৩-১৮০০)
(৩.২.খ.) ওয়াহাবি আন্দোলন
(৩.২.গ.) ফরাজি আন্দোলন

এই বিদ্রোহ গুলির অতি সংক্ষিপ্ত আলোচনাসহ বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

টুকরো কথা

(ক) পাগলপন্থি বিদ্রোহ (১৮২৫-২৭)
(খ) তারিখ-ই-মহম্মদীয়া

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য বিদ্রোহগুলির সময়কাল উল্লেখসহ মানচিত্রে সেগুলির অঞ্চল চিহ্নিতকরণ, বিদ্রোহগুলির সময়সারণি)

৩.৩. নীল বিদ্রোহ

এই বিদ্রোহের অতি সংক্ষিপ্ত আলোচনা সহ বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

টুকরো কথা

পাবনার কৃষক বিদ্রোহ

(আলোচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক ছবি, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন প্রভৃতি, আলোচ্য বিদ্রোহগুলির সময়কাল উল্লেখসহ মানচিত্রে সেগুলির অঞ্চল চিহ্নিতকরণ, বিদ্রোহগুলির সময়সারণি)।

Leave a Comment